যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে, ইকুয়ালিটি অ্যাক্টে ‘নারী’ শব্দটি জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে সংজ্ঞায়িত হয়েছে।
পাঁচজন বিচারক সর্বসম্মতিক্রমে রায় দিয়েছেন, জেন্ডার রিকগনিশন সার্টিফিকেট (GRC) থাকলেও ট্রান্স নারীদের ২০১০ সালের ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট অনুযায়ী নারী হিসেবে গণ্য করা যাবে না।
এই সিদ্ধান্ত এসেছে ফর উইমেন স্কটল্যান্ড (FWS) নামক প্রচারণাকারী সংগঠনের করা একটি মামলার প্রেক্ষিতে, যারা স্কটিশ সরকারের পাবলিক বোর্ডে ৫০ শতাংশ নারী কোটা পূরণে GRC থাকা ট্রান্স নারীদের অন্তর্ভুক্তির বিরোধিতা করেছিল।
২০২২ সালে এডিনবার্গের বিচারকরা এই মামলাটি খারিজ করে দিলেও, বুধবার সকালে সুপ্রিম কোর্ট আপিলটি গ্রহণ করে।
LGBTQ+ অধিকার সংগঠনগুলো এই রায়ে ‘হতাশা’ প্রকাশ করেছে এবং ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের অধিকার নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে।
গুড ল’ প্রজেক্ট সামাজিক মাধ্যমে বলেছে, “এই রায় একটি বিপজ্জনক নজির সৃষ্টি করেছে এবং ট্রান্স নারীদের সুরক্ষা থেকে মুছে দিয়েছে। এটি ট্রান্স অধিকারকে ২০ বছর পিছিয়ে নিয়েছে।”
বিভিন্ন LGBT+ অধিকার সংগঠন আজকের রায়ের পর ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের “ভয় না পাওয়ার” আহ্বান জানিয়েছে।
লেবার পার্টির সাবেক এমপি হ্যারিয়েট হারম্যান বলেছেন, “আজকের রায় সঠিকভাবে আইনটির ব্যাখ্যা দিয়েছে।নারীদের জন্য সিঙ্গেল-সেক্স স্পেস গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রয়োজনে সেখানে ট্রান্স নারীদের বাদ দেওয়া যেতে পারে। আইন ও রায় দুটিই নারীদের অধিকার রক্ষা করে, এবং একইসঙ্গে ট্রান্স নারীদের অধিকারের প্রতি সম্মানও প্রদর্শন করে।”
তবে স্কটিশ গ্রীন পার্টি আজকের সুপ্রিম কোর্টের রায়কে “মানবাধিকারের জন্য গভীরভাবে উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেছে।
এই রায় GRC থাকা ট্রান্স নারীদের ‘নারী’ সংজ্ঞা থেকে বাদ দিয়েছে।
স্কটিশ গ্রিনস MSP ম্যাগি চ্যাপম্যান বলেছেন,
“এটি মানবাধিকারের জন্য একটি গভীরভাবে উদ্বেগজনক রায় এবং সমাজের সবচেয়ে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপর একটি বড় আঘাত।
এই রায় ট্রান্সজেন্ডারদের জন্য সমাজে গুরুত্বপূর্ণ সুরক্ষা সরিয়ে দিতে পারে এবং বহু ট্রান্সজেন্ডার মানুষকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলবে।”
লেবার ফর ট্রান্স রাইটস সুপ্রিম কোর্টের রায়কে “অত্যন্ত হতাশাজনক” বলে অভিহিত করেছে। তারা জানায় এই রায় “প্রচুর অর্থায়নপ্রাপ্ত ট্রান্সবিরোধী লবির নিরলস প্রচেষ্টার ফলাফল।
লেবার পার্টির উচিত নয় ডোনাল্ড ট্রাম্পের পথ অনুসরণ করা। বরং ইকুয়ালিটি অ্যাক্ট এবং এতে থাকা ট্রান্সজেন্ডার ব্যক্তিদের আইনি সুরক্ষা প্রদান করা উচিত।”
সুপ্রিম কোর্টের রায়ের প্রতিক্রিয়ায় সরকারপক্ষের একজন মুখপাত্র বলেছেন:
“আমরা সব সময়ই জৈবিক লিঙ্গের ভিত্তিতে সিঙ্গেল-সেক্স স্পেস রক্ষার পক্ষে থেকেছি। এই রায় নারীদের ও সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান— যেমন হাসপাতাল, আশ্রয়কেন্দ্র ও ক্রীড়া ক্লাবদের — জন্য স্পষ্টতা ও আস্থা এনেছে।
সিঙ্গেল-সেক্স স্পেস আইন দ্বারা সংরক্ষিত এবং আমাদের সরকার তা সব সময় রক্ষা করবে।”
সূত্রঃ দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট
এম.কে
১৬ এপ্রিল ২০২৫