
টিভিথ্রি ডেস্ক: রেলপথ নির্মাণের একটি মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে চীন। সম্প্রতি কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকার ইন্টারসিটি রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণ পরিকল্পনার আনুষ্ঠানিক অনুমোদন দিয়েছে দেশটির জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন।
জানা যায়, ভবিষ্যতে কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকার প্রধান শহরগুলোর মধ্যে এক ঘণ্টা, প্রধান শহর ও কুয়াংতুং প্রদেশের অন্য শহরের মধ্যে দু’ঘণ্টা এবং প্রধান শহর ও প্রতিবেশী প্রদেশের রাজধানীর মধ্যে তিন ঘণ্টার পরিবহনব্যবস্থা তৈরি হবে।
এ পরিকল্পনাকে সময়োপযোগী বলে মনে করেন কুয়াংতুং প্রদেশের সামাজিক বিজ্ঞান একেডেমি কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকা গবেষণালয়ের গবেষক তেং চিয়াং নিয়ান।
তিনি বলেন, আমরা মনে করি কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকায় পরিবহনের জন্য রেলব্যবস্থা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং এই উন্নয়ন চাহিদার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এতে দ্রুত নিরাপত্তা পরীক্ষা, স্টেশনের মধ্যে ব্যবধান কমানো এবং বেশি শিফ্ট রয়েছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ১৩টি ইন্টারসিটি রেল ও ৫টি যাতায়াতের সংযোগ স্থল নির্মাণ হবে।
তেং চিয়াং নিয়ান মনে করেন, এ পরিকল্পনা কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকার পরিবহনের ভারসাম্যহীনতার সমস্যা দূর করবে।
তিনি বলেন, বহু যাতায়াত নেটওয়ার্ক নির্মাণ উন্নয়নের ভারসাম্যহীনতা কাটাতে পারে এবং তা চুচিয়াং নদীর পশ্চিম তীরের উন্নয়নে কল্যাণকর। এটি উপকূলীয় এলাকার বহু শহরের কাঠামো উন্নয়ন জোরদার করবে।
চায়না মিডিয়া গ্রুপ সূত্রে জানা যায়, এ অঞ্চলের কেন্দ্রে কুয়াংতুং ও হংকং থেকে শেনচেন-তুংকুয়ান-হুইচৌ, কুয়াংচৌ-ফোশান-চাওছিং এবং চুহাই-চুংশান-চিয়াংমেন এ তিনটি শহরবৃত্ত তৈরি করবে। যাতায়াতের সংযোগস্থল ও তার পাশে পাতাল রেল, ট্রাম, বাসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে উপকূলীয় এলাকার অভ্যন্তরীণ পরিবহনব্যবস্থা গড়ে উঠবে।
এর আগে চুচিয়াং নদীর বদ্বীপ অঞ্চলে কুয়াংচৌকে কেন্দ্র করে রেলপথ তৈরি করা হবে। নতুন ইন্টারসিটি রেল নেটওয়ার্ক পরিকল্পনার আওতায় শেনচেন ও কুয়াংচৌ শহরে এর কেন্দ্র স্থাপন করা হবে।
হুয়ানান শহর উন্নয়ন গবেষণালয়ের প্রধান হু কাং মনে করেন, শেনচেন শহরকে যাতায়াতের সংযোগস্থল হিসেবে তৈরি করা সরকারের ইচ্ছা এবং প্রতিবেশী শহর শেনচেনের উন্নয়নের মাধ্যমে নিজস্ব উন্নয়ন বাস্তবায়নের প্রত্যাশার প্রতিফলন।
হুকাং বলেন, উপকূলীয় ইন্টারসিটি রেল পরিকল্পনার সঙ্গে কুয়াংতুং প্রদেশের ইন্টারসিটি রেল পরিকল্পনার কিছুটা পার্থক্য রয়েছে। আগে কুয়াংচৌ ছিল একমাত্র কেন্দ্র এবং এখন শেনচেন ও কুয়াংচৌ হলো দুটি কেন্দ্র। শেনচেন শহরে নবায়ন শিল্প দ্রুত উন্নত হচ্ছে এবং উপকূলীয় এলাকার শহরগুলো শেনচেনের সঙ্গে দ্রুত ও সুবিধাজনক একটি যোগাযোগ শুরু করতে চায়।
২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাষ্ট্রীয় পরিষদ কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকার উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং উপকূলীয় এলাকার নির্মাণ এগিয়ে নিয়েছে। বর্তামানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের উপকূলীয় এলাকার প্রায় সমান। শিল্প উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে লোকসংখ্যাও বাড়ছে।
জুংশান বিশ্ববিদ্যালয়ের কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও বিষয়ক গবেষণালয়ের প্রধান বিশেষজ্ঞ চেন কুয়ং হান বলেন, কুয়াংতুং-হংকং-ম্যাকাও উপকূলীয় এলাকার পরিবহন নেটওয়ার্ক উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে শহর প্রশাসনের সংস্কার এগিয়ে নেওয়া হবে। উপকূলীয় এলাকায় একটি উন্মুক্ত, নবায়নযোগ্য ও ভালো মানের জীবন গড়ে উঠবে।
তিনি বলেন, ইন্টারসিটি রেল পরিবহন শহরের কাঠামোকে পুরোপুরিভাবে পরিবর্তন করতে পারে। এতে কুয়াংচৌ শহর আরও প্রসারিত হবে। হংকং ও ম্যাকাওয়ের বাসিন্দারা উপকূলীয় এলাকায় কাজ করতে পারবে, বাস করতে পারবে। এতে ব্যক্তি, শিক্ষা, চিকিত্সাসহ নানা ক্ষেত্রে সংস্কার হবে।
২০ আগস্ট ২০২০
এনএইচটি