1.4 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
স্পোর্টস

টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপে ভারতকে বিশেষ সুবিধা দেয়ার অভিযোগ

টি-টোয়েন্টি ওয়ার্ল্ডকাপ ফরম্যাট এবং শিডিউল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ইতিমধ্যেই। কীভাবে দলগুলোকে সুপার-৮ এ গ্রুপিং করা হল তা নিয়ে যথেষ্ট অস্বচ্ছতা রয়েছে। এই সূচি এবং ফরম্যাটের বিন্যাসে যে ভারত সব থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত দল, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। এমন ভাবেই ফরম্যাট করা হয়েছে, যেখানে শক্তি সামর্থ্যের বিচারে ছোট দল বড় নামি দলগুলোকে হারিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য রাখে, সেই বিষয়টিকেই উৎসাহ দেওয়া হয়নি।

যে কোনও ধরণের বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ থাকবেই। এটাই তো আইসিসির সোনার ডিম পাড়া রাজহাঁস। তা যথেষ্ট স্বচ্ছতার অভাব সত্ত্বেও প্রত্যেক বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তানকে একই গ্রুপে ফেলে লড়িয়ে দেওয়া হয় আর্থিক লাভের তাগিদে।

গ্রুপ পর্বের এই সূচি বিন্যাসের ড্র কীভাবে করা হয়, তা বরাবরই ‘ট্রেড সিক্রেট’। স্রেফ নিয়ম মাফিক ঘোষণা করা হয় আইসিসির তরফে। ভারত-পাকিস্তান ফর্মুলার পথে হেঁটে একইভাবে ইদানিং গ্রুপ পর্বে অষ্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড এবং বাংলাদেশ বনাম শ্রীলঙ্কা ম্যাচও আয়োজন করছে আইসিসি।

বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বের ফলাফল যাই হোক না কেন, হেভিওয়েট দলগুলোর সঙ্গে আগেই করে রাখা হয়েছে প্রি-সিডিং। তাই গ্রুপ পর্বের দলগুলোর উদ্দাম সাফল্যের অঙ্ক সুপার-৮’এ বয়ে আনার সুযোগ রাখা হয়নি। গ্রুপ-১’এ রাখা হয়েছে A1, B2, C1, D2। গ্রুপ-২’এ রাখা হয়েছে A2, B1, C2, D1। ‘1 এবং 2’ মোটেও গ্রুপ পর্বের চ্যাম্পিয়ন অথবা রানার্স বিষয়ক নির্ণায়ক মাপকাঠি নয়, বরং এগুলো হল প্রি সিডিং। স্বভাবিকভাবে গ্রুপ পর্বের পারফরম্যান্সের ভিত্তিতে যে সুপার-৮ নির্ধারণ- সেই বিষয়টিই অনুপস্থিত এই গোটা ঘটনায়।

কোনও চমক রাখার ব্যবস্থা নেই এই ড্র এবং সূচি নির্ধারণে। আগে থেকেই যেন সবকিছু রিসেট করে রাখা হয়েছে। গ্রুপ পর্বের নেট রানরেট অথবা পয়েন্ট সুপার-৮ পর্বে ধার্য হবে না। এই বিষয়টিও আশ্চর্যের।

এই প্রি সিডিং বিষয়টিকেই নস্যাৎ করে সুপার-৮’এ উঠে এসেছে বাংলাদেশ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, আফগানিস্তান। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ ছিল আফগানিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের মধ্যে। এই ম্যাচ ছিল গ্রুপ পর্বের শীর্ষস্থান এবং রানার্স নির্ণায়ক। তবে গুরুত্বপূর্ণ এই ম্যাচই দিনের শেষে গুরুত্বহীন। কারণ আগে থেকেই দুই দলের প্রিসিডিং হয়ে রয়েছে। সুপার-৮’এও গ্রুপ বিন্যাসে তারতম্য হবে না এই ম্যাচের ফলাফলে। আগে থেকেই কতগুলো ডেড রাবার ম্যাচ ঠিক করে রাখা হয়েছে।

ভারত বিশ্বকাপে যতক্ষণ থাকবে, ততক্ষণই আইসিসির কোষাগার ভরতে থাকবে। সোনার সেই রাজহাঁসের জন্য আইসিসি যে স্পেশাল বরাদ্দ করবে তা তো এখন ওপেন সিক্রেট। ২০০৭-এ বিশ্বকাপে ভারত গ্রুপ পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছিল যার জন্য আর্থিকভাবে ক্ষতি হয়েছিল আইসিসির। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এমনভাবেই গ্রুপ বিন্যাস করা হয়, যাতে ভারত সবথেকে সুবিধাপ্রাপ্ত দল হয়। যাতে ভারতকে অপ্রত্যাশিত বিদায়ের হাত থেকে বাঁচানো যায়, সেই জন্য গ্রুপ পর্ব থেকে ফরম্যাট সবকিছুই নির্ধারণ করা হয়।

এবারের বিশ্বকাপে ভারতের সূচি এমনভাবে ফেলা হয়েছে যাতে রোহিত-কোহলিদের বিভিন্ন ভেন্যুতে চরকি পাক না খেতে হয়। বেশি ট্র্যাভেলিংয়ের ধকল যাতে এড়ানো যায়। অন্য দলগুলো যেখানে এক ভেন্যু থেকে অন্য ভেন্যুতে, এক দেশ থেকে অন্য দেশে প্রাণান্তকর পরিশ্রম করেছে, সেখানে ভারত কার্যত বেস ক্যাম্প বানিয়ে ফেলেছিল নিউ ইয়র্কে। প্রস্তুতি ম্যাচ সহ মোট চারটি ম্যাচ নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে খেলার পর ভারত শেষ ম্যাচ খেলেছিল ফ্লোরিডায়।

ভারত-ইউএসএ ম্যাচে আয়োজক দেশ নাসাউ ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্ৰথমবার খেলতে নেমেছিল। অথচ ভিজিটিং দেশ ভারত তখন ইতিমধ্যেই সেই ভেন্যুতে তিনটি ম্যাচ খেলে ফেলেছিল। এতটাই হাস্যকর হয়ে দাঁড়িয়েছে এবারের বিশ্বকাপ।

অন্য দলগুলোকে খেলতে হচ্ছে একাধিক টাইম জোনে। ভারত অবশ্য আলাদাই। একই সময়ে ভারতের সমস্ত ম্যাচ ফেলা হয়েছে। সেই সময় ভারতের প্রাইম টাইম অনুযায়ী। তাই দিনের অন্য সময়ে খেলে মানিয়ে নেওয়ার কোনও চ্যালেঞ্জ-ই নেই ভারতের কাছে। এমনকি সুপার-৮ পর্বে ভারত খেলবে ধরে নিয়েই সমস্ত ম্যাচ চালু রাখা হয়েছে ভারতীয় সময় রাত ৮টায়। চলতি বিশ্বকাপে ভারতই একমাত্র দল যাদের আগাম জানিয়ে রাখা হয়েছে সেমিফাইনালে তাদের ম্যাচ কোন ভেন্যুতে হবে, ঠিক কোন সময়ে।

ঘটনা হল ভারতকে এই সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার বিষয়ে অনেকটাই হাত রয়েছে সম্প্রচারকারী সংস্থার। তাই বিশ্বকাপ হয়ে গিয়েছে নামেই বিশ্বকাপ, কিন্তু কার্যত একটি বিশেষ দলকে সুবিধা দেয়ার সর্বাত্মক চেষ্টা বলে মনে করেন ক্রীড়া বিশ্লেষকেরা।

সূত্রঃ ইন্ডিয়া এক্সপ্রেস

এম.কে
২০ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

ব্রাজিল-আর্জেন্টিনার ম্যাচ নিয়ে মারাকানা স্টেডিয়ামে কুরুক্ষেত্র

কেন্টের হয়ে খেলবেন বাংলাদেশী আরাফাত

আফগানদের হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু সাকিব বাহিনীর