TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

দুই-সন্তান ভাতা সীমা তুলে নিলে দারিদ্র্য কমবে—বাজেটের আগে যুক্তরাজ্যে মায়েদের জোর দাবি

যুক্তরাজ্যে দুই-সন্তান ভাতা সীমা (Two-Child Benefit Cap) বাতিলের সম্ভাবনা ঘিরে উত্তরের পরিবারগুলোর মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে। ব্র্যাডফোর্ডের তিন সন্তানের মা ইমতিয়াজ বেগম জানিয়েছেন, ভাতা সীমা তুলে দিলে তার মতো অসংখ্য পরিবার নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ চালাতে সুবিধা পাবেন।

 

বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী, ইউনিভার্সাল ক্রেডিট ও ট্যাক্স ক্রেডিট শুধুমাত্র প্রথম দুই সন্তানের জন্য পাওয়া যায়। ২০১৭ সালের ৬ এপ্রিলের পর জন্ম নেওয়া তৃতীয় সন্তান থেকে সুবিধা পাওয়া যায় না। কনজারভেটিভ চ্যান্সেলর জর্জ ওসবোর্ন এই নিয়মটি চালু করেন। এর ফলে বর্তমানে প্রায় ১৬ লাখ শিশু এমন পরিবারে বড় হচ্ছে যেখানে তারা এই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।

ইমতিয়াজ বেগম বলেন, “আমার কাছে এখন মাত্র £৫৫ আছে, নয় দিন চলতে হবে। যদি তৃতীয় সন্তানের জন্য ভাতা পেতাম, তাহলে এত কষ্ট হতো না। সীমা তুলে দিলে সত্যিই পরিবারগুলো একটু বাঁচবে।”

ইনস্টিটিউট ফর ফিসকাল স্টাডিজের হিসাব অনুযায়ী, সীমা না থাকলে এসব পরিবার বছরে গড়ে £৪,৪০০ বেশি সুবিধা পেত—যা তাদের মোট বার্ষিক ব্যয়ের প্রায় দশভাগ। এই প্রেক্ষাপটে চ্যান্সেলর রেচেল রিভস ইঙ্গিত দিয়েছেন, পরিবারের সন্তানসংখ্যার ভিত্তিতে ভাতা সীমা তুলে দেওয়ার বিষয়টি বাজেটে বিবেচনায় আছে। তিনি আগেই বলেছেন, “বড় পরিবারের শিশুদের শাস্তি দেওয়াটা ন্যায়সঙ্গত নয়।”

ব্র্যাডফোর্ডের স্কুলমোর কমিউনিটি সেন্টারের ম্যানেজার ক্যারোলিন গুডউইল জানান, সীমা তুলে দিলে অঞ্চলের অনেক পরিবার সরাসরি উপকৃত হবে। তিনি বলেন, “অনেকে মনে করেন ভাতা পাওয়ার জন্যই সন্তান নেওয়া হয়। কিন্তু এখানে যে কঠিন বাস্তবতা—অনেক পরিবার টিকে থাকার লড়াই করছে।”

এটি শুধু পরিবার নয়, বরং আঞ্চলিক নেতাদেরও আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। উত্তর ইংল্যান্ডের কয়েকজন মেয়র বাজেটের আগে যৌথ চিঠিতে চ্যান্সেলরকে অনুরোধ করেছেন দুই-সন্তান সীমা বাতিল করতে। তাদের মতে, এই সিদ্ধান্ত নিলে প্রায় ৬,৩০,০০০ শিশু দারিদ্র্য থেকে বেরিয়ে আসতে পারবে, যার মধ্যে বড় একটি অংশ উত্তর ইংল্যান্ডে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এই সীমা দারিদ্র্যপীড়িত এলাকার শিশুদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলছে এবং এটি দারিদ্র্য কমানোর সবচেয়ে ‘কার্যকর ও তাত্ক্ষণিক’ পদক্ষেপ হতে পারে। পাশাপাশি অবকাঠামো উন্নয়ন, নর্দান পাওয়ারহাউস রেল প্রকল্প এবং স্থানীয় ব্যবসা বিনিয়োগেও সরকারকে গুরুত্ব দিতে বলা হয়েছে।

সাউথ ইয়র্কশায়ারের মেয়র অলিভার কাপার্ড বলেন, “সরকার কঠিন আর্থিক বাস্তবতার মধ্যেও আমাদের কথা শুনছে—এটা আমরা নিশ্চিত। তবে আমরা সবাই মিলে এক কণ্ঠে বলছি, এই দাবিগুলো এখন অত্যন্ত জরুরি।”

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে

আরো পড়ুন

বিলেতে বাড়ি কেনাবেচা: মর্গেজ কি এবং কিভাবে করতে হয়?

অনলাইন ডেস্ক

সাউথ লন্ডনের একটি রেস্তোরাঁর লাইসেন্স বাতিল

সারাদেশে বিজিবি মোতায়েন