20 C
London
September 16, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

দূতাবাসে ২০,০০০ পাসপোর্ট, বাংলাদেশীদের ধৈর্য ধরতে বললেন ইতালির রাষ্ট্রদূত

ঢাকাস্থ ইতালি দূতাবাসে বর্তমানে কমপক্ষে ২০ হাজার বাংলাদেশী পাসপোর্ট যাচাইয়ের জন্য অপেক্ষমান থাকায় ইতালির রাষ্ট্রদূত আন্তোনিও আলেসান্দ্রো সকল ধরনের ভিসাপ্রার্থীদেরকে দূতাবাসের অসুবিধা বিবেচনা করে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন।

ভিসা প্রদান প্রক্রিয়ার জন্য বিশাল আবেদন জমে থাকার বিষয় বর্ণনা করে বৃহস্পতিবার এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাসসকে বলেন, ‘আমি সবাইকে ধৈর্য ধরতে এবং (দূতাবাসের) অসুবিধাগুলো বিবেচনার আহ্বান জানাচ্ছি। তাদের কাছে আমার আহ্বান হলো, আরো ধৈর্য ধরুন এবং শুধু অফিসিয়াল এজেন্টদের উপর আস্থা রাখুন।’

ইতালীয় দূতাবাস গত বছরের জুলাই মাস থেকে কাজের ভিসা আবেদনকারীদের একটি ঢেউ দেখেছে কারণ অনেক বাংলাদেশী ভাগ্যান্বেষীরা এই ধনী ইউরোপীয় দেশকে টার্গেট করছে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই দেশটিতে বৃহত্তম বাংলাদেশী সম্প্রদায় বসবাস করছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘এই ভলিউমের ভিসা আবেদন বৃদ্ধি অপ্রত্যাশিত ছিল এবং দূতাবাস খুবই ছোট ছিল এবং এখানে নিয়োজিত মানবসম্পদ আবেদনের এই বৃদ্ধির সাথে মানিয়ে নিতে পারেনি।’

পাসপোর্টের ব্যাকলগ সম্পর্কে আলেসান্দ্রো বলেন, এই মুহূর্তে দূতাবাসে কমপক্ষে ২০ হাজার পাসপোর্ট রয়েছে, আরো অনেক আবেদনকারী অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য বাইরে অপেক্ষা করছেন।
দূতাবাসে ১ লাখেরও বেশি পাসপোর্ট রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ করা একটি সাম্প্রতিক মিডিয়া রিপোর্টের প্রতি তার দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে, রাষ্ট্রদূত দাবিটি নাকচ করে দিয়ে বলেন, ‘অবশ্যই এটি (পাসপোর্টের সংখ্যা) ১ লাখ নয়, আমার কোনো ধারণা নেই কে এই হিসাব দিয়েছে।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, ভিসা প্রসেসিং বিলম্বিত হওয়ার প্রধান কারণ হলো কনস্যুলার বিভাগে প্রতি পাঁচটির মধ্যে অন্তত একটি আবেদনের সাথে একটি সমস্যাযুক্ত এবং অনিয়মিত নথি রয়েছে।

তিনি বলেন, ‘কেন আমরা সময়মতো সমস্ত আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারিনি তা হলো অনেক আবেদনের সাথে কিছু মিথ্যা বা অবৈধ বা জাল নথি ছিল। আমাদের অনুমান পাঁচটি অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে একটি সমস্যাযুক্ত এবং অনিয়মিত নথি সাথে রয়েছে।’

পুরো ব্যাকলগ ক্লিয়ার করতে কত সময় লাগবে জানতে চাইলে রাষ্ট্রদূত বলেন, কবে তারা পুরো ব্যাকলগ ক্লিয়ার করতে পারবে তার জবাব দেয়া কঠিন কারণ এটি নির্ভর করে দূতাবাস প্রতিটি আবেদনে যে সমস্যাগুলো খুঁজে পায় তার উপর।

তিনি বলেন, ইতালিতে বাংলাদেশের জনগোষ্ঠী বৃহত্তর এবং আরো সংহত হয়েছে, তাই পারিবারিক পুনর্মিলন, ব্যবসায়িক পর্যটন বা পারিবারিক ভ্রমণের জন্য অনেক লোককে আকর্ষণ করছে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ওয়ার্ক ভিসা একটি ক্যাটাগরি এবং অন্যান্য ক্যাটাগরির ভিসা রয়েছে- ট্যুরিস্ট ভিসা, বিজনেস ভিসা, স্টাডি ভিসা, ফ্যামিলি ভিসা রয়েছে এবং এসব ক্যাটাগরি ব্যাপক হারে বাড়ছে।

তিনি বলেন, ‘এই সমস্ত কিছু আমাদের দূতাবাসের উপর উল্লেখযোগ্য চাপ সৃষ্টি করছে এবং এটি বিলম্বের ব্যাখ্যা করে, কারণ কাজের ভিসা গুরুত্বপূর্ণ, তবে এই অন্যান্য বিভাগগুলোও গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাদের ভিসা অফিসকে সমস্ত বিভাগের জন্য কাজ করতে হবে। সুতরাং, আমি স্বীকার করি যে- বিলম্ব হয়েছে এবং অবশ্যই, আমরা এই বিলম্বের জন্য জনসাধারণের কাছে ক্ষমাপ্রার্থী।’

সাধারণ পরিস্থিতিতে, ইতালীয় ভিসা ব্যবস্থা পাসপোর্টের সাথে কাজ করে এবং আবেদনকারী ভিএফএস গ্লোবালের মাধ্যমে পাসপোর্ট জমা দেয়। তারপর ভিএফএস গ্লোবাল এই আবেদন এবং পাসপোর্ট দূতাবাসে নিয়ে আসে।

তিনি বলেন, ‘এখন আমরা আর পাসপোর্ট রাখছি না। কাজেই, কাজের ভিসার জন্য আবেদনকারীরা এখন শুধু পাসপোর্টের ফটোকপি রেখে যান। তারা পাসপোর্টটি তাদের সাথে রাখেন যাতে তারা ভ্রমণ করতে পারেন এবং পাসপোর্টটি অন্য উদ্দেশে ব্যবহার করতে পারেন।’

তিনি বলেন, ব্যাকলগ ক্লিয়ার এবং দূতাবাসে এখন যেসব আবেদনকারীর পাসপোর্ট যাচাইকরণ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে তাদের জবাব দিতে দূতাবাস বদ্ধপরিকর।

ব্যাকলগ ক্লিয়ার করার জন্য তিনি ভিসা প্রত্যাশীদের কোনো চাপের সম্মুখীন হচ্ছেন কি না জানতে চাইলে দূত বলেন, ‘চাপ আমাদের জন্য শুধু আমাদের কাজ করার জন্য তাই অন্য ধরনের চাপ এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।’

রাষ্ট্রদূত বলেন, তারা কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে এবং এর একটি হলো নতুন জায়গা অধিগ্রহণ করা যা একটি বড় জায়গা হবে, ভিসা অফিসের জন্য আরো কার্যকরী এবং ভিএফএস গ্লোবালের জন্য একই রকম হবে।

আলেসান্দ্রো বলেছেন, ‘ভিএফএসও একটি নতুন সুবিধা, নতুন ভিসা আবেদন কেন্দ্রে স্থানান্তরিত হয়েছে, আবেদনকারীদের জন্য অনেক বড় এবং আরো কার্যকরী এবং আরামদায়ক হবে।’
দ্বিতীয় পদক্ষেপ হলো তারা সম্প্রতি দুই স্থানীয় কর্মী নিয়োগ করেছে এবং সদর দফতর থেকে কিছু অতিরিক্ত কর্মী যোগ করা হবে।

নিরাপদ অভিবাসন ইস্যু প্রসঙ্গে রাষ্ট্রদূত বলেন, ইতালিতে স্থানান্তর আয়োজনের জন্য মধ্যস্বত্বভোগীদের উচ্চ পরিমাণ অর্থ প্রদানের একটি প্রথা রয়েছে যা ইতালি এবং বাংলাদেশে উভয় ক্ষেত্রেই একটি বেআইনি প্রথা।

তিনি বলেন, অনেক ক্ষেত্রে, অভিবাসী এই অর্থ প্রদান করে তবে তিনি কোথায় যাচ্ছেন এবং কোন কোম্পানির জন্য কী ধরনের কাজ করতে যাচ্ছেন তাও জানেন না।

রাষ্ট্রদূত বলেন, আবেদনকারীদের সতর্ক হওয়া উচিত যখন তারা তাদের অভিবাসন সংগঠিত করার জন্য তাদের অর্থ কাউকে অর্পণ করে এবং তাদের কেবল সরকারি সংস্থার কাছে উল্লেখ করা উচিত এবং মধ্যস্বত্বভোগী এবং দালালদের এই বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদান করা উচিত নয়।

তিনি উল্লেখ করেন, ‘ভিসা প্রক্রিয়াকরণের জন্য আমাদের অফিসিয়াল এজেন্সি হলো ভিএফএস গ্লোবাল। তারাই ভিসা আবেদনের জন্য নথি সংগ্রহের জন্য অনুমোদিত।’

তিনি বলেন, কাজের জন্য অভিবাসীদের ইতালিতে প্রবেশের চারটি ধাপ- একটি কোম্পানির স্পন্সরশিপ, ইতালীয় সরকারের ওয়ার্কিং পারমিট, ইতালীয় দূতাবাসের ভিসা এবং সীমান্তে অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে দেশে প্রবেশের অনুমতি।

তিনি বলেন, ‘আসলে, তাদের অনেককের (ওয়ার্ক ভিসাপ্রার্থী) আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে কারণ স্পনসরশিপ জাল বা ওয়ার্কিং পারমিট জাল।’

সূত্রঃ বাসস

এম.কে
০৮ জুন ২০২৪

আরো পড়ুন

বিদেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো শাহ আবদুল করিম স্মরণ উৎসব

অনলাইন ডেস্ক

মানবপাচারের দায়ে বাংলাদেশির ১০ বছরের জেল

ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ডের মালিক দিলীপ আগারওয়াল আটক