যুক্তরাষ্ট্রের ইউটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইউভিইউ) কনজারভেটিভ অ্যাক্টিভিস্ট চার্লি কার্ক হত্যার ঘটনায় তৃতীয় দিনেও মূল অভিযুক্ত স্নাইপারকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবারও বিশেষ বাহিনী অভিযান চালিয়েছে, তবে হত্যাকারী এখনও পলাতক। রয়টার্স জানিয়েছে, এফবিআই এ পর্যন্ত সাত হাজারের বেশি তথ্যসূত্র পেয়েছে, যা ২০১৩ সালের বোস্টন ম্যারাথন বোমা হামলার পর সবচেয়ে বড় ডিজিটাল ইনপুট হিসেবে ধরা হচ্ছে।
৩১ বছর বয়সী চার্লি কার্ককে বুধবার ইউটাহ ভ্যালি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এক আলোচনায় লক্ষ্য করে গুলি করা হয়। প্রায় তিন হাজার দর্শকের সামনে স্নাইপারের গুলিটি তার গলায় লাগে এবং ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ঘটনাস্থল থেকে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন বোল্ট-অ্যাকশন রাইফেল উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা হত্যাকারীর আঙুলের ছাপ, ডিএনএ নমুনা এবং কনভার্স টেনিস জুতার ছাপ সংগ্রহ করেছেন।
এফবিআই জানিয়েছে, হত্যাকারীর পরিচয় শনাক্তে সহায়ক তথ্য দিলে ১ লাখ ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। ইউটাহ অঙ্গরাজ্যের গভর্নর স্পেনসার কক্স জনগণের সহযোগিতা কামনা করেছেন। ইউটাহ পাবলিক সেফটির কমিশনার বো ম্যাসন জানিয়েছেন, জুতার ছাপ ও অন্যান্য ফরেনসিক প্রমাণ তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তদন্তকারীরা ইতিমধ্যে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, “খুব শিগগিরই হত্যাকারী ধরা পড়বে এবং যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” ট্রাম্প আরও ঘোষণা দিয়েছেন, চার্লি কার্ককে মরণোত্তর প্রেসিডেন্সিয়াল মেডেল অব ফ্রিডম দেওয়া হবে। ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স তার পরিবারকে সান্ত্বনা দিতে ইউটাহ গেছেন এবং এয়ার ফোর্স টু-তে করে মরদেহ অ্যারিজোনায় নিয়ে গেছেন।
কার্ক ছিলেন ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সহযোগী এবং রিপাবলিকান যুব রাজনীতির অন্যতম মুখ। বিশেষ করে তরুণদের মাঝে তার প্রভাব ছিল অনন্য। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে রাজনৈতিক সহিংসতার যে ঊর্ধ্বগতি, এই হত্যাকাণ্ড তা আরও গভীর করেছে। শুধু ২০২১ সালের জানুয়ারি ক্যাপিটল হামলার পর থেকে দেশটিতে তিন শতাধিক রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে বাংলাদেশে এই হত্যাকাণ্ডকে ঘিরে রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ফেসবুকে লিখেছেন, “গণতান্ত্রিক সমাজে কারও রাজনৈতিক বিশ্বাস বা দৃষ্টিভঙ্গির কারণে জীবন কেড়ে নেওয়া অগ্রহণযোগ্য।” তিনি চার্লি কার্কের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। তবে এই স্ট্যাটাসকে ঘিরে দেশে সমালোচনা শুরু হয়েছে।
মির জাহান নামের একজন মন্তব্য করেন, “আপনার এসব সুশীলতা পশ্চিমাদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা না বাড়ালেও দেশে জনপ্রিয়তা কমবে।” আরিফ মাহতাব উৎস নামে আরেকজন লেখেন, “আমরাও বামপন্থী চরমপন্থীদের কাছ থেকে মৃত্যুর হুমকির মুখে পড়ি। বাংলাদেশে বামপন্থী চরমপন্থা ক্রমেই শেকড় গেড়ে বসছে। কার্কের মৃত্যু আমাদের জন্য সতর্কবার্তা।”
বিশ্লেষকদের মতে, চার্লি কার্ক হত্যাকাণ্ড শুধু যুক্তরাষ্ট্র নয়, বৈশ্বিক রাজনীতিতেও রাজনৈতিক সহিংসতার ভয়াবহতা নতুন করে সামনে এনেছে।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫