নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও শপথ নেননি, তবে বিতর্কিত মন্তব্য করে ইতোমধ্যেই আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন। সম্প্রতি তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধারের ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তার এই বক্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র সমালোচনা। কিন্তু পানামা খাল কেন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এত গুরুত্বপূর্ণ।
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) এসব প্রশ্নের উত্তর দিয়ে পানামা খালের আদ্যোপান্ত তুলে ধরেছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা।
গত রোববার আরিজোনায় ‘আমেরিকাফেস্ট’ অনুষ্ঠানে ট্রাম্প বলেন, ‘পানামা খালের মাধ্যমে আমাদের প্রতারণা করা হয়েছে। এটি আমাদের দেওয়া উচিত ছিল না। যুক্তরাষ্ট্র বোকামি করে এটি ছেড়ে দিয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা এটি ভুল হাতে পড়তে দেব না।’
পরে ট্রাম্প তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এ পানামা খালের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের পতাকা ওড়ানো একটি ছবি পোস্ট করে লেখেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের খালে স্বাগতম!’
ট্রাম্পের এই বক্তব্যের পরই প্রতিবাদ জানান পানামার প্রেসিডেন্ট হোসে রাউল মুলিনো। সামাজিক মাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) একটি ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, ‘পানামা খালের প্রতি বর্গমিটার এবং এর আশপাশের এলাকা পানামার অধীনে ছিল এবং থাকবে।’
তিনি আরও বলেন, পানামা খালের ওপর চীনের কোনও প্রভাব নেই। চীনের সঙ্গে সম্পর্কিত হংকংভিত্তিক সিকে হাচিসন হোল্ডিংস শুধু খালের দুটি বন্দর পরিচালনা করে।
প্রশান্ত মহাসাগর ও আটলান্টিক মহাসাগরকে সংযুক্তকারী এই কৃত্রিম খালটি ১৯১৪ সালে নির্মাণ করে যুক্তরাষ্ট্র। এটি বৈশ্বিক বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যেখানে প্রতি বছর প্রায় ১৪ হাজার জাহাজ চলাচল করে। মার্কিন কনটেইনারের ৪০ শতাংশই এই খাল ব্যবহার করে।
এশিয়া থেকে পণ্য আমদানি এবং এলএনজি রপ্তানিতে খালটি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যদিও ১৯৯৯ সালে একটি চুক্তির মাধ্যমে খালটির মালিকানা পানামা সরকারের কাছে হস্তান্তর করে যুক্তরাষ্ট্র।
ট্রাম্প বলেন, ‘যদি নৈতিক এবং আইনি উভয় দিক বিবেচনা করে মহৎ পদক্ষেপ নেওয়া না হয়, তাহলে আমরা পানামা খাল দ্রুত এবং সম্পূর্ণভাবে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি করব।’
ট্রাম্পের এই মন্তব্য বিশ্বমঞ্চে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এটি শুধু পানামা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ওপর প্রভাব ফেলবে না, বরং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যেও উত্তেজনার কারণ হতে পারে।
সূত্রঃ আলজাজিরা
এম.কে
২৫ ডিসেম্বর ২০২৪