বাংলাদেশ থেকে অপরিশোধিত রাইস ব্রান বা কুঁড়ার তেল আমদানিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে জাপানের শীর্ষ কুঁড়ার তেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান সানওয়া ইউশি কোম্পানি। সোমবার (৬ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে আয়োজিত ‘বাংলাদেশে রাইস ব্রান তেলের বাজার চাহিদা ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ আগ্রহের কথা জানান প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়োজাইমন ইয়ামাগুচি।
সভায় সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইয়ের মহাসচিব মো. আলমগীর। তিনি বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বাজার চাহিদা, সরবরাহব্যবস্থা ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা নিয়ে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন। সভায় কুঁড়ার তেল–সংশ্লিষ্ট শিল্পের স্থানীয় ব্যবসায়ী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সানওয়া ইউশি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ইয়োজাইমন ইয়ামাগুচি বলেন, “জাপানে ভোজ্যতেলের মোট চাহিদার ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ জোগান দেন কুঁড়ার তেল উৎপাদনকারীরা। তবে চাহিদার তুলনায় আমাদের উৎপাদনক্ষমতা কম। যেহেতু জাপানে প্রচুর চাহিদা রয়েছে, আমরা বাংলাদেশ থেকে অপরিশোধিত কুঁড়ার তেল আমদানি করতে চাই।”
বাংলাদেশ সুদান জিনিং কটন কোম্পানির বিজনেস অ্যাসোসিয়েট গাজী মাহমুদ কামাল বলেন, “দেশে কুঁড়ার তেল উৎপাদন ও ব্যবহার বাড়ানো গেলে ভোজ্যতেলে আমদানিনির্ভরতা অনেকাংশে কমানো সম্ভব। ধান আমাদের প্রধান ফসল, তাই স্থানীয় পর্যায়ে কাঁচামালের কোনো ঘাটতি নেই। এই খাতে বড় বাজার সম্ভাবনা রয়েছে।”
কৃষি মন্ত্রণালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব মো. জাকির হোসেন বলেন, “দেশে কিছু প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই কুঁড়ার তেল উৎপাদন করছে। তবে ভোক্তা পর্যায়ে এর চাহিদা সীমিত। তাই রপ্তানির দিকেও মনোযোগ দেওয়া যেতে পারে।”
তবে স্থানীয় ভোজ্যতেল উৎপাদনকারীদের মধ্যে কেউ কেউ সতর্ক অবস্থান নিয়েছেন। তাঁদের মতে, অপরিশোধিত কুঁড়ার তেল রপ্তানি করা হলে দেশের অভ্যন্তরে তেল উৎপাদনের কাঁচামাল ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সে কারণে অনেকে অপরিশোধিত তেল রপ্তানির বিপক্ষে মত দিয়েছেন।
মতবিনিময় সভায় অংশগ্রহণকারীরা বলেন, বাংলাদেশের ধানভিত্তিক কৃষি অর্থনীতিতে কুঁড়ার তেল হতে পারে নতুন রপ্তানি সম্ভাবনার খাত। সঠিক পরিকল্পনা ও বিনিয়োগ পেলে এটি দেশের ভোজ্যতেল শিল্পে ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সক্ষম।
সূত্রঃ প্রথম আলো
এম.কে
০৭ অক্টোবর ২০২৫