15.8 C
London
October 16, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গুলি: ১২৬ অস্ত্রধারী শনাক্ত, গ্রেপ্তার ১৯

একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ছাত্র-জনতাকে লক্ষ্য করে অস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন এক যুবক। পরে নিশ্চিত হওয়া যায়, ওই যুবক ঢাকা উত্তর সিটির ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের তৎকালীন কাউন্সিলর আসিফ আহমেদ। তিনি সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদের ভাতিজা। গত ৪ আগস্ট রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকা থেকে ভিডিওটি ধারণ করা হয়েছিল। সেদিন আসিফের নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ছাত্র-জনতার ওপর হামলা চালিয়েছিল।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের ঠিক এক দিন আগে গত ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুরে এ রকম আরেকটি ঘটনার ভিডিও ফুটেজ পাওয়া গেছে। সেদিন মোহাম্মদপুরের বছিলা সড়কেও ছাত্র-জনতার ওপর গুলি ছোড়া হয়েছিল। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঢাকা উত্তরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরেকজন সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান ওরফে রাজীব এবং সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান ওরফে বিপ্লব আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন।

গত জুলাই ও আগস্টের শুরুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকার যেসব এলাকা উত্তাল হয়ে উঠেছিল, এর মধ্যে মোহাম্মদপুর অন্যতম। এর মধ্যে ১৭–২১ জুলাই এবং ৪ আগস্ট মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে বছিলা পর্যন্ত সড়কে অবস্থানকারী ছাত্র-জনতার ওপর হামলা করা হয়েছিল। আন্দোলন দমন করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে মোহাম্মদপুর এলাকায় দলবল নিয়ে সক্রিয় ছিলেন সাবেক দুই কাউন্সিলর আসিফ ও রাজীব এবং বিপ্লব। গত ৫ আগস্ট দুপুরের পর তারা আত্মগোপনে চলে যান। এখন পর্যন্ত তাদের কাউকেই গ্রেপ্তার করা যায়নি।

ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, ঢাকা উত্তরের ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের আরেকজন সাবেক কাউন্সিলর তারেকুজ্জামান ওরফে রাজীব এবং সাবেক সংসদ সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানকের ব্যক্তিগত সহকারী মাসুদুর রহমান ওরফে বিপ্লব আগ্নেয়াস্ত্র হাতে গুলি ছুড়তে ছুড়তে এগিয়ে যাচ্ছেন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে এভাবে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ছাত্র–জনতার অবস্থান লক্ষ্য করে গুলি করার ঘটনা ঘটেছে রাজধানী ঢাকাসহ অন্তত ১২ জেলায়। অন্য জেলাগুলো হলো চট্টগ্রাম, ফেনী, নারায়ণগঞ্জ, ফরিদপুর, রংপুর, জামালপুর, হবিগঞ্জ, রাজশাহী, সিরাজগঞ্জ, সিলেট ও লক্ষ্মীপুর। এর বাইরে ঢাকা জেলার সাভার, আশুলিয়া ও কেরানীগঞ্জে ছাত্র–জনতাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছেন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা। এসব ঘটনায় ১২৬ জন অস্ত্রধারীকে চিহ্নিত করা গিয়েছে বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজ হতে।

এর মধ্যে চট্টগ্রামে শনাক্ত হওয়া ১০ জন অস্ত্রধারীর মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তিনজনকে। ফেনীতে শনাক্ত হওয়া ৩৩ জন অস্ত্রধারীর মধ্যে ১ জনকে, কেরানীগঞ্জে ৪ জনের মধ্যে ১ জনকে এবং সিরাজগঞ্জে ২ জনের মধ্যে ১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সব মিলিয়ে ৬ জনের মধ্যে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বাকি ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। অবশ্য অস্ত্রধারীদের সঙ্গে হামলায় অংশ নেওয়া বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ।

র‍্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনীম ফেরদৌস গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, ছাত্র-জনতার উপর আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অন্তত ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, যারা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলায় সরাসরি জড়িত ছিলেন। অনেকেই নজরদারিতে আছেন তাদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

এম.কে

১৪ অক্টোবর ২০২৪

আরো পড়ুন

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড মন্ত্রিসভায় অনুমোদন

অনলাইন ডেস্ক

ভারতে ব্যর্থ, বাংলাদেশে ভুটানি তরুণীর সফল অস্ত্রোপচার

কি অবস্থায় আছে বাংলাদেশের অর্থনীতি