বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এই খবরটি ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশি কমিউনিটিতে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে বলে জানা যায়।
সাম্প্রতিক কয়েকদিনে এই বিষয়টি কমিউনিটির নানা পত্রিকা, সভা-সমাবেশ এবং আচার অনুষ্ঠানে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, এই ঘটনার কারণে ব্রিটেনে বসবাসরত বাংলাদেশিরা তাদের বিশ্বাসযোগ্যতা হারাতে পারে এবং এটি বাংলাদেশি কমিউনিটির রাজনীতিবিদদের জন্যও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
টিউলিপ সিদ্দিক, যিনি ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট বোন শেখ রেহানার মেয়ে, বর্তমানে যুক্তরাজ্যের সিটি মিনিস্টার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, পাবনার রূপপুরে নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুক্তির সঙ্গে সম্পর্কিত অর্থ আত্মসাতের তদন্ত চলছে।
এই চুক্তির বিষয়ে তার বিরুদ্ধে আরও একটি গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে যে তিনি রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটমের সঙ্গে ১০ বিলিয়ন ডলারের পারমাণবিক চুক্তির ‘দালালি’ করেছেন। এই চুক্তি ২০১৩ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল এবং তাতে টিউলিপ সিদ্দিক, তার মা শেখ রেহানা সিদ্দিক এবং ছোট বোন আজমিনা সিদ্দিক উপস্থিত ছিলেন। সেই সময় টিউলিপ সিদ্দিক ছিলেন একজন লেবার কাউন্সিলর। অভিযোগ করা হচ্ছে যে, এই চুক্তি থেকে টিউলিপ সিদ্দিক ৪ বিলিয়ন পাউন্ড ঘুষ গ্রহণ করেছেন।
এছাড়াও, বিলাসবহুল বাড়ি ব্যবহারের তথ্য গোপন করার অভিযোগে ব্রিটেনে আরও একটি তদন্তের মুখোমুখি হতে হয়েছিল তাকে, যেখানে তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে, ব্রিটেনের কিছু মানুষ এবং কমিউনিটির সদস্যরা এই বিষয়ে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ব্রিটিশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। আবার, কিছু লোক টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগের দাবিও তুলেছেন।
এমনকি, উইট ইস্টের টোরি এমপি জো রবার্টসন বলেছেন, “এটি স্পষ্ট যে অভিযোগগুলো গুরুতর, এবং তদন্তের ফলস্বরূপ টিউলিপ সিদ্দিক তার মন্ত্রী পদে বহাল থাকবেন কিনা, তা স্পষ্ট হওয়া উচিত।”
এ পরিস্থিতিতে, টিউলিপ সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলোর তদন্ত এবং এর ফলাফল নিয়ে ব্রিটেনের রাজনৈতিক মহলে চাপের সৃষ্টি হয়েছে।
এম.কে
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪