TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

দীর্ঘ বিরতির অবসানঃ ডোভারে অভিবাসী আগমন, চাপে যুক্তরাজ্যের আশ্রয়নীতির সংস্কার

সাত বছরের মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় কোনো ছোট নৌকায় পারাপার না হওয়ার পর শনিবার ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে যুক্তরাজ্যের ডোভারে পৌঁছেছেন কয়েক ডজন অভিবাসী। কেন্ট উপকূলে তোলা ছবিতে দেখা যায়, লাইফ জ্যাকেট পরা অভিবাসীদের বর্ডার ফোর্সের একটি জাহাজে করে তীরে নামানো হচ্ছে।

হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, শনিবারের আগে টানা চার সপ্তাহ কোনো অভিবাসী ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে আসেননি। সর্বশেষ আগমন রেকর্ড করা হয়েছিল ১৪ নভেম্বর। ২০১৮ সালে এ ধরনের তথ্য সংরক্ষণ শুরু হওয়ার পর এটিই সবচেয়ে দীর্ঘ বিরতিহীন সময় হিসেবে নথিভুক্ত হয়েছে।

ডিসেম্বর মাসে সাধারণত প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে ইংলিশ চ্যানেলে পারাপার কমে যায়। প্রবল ঠান্ডা, ঝড়ো হাওয়া ও উত্তাল সমুদ্র এই দীর্ঘ বিরতির অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার কতজন অভিবাসী ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে পৌঁছেছেন, সে বিষয়ে সরকারি পরিসংখ্যান রোববার প্রকাশ করবে হোম অফিস। চলতি বছর এখন পর্যন্ত মোট ৩৯ হাজার ২৯২ জন মানুষ চ্যানেল পাড়ি দিয়ে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছেন, যা ২০২২ সালের (৪৫ হাজার ৭৭৪ জন) পর সর্বোচ্চ। ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত ছোট নৌকায় করে যুক্তরাজ্যে আগত অভিবাসীর সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ৮৭ হাজার।

ছোট নৌকায় অভিবাসন ঠেকাতে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাজ্য সরকার তৎপরতা জোরদার করলেও এসব উদ্যোগের তাৎক্ষণিক প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন না বিশ্লেষকেরা। মানব পাচারকারী চক্র, আশ্রয়প্রার্থী ব্যবস্থাপনা ও ইউরোপীয় সহযোগিতা—সবকিছু মিলিয়ে বিষয়টি এখনো জটিল রয়ে গেছে।

লেবার পার্টির সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার মানব পাচারকারী চক্রগুলোকে “চূর্ণ” করার অঙ্গীকার করেন এবং ২০২৯ সালের মধ্যে ছোট নৌকায় পারাপারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেন।

এদিকে উপপ্রধানমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি সম্প্রতি ইউরোপের বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করে ইউরোপীয় মানবাধিকার সনদ (ইসিএইচআর) সংস্কার নিয়ে আলোচনা করেছেন। সরকারের দাবি, এতে অবৈধ অভিবাসীদের বহিষ্কার প্রক্রিয়া সহজ হতে পারে।

নভেম্বরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শাবানা মাহমুদ আশ্রয়নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। নতুন ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্যে শরণার্থী মর্যাদা সাময়িক হবে, প্রতি ৩০ মাস অন্তর তা পর্যালোচনা করা হবে এবং কোনো দেশের পরিস্থিতি নিরাপদ বলে বিবেচিত হলে সংশ্লিষ্ট শরণার্থীদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে।

এ ছাড়া যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের মধ্যে ‘ওয়ান ইন, ওয়ান আউট’ নামে একটি পরীক্ষামূলক কর্মসূচি আগস্টে শুরু হয়েছে। এই ব্যবস্থায় যুক্তরাজ্য যতজন অভিবাসীকে ফ্রান্সে ফেরত পাঠাবে, ততজন এমন অভিবাসীকে গ্রহণ করবে যাদের আশ্রয়ের আবেদন শক্তিশালী বলে বিবেচিত। ২০২৫ সালের ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত এই চুক্তির আওতায় ১৫৩ জনকে ফেরত পাঠানো হয়েছে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে

আরো পড়ুন

নাগরিকত্ব বাতিলের বিরুদ্ধে তিন ব্রিটিশ-বাংলাদেশির আইনী জয়

অনলাইন ডেস্ক

ইসরায়েলে বিমান চলাচল বন্ধ করেছে ব্রিটিশ এয়ারওয়েজ

ই-সিগারেট বন্ধ হতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যে