সিলেটে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে চাঁদা দাবির একটি চিঠিকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক আলোড়ন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এই চিঠিটি নিয়ে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে প্রশাসন ও আইনজীবী মহলে। অভিযোগ উঠেছে—’বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট স্টুডেন্ট অ্যালায়েন্স’ নামে একটি সংগঠনের পক্ষ থেকে সিলেট সদর সাব-রেজিস্ট্রার মিনহাজ উদ্দিনের কাছে সরাসরি দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করা হয়।
প্রকাশিত চিঠিতে সংগঠনের সভাপতি মাহফুজুর রহমান নিজেকে পরিচয় দিয়ে লিখেছেন, তারা “ঐতিহাসিক জুলাই বিপ্লবের শহীদদের স্মরণে” স্মরণসভা, ছবি প্রদর্শনী, এতিমখানায় খাবার বিতরণসহ নানা আয়োজন করতে যাচ্ছে, যার ব্যয়ের জন্য দুই লাখ টাকার অনুদান চাওয়া হয়েছে।
চিঠিতে সুপারিশকারী হিসেবে উল্লেখ রয়েছে সিলেটের সরকারি আইনজীবী এডভোকেট শামীম আহমদ সিদ্দিকী (জিপি), মহানগর পিপি এডভোকেট বদরুল আহমদ চৌধুরী ও জেলা পিপি এডভোকেট আশিক উদ্দিনের নাম, সিল ও স্বাক্ষর। তবে এ বিষয়ে কথা বললে তিনজনই বিষয়টি অস্বীকার করেন এবং স্পষ্ট জানান, তারা এমন কোনো সুপারিশ করেননি।
এডভোকেট শামীম সিদ্দিকী বলেন, “এই নামে কোনো সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুদান চাওয়ার বিষয়ে আমি সুপারিশ করিনি, কেউ হয়তো জালিয়াতি করেছে।”
জেলা পিপি আশিক উদ্দিন জানান, “আমরা সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে কোনো সুপারিশ দিই না। কিছু যুবক এসেছিল, তাদের জেলা প্রশাসকের কাছে যেতে বলেছি।”
মহানগর পিপি বদরুল চৌধুরী স্বীকার করেন যে, ব্যস্ততার মাঝে জেলা প্রশাসকের কাছে একটি সুপারিশ করেছিলেন, কিন্তু সেটি সাব-রেজিস্ট্রারের উদ্দেশ্যে চাঁদা চাওয়ার জন্য নয়।
সূত্র জানায়, দুই সপ্তাহ আগে কয়েকজন যুবক সাব-রেজিস্ট্রার মিনহাজ উদ্দিনের কাছে গিয়ে চিঠি দেন এবং দুই লাখ টাকা দাবি করেন। সাব-রেজিস্ট্রার তখন সরাসরি অর্থ দিতে অস্বীকৃতি জানান।
চিঠিতে উল্লেখিত মাহফুজুর রহমানের মোবাইল নম্বরটিও বন্ধ পাওয়া গেছে। সোমবার বিকাল পর্যন্ত কাউকেই খুঁজে পাওয়া যায়নি। এতে আইনজীবী মহল উদ্বিগ্ন হয়ে সিলেটের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন এবং অভিযুক্তদের খুঁজে বের করতে সহযোগিতা চেয়েছেন।
এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রশ্ন উঠছে প্রশাসনিক নিরাপত্তা ও ভুয়া সংগঠনের তৎপরতা নিয়ে। সরকারি কর্মকর্তাদের নামে মিথ্যা সুপারিশ ব্যবহার করে অর্থ দাবি করার ঘটনায় প্রশাসনকে আরও কঠোর হতে হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এম.কে
২৭ মে ২০২৫