5.3 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

কেয়ার ওয়ার্কারদের পক্ষে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে পিটিশন দাখিল

কেয়ার ওয়ার্কারদের জন্য একটি অনলাইন পিটিশন আর্জি হিসাবে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে দেয়া হয়েছে বলে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়। বিশাল সংখ্যক বিদেশী স্বাস্থ্যসেবা শ্রমিকরা চরম বিপদে পড়েছেন অসংখ্য প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স চলে যাওয়ায়। তাদের স্পনসররা তাদের কর্মসংস্থান সুরক্ষিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় এবং অনেক প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স চলে যাওয়ায় নতুন ভিসা আবেদন ও চাকুরির অনুসন্ধানে ষাট দিনের সময় প্রদান করে হোম অফিস। এই পিটিশনে ৬০ দিনের পরিবর্তে আরও বেশি সময় চাওয়া হয় নতুন ভিসা আবেদন করার জন্য।

মার্চ মাসের শুরুর দিকে কার্যকর হওয়া কঠোর নিয়মের অধীনে, ইংল্যান্ডের বিদেশী কেয়ার ওয়ার্কার আনতে হলে প্রত্যেক কেয়ার হোমের এখন কেয়ার কোয়ালিটি কমিশন (সিকিউসি)-এর রেজিস্ট্রেশন থাকতে হবে বলে জানায় ব্রিটিশ সরকার।

সরকারের কঠোর নিয়মের ফলে অনেক নির্দোষ কেয়ার কর্মী বিপদে পতিত হয়েছেন বলে পিটিশনে উল্লেখ করা হয়। নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রিভোক হলে মাত্র ৬০ দিন সময় পান একজন কেয়ার ওয়ার্কার নতুন চাকুরী খুঁজে ভিসা আবেদন করার জন্য। পিটিশনে দাখিল করেন বালাকৃষ্ণ বালাগোপাল নামের একজন ভারতীয়। তিনি বলেন, ” ৬০ দিন খুব অল্প সময় একটি পরিবারের জন্য কারণ পরিবারের শিশুদের স্কুল পরিবর্তন, বাসাভাড়ার ডিপোজিট হারানোর ঝক্কি, নতুন চাকুরী খোঁজা সব মিলিয়ে এক নিদারুণ কষ্টে পতিত হয় একটি পরিবার।”

তথ্যমতে জানা যায়, যুক্তরাজ্যে আগত বেশ কয়েকটি স্বাস্থ্যসেবা কর্মী চাকুরি ছাড়াই রয়েছেন কারণ তাদের স্পনসররা তাদের কাজ প্রদান কর‍তে অক্ষম। কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব ভুলের কারণে স্পনসর লাইসেন্স হারায় এবং তাতে বিপদে পড়ে সেই প্রতিষ্ঠানের অধীনে আসা কর্মীরা। তাই পিটিশনের মাধ্যমে যুক্তরাজ্য সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়, বিদেশী স্বাস্থ্যকর্মীদের অন্য একটি চাকুরি সুরক্ষিত করার জন্য অন্তত এক বছরের জন্য যুক্তরাজ্যে অবস্থানের সুযোগ দেয়া।

গত সপ্তাহে ইউকে পার্লামেন্ট ওয়েবসাইটে পিটিশনটি প্রকাশিত হয়। দশ হাজার সাক্ষর সম্পন্ন হলেই সরকার নিয়মানুযায়ী পিটিশন তাদের নজরে আনবে। পিটিশন প্রকাশের কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কয়েকশ ব্যক্তি পিটিশনে সাক্ষর করেছেন বলে জানা যায়।

বালাগোপালের মতে, ২০২২ সাল থেকে সামাজিক যত্ন খাতে ঘাটতি মেটাতে যুক্তরাজ্যে শত শত স্বাস্থ্যসেবা কর্মী ভিসা নিয়ে প্রবেশ করেন। অনেক প্রতিষ্ঠান কেয়ার ওয়ার্কারদের চাকুরী দিতে ব্যর্থ হয় আবার কিছু প্রতিষ্ঠান নিজেদের ভুলের কারণে লাইসেন্স হারায়। কিন্তু উভয় ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগী হয় বিদেশ হতে আসা স্বাস্থ্যকর্মীরা।

যুক্তরাজ্যের হোম অফিস জানায়, কেয়ার ওয়ার্কারদের ভুয়া প্রতিষ্ঠানের অধীনে ভিসা প্রদান করা হয়েছে। তাদের তদন্তে দেখা যায় অনেক নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান কেয়ার ওয়ার্কারদের নিয়ে এসেছে যাদের কোনো কেয়ারহোম ছিল না। যা একটি সিস্টেমের অপব্যবহার। তাই এর বিরুদ্ধে ক্র্যাকডাউন করা জরুরি হয়ে পড়েছিল।

যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব জেমস ক্লিভারলি বলেন, কেয়ার ওয়ার্কাররা আমাদের প্রিয়জনদের যত্ন নিয়ে থাকেন। তাদের অবদান সমাজে অনস্বীকার্য। তবে আমরা স্পষ্ট অপব্যবহার দেখেও চোখ বন্ধ করে থাকতে পারি না।

উল্লেখ্য যুক্তরাজ্যে গত বছরের সরকারী পরিসংখ্যান অনুসারে, ইউকেতে কেয়ার ওয়ার্কারদের ঘাটতি মেটাতে বিদেশী প্রায় এক লাখ চল্লিশ হাজার কর্মীদের ভিসা ইস্যু করা হয়। যাদের মধ্যে অনেকেই চাকুরী পান নাই কিংবা কতক নূন্যতম মজুরির অনেক কম বেতনে বাধ্য হয়ে চাকুরী করেছেন, যাকে মর্ডান স্লেভারি হিসাবে আখ্যায়িত করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

সূত্রঃ ডেকান হের‍্যাল্ড

এম.কে
২৭ মার্চ ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যের একমাত্র জগন্নাথ মন্দির ভেঙে ফেলা হচ্ছে

যুক্তরাজ্য এইবার সৈন্য পাঠাবে গাজায়

নিরপরাধ মানুষ হত্যার দায়ে ক্ষমা চাইলেন বরিস জনসন