যুক্তরাজ্যে দোষী সাব্যস্ত অধিকাংশ বিদেশি অপরাধীকে আর সাজা ভোগের নির্দিষ্ট সময় পার হওয়ার পর নয়, বরং রায় ঘোষণার পরই অবিলম্বে দেশে ফেরত পাঠানো হবে—এমন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন বিচার মন্ত্রী শাবানা মাহমুদ। প্রস্তাবিত নতুন আইনে সরকারের হাতে ক্ষমতা থাকবে দোষী সাব্যস্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই বিদেশি বন্দিদের ফেরত পাঠানোর, যাতে কারাগারের চাপ ও ব্যয় দুইই কমানো যায়।
তবে বিদেশি সন্ত্রাসী, খুনি এবং অনির্দিষ্ট মেয়াদের সাজাপ্রাপ্ত গুরুতর অপরাধীদের যুক্তরাজ্যেই সাজা ভোগ করতে হবে। নির্দিষ্ট মেয়াদের সাজাপ্রাপ্তদের ক্ষেত্রেও কারাগারের গভর্নর চাইলে ফেরত পাঠানো থেকে বিরত থাকতে পারবেন, যদি তিনি মনে করেন যে অপরাধী যুক্তরাজ্যের জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
দোষী সাব্যস্ত হয়ে ফেরত পাঠানো অপরাধীরা পুনরায় যুক্তরাজ্যে প্রবেশে নিষিদ্ধ থাকবেন। এই ব্যবস্থা কেবল নতুন সাজাপ্রাপ্তদের জন্য নয়, বরং বর্তমানে কারাবন্দি বিদেশি অপরাধীদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য হবে। যুক্তরাজ্যের বিচার মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বন্দির জন্য বছরে গড়ে ৫৪ হাজার পাউন্ড খরচ হয় এবং মোট বন্দির প্রায় ১২% বিদেশি নাগরিক।
এর আগে সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এক আইনে বিদেশি বন্দিদের সাজা ভোগের ৫০% সময় কমিয়ে ৩০% পর ফেরত পাঠানোর বিধান করা হয়েছিল। কিন্তু নতুন প্রস্তাবিত আইনে এ সময় শূন্যে নামিয়ে আনার পরিকল্পনা রয়েছে, যা কার্যকর হলে সাজা ঘোষণার পরই ফেরত পাঠানো সম্ভব হবে।
কারাগারের ধারণক্ষমতা বর্তমানে প্রায় ৯৭.৫% পূর্ণ। ক্ষমতায় এসে কিয়ার স্টার্মার ভিড় কমাতে সাজা ভোগের ৪০% সময় পর কিছু বন্দিকে মুক্তির অনুমতি দেন এবং ৫,০০০-এর বেশি বিদেশি বন্দিকে ফেরত পাঠান। সরকার প্রায় ৮০টি কারাগার থেকে দ্রুত বিদেশি বন্দি ফেরত পাঠাতে ৫০ লাখ পাউন্ড বিনিয়োগে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন করেছে।
তবে বিরোধী দলের বিচারবিষয়ক মুখপাত্র রবার্ট জেনরিক অভিযোগ করেছেন, বিদেশি অপরাধীদের “রেকর্ড সংখ্যায়” কারাগারে রাখা হচ্ছে, কারণ স্টার্মার মানবাধিকার আইন পরিবর্তন করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কোনো দেশ যদি তাদের নাগরিক ফেরত নিতে রাজি না হয়, তবে তাদের ভিসা ও বৈদেশিক সাহায্য স্থগিত করা উচিত।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১১ আগস্ট ২০২৫