3.5 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
শীর্ষ খবরসারাদেশ

ঢাকায় এলএসডি বিক্রি ও সেবনে ১৫টি দল

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের সূত্রে লাইসার্জিক এসিড ডাই-ইথাইলামাইডসহ (এলএসডি) বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তারের পর এসংক্রান্ত আরো তথ্য মিলেছে। পুলিশ বলছে, অনলাইনে গোপন যোগাযোগের মাধ্যমে ভয়ংকর এ মাদকের ফাঁদে পড়েছে অনেক তরুণ-তরুণী।

 

শনিবার (২৯ মে) রাতে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরো পাঁচ বিশ্ববিদ্যালয়ছাত্রকে গ্রেপ্তারের পর তারা পুলিশকে জানিয়েছেন, এলএসডি সেবন ও কারবারের সঙ্গে জড়িত ১৫টি দল রাজধানীতে সক্রিয় রয়েছে।

 

এদিকে আগে গ্রেপ্তার তিন ছাত্রকে রোববার (৩০ মে) পাঁচ দিন করে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের এই আদেশ দেন।

 

পল্টন থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মহানগর পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) আব্দুল আহাদ শনিবার রাতে পাঁচ ছাত্রকে গ্রেপ্তারের কথা জানান। তিনি জানান, গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন এস এম মনোয়ার আকিব আনান (২০), সাইফুল ইসলাম ওরফে সাইফ (২০), নাজমুস সাকিব (২০), নাজমুল ইসলাম (২৪) ও বি এম সিরাজুস সালেকীন ওরফে তপু (২৪)। তারা প্রত্যেকেই রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

 

পুলিশের ডিসি জানান, মালিবাগ কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে সাইফ, আনান ও সাকিবকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় সাইফের কাছ থেকে এলএসডি মিশ্রিত তিন পিস ব্লটার পেপার, আনানের কাছ থেকে এক পিস ব্লটার পেপার ও সাকিবের কাছ থেকে এক পিস ব্লটার পেপার উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেওয়া তথ্য মতে ভাটারা এলাকায় অভিযান চালিয়ে নাজমুল ও তপুকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকেও ছয়টি ব্লটার পেপার ও গাঁজা উদ্ধার করা হয়েছে।

 

উপকমিশনার আরো বলেন, গ্রেপ্তাররা এক বছর ধরে এলএসডি মাদক সেবন ও ব্যবসা করে আসছিলেন। ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে অনলাইনের মাধ্যমে এলএসডি মাদক কিনে কুরিয়ার ও বিভিন্ন ব্যাগেজের মাধ্যমে দেশে আনা হতো। এলএসডি মাদক সেবন ও বিক্রি চক্রে আরো অনেক সদস্য রয়েছে। তাদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

 

এক প্রশ্নের উত্তরে ডিসি আব্দুল আহাদ বলেন, এখন পর্যন্ত আমরা চৌদ্দ-পনেরোটি এলএসডি মাদক সেবন ও বিক্রির গ্রুপের সন্ধান পেয়েছি। যে পাঁচজনকে শনিবার রাতে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা এলএসডি মাদক সেবনের পাশাপাশি ব্যবসা করত। আমরা অন্যান্য গ্রুপকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছি।

 

ডিবি পুলিশের সূত্র জানায়, ফেসবুকে ‘আপনার আব্বা’ নামের একটি গ্রুপের মাধ্যমে এলএসডির ক্রেতা সংগ্রহ করতেন রিমান্ডে যাওয়া রূপল। এই গ্রুপে সদস্যসংখ্যা এক হাজারের বেশি। অনলাইনভিত্তিক অর্থ লেনদেন (পেমেন্ট) ব্যবস্থা পেপ্যালের মাধ্যমে টাকার লেনদেন করে নেদারল্যান্ডস থেকে এলএসডি আনেন রূপল। এই গ্রুপে তূর্য, আদিন ছাড়াও তার কয়েকজন সহযোগী আছে। গ্রুপটি প্রায় এক বছর ধরে অনেকের কাছে এলএসডি বিক্রি করেছে। ঢাকায় আরো অনেকে এলএসডি সেবন করেছে। তবে নতুনভাবে এই মাদক গ্রহণ করা অনেকে মাদকটির ক্ষতি সম্পর্কে জানে না। তারা কাজে বেশি মনোযোগ দেওয়ার জন্য গাঁজার আধুনিক ভার্সন হিসেবে এলএসডি গ্রহণ করেছে বলে তথ্য মেলে। এই মাদক সেবনে হ্যালুসিনেশনের (সম্মোহন) মাত্রা এত বেড়ে যায় যে সেবনকারী নিজেকে অনেক ক্ষমতাধর মনে করে। অনেক পুরনো স্মৃতিও তার মনে পড়ে। বেপরোয়া হয়ে যেকোনো কাজ করে ফেলতে পারে সে।

 

তদন্তকারীরা তথ্য পেয়েছেন, গত ১৫ মে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যবিজ্ঞান ও গ্রন্থাগার ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র হাফিজুর রহমানকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল এলাকায় তাঁর তিন বন্ধু এলএসডি সেবন করায়। এর প্রতিক্রিয়া শুরু হলে তিনি শুধু একটি শর্টস পরে সেখান থেকে বেরিয়ে যান। এরপর ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সামনে এক ডাব বিক্রেতার ভ্যানে রাখা দা নিয়ে তিনি নিজের গলায় আঘাত করেন। পরে হাসপাতালে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনা প্রকাশ পেলে এলএসডি সেবনকারীদের মধ্যে কিছুটা আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। গত বুধবার ধানমণ্ডি ও লালমাটিয়া থেকে তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।

 

৩১ মে ২০২১
সূত্র: কালেরকণ্ঠ

আরো পড়ুন

ব্রিটেনে বিদ্বেষমূলক অপরাধের টার্গেট মুসলমানরা

যুক্তরাজ্যে পরপর ৩ বাংলাদেশি খুনের ঘটনায় কম্যুনিটিতে আতঙ্ক

অনলাইন ডেস্ক

আট শতাধিক বাংলাদেশিকে ফেরত পাঠাচ্ছে জার্মানি