বিশ্বের সেরা ধনী বা চলচ্চিত্র তারকাদের জন্য গোটা একটি দ্বীপ কেনা খুব নিয়মিত ঘটনা হলেও, সাধারণ মানুষের পক্ষে একা একটি দ্বীপ কেনা দুঃসাধ্য স্বপ্ন। তাই ‘লেটস বাই অ্যান আইল্যান্ড’ (আসুন, একটা দ্বীপ কেনা যাক) প্রকল্পের মাধ্যমে অনেককে নিয়ে একটি দ্বীপ কেনার উদ্যোগ নেন মার্শাল মেয়ার। আর এভাবে সাধারণ মানুষেরা মিলে সত্যিই একটি দ্বীপের মালিক হয়ে ওঠে!
ট্রেনের কন্ডাক্টর থেকে শুরু করে সিইও, বিশ্বের ২৫টি ভিন্ন দেশ থেকে মানুষ বিনিয়োগ করেছে এই দ্বীপে। ‘কফি কায়ে’ নামের এই দ্বীপের অবস্থান ক্যারিবীয় রাষ্ট্র বেলিজের উপকূলের অদূরে।
মজার ব্যাপার হচ্ছে, দ্বীপের আয়তন নিতান্ত কম হলেও (১.২ একর) এই প্রকল্পের পেছনে রয়েছে উদ্যোক্তাদের এক বিরাট স্বপ্ন। তাঁরা চাইছেন, দ্বীপটিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গড়ে তুলতে। অদ্ভুত এই প্রকল্পটি শুরু হয় ২০১৮ সালে। ‘ক্রাউডফান্ডিং’, অর্থাৎ জনগণের কাছ থেকে তহবিল সংগ্রহের পদ্ধতিতে অর্থ তোলা হতে থাকে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বর নাগাদ উদ্যোক্তারা ‘কফি কায়ে’ নামের এই দ্বীপ কিনে ফেলেন।
দ্বীপে নতুন দেশ গঠন করার লক্ষ্যে জাতীয় পতাকা ও সংগীতও প্রবর্তন করা রয়েছে। এমনকি বিনিয়োগকারীদের মধ্য থেকে গঠন করা হয়েছে একটি সরকারও। সম্প্রতি তারা দ্বীপটি সফরে যান। উদ্যোক্তারা নিজেরা দ্বীপটিকে স্বাধীন বললেও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এখনো কোন স্বীকৃতি দেয়নি দেশ হিসাবে।
গণ-অর্থায়নের মাধ্যমে দ্বীপ কেনার ধারণা প্রথম দেন গ্যারেথ জনসন, ১৫ বছর আগে। তিনি লেটস বাই অ্যান আইল্যান্ড ডট কম (letsbuyanisland.com) ডোমেইন কিনে দ্বীপ খোঁজার কাজ শুরু করেন।
কফি কায়ে ইতোমধ্যেই একটি অদ্ভুত ভ্রমণপ্রেমী সম্প্রদায় তৈরি করতে সমর্থ হয়েছে। জাতি গঠনেরও চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এখানে জাতিসত্তাকে অনেকে আবার বেশ গুরুত্বের সাথে নেন। যেমন জনসন আত্মবিশ্বাসের সাথে বলেছেন, “সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী না থাকলেও আমরা অন্য যেকোনো জাতির মতোই।”
মেয়ার যদিও একে একটি ‘মার্কেটিং টুল’ হিসেবে দেখেন। তিনি বলেন, দ্বীপে তাদের নিজস্ব আইন-কানুন প্রয়োগ করার সুযোগ থাকলেও (যেমন, প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ) কফি কায়ে এখনও বেলিজের সীমানার মধ্যেই পড়ে।
১৮ মার্চ ২০২২
এনএইচ