বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পারিবারিক ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহাসিক বাড়ি ঘোষণা দিয়ে হামলা চালিয়ে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, দেশব্যাপী তার আত্মীয় এবং দলীয় নেতাকর্মীদের ঘরবাড়িও হামলার শিকার হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দিনতারিখ ও অবস্থান জানিয়ে হামলা চালালেও ধ্বংসযজ্ঞ থামাতে ব্যর্থ হয়েছে দেশটির অন্তবর্তীকালীন সরকার। ৫ ফেব্রুয়ারির ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় দেওয়া এক বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বিষয় সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এ কথা বলেছে।
এতে বলা হয়েছে, গত আগস্টে শেখ হাসিনার প্রায় ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। তার সরকারের বিরুদ্ধে জনমত দমন, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও গুমের মতো অপরাধের অভিযোগ ছিল। সরকারি চাকরিতে কোটার ইস্যুতে শুরু হওয়া ছাত্র আন্দোলন কঠোর হাতে দমন করতে গিয়ে প্রায় আট শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে বিভিন্ন সূত্রে উঠে এসেছে। পরিস্থিতি এতোটাই নাগালের বাইরে চলে যায় যে, তৎকালীন সরকারপ্রধান দেশ ছেড়ে ভারতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ বলছে, বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। একই আবর্তে তাদের আবার জড়িয়ে পড়াটা মোটেও বুদ্ধিমানের কাজ হবে না।
এদিকে, বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সংস্কারের কাজ শুরু করেছেন ড. মুহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় রয়েছে, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও দুর্নীতি প্রতিরোধে দায়বদ্ধতা নিশ্চিতের পাশাপাশি স্বচ্ছ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কাজ করা। তবে, অন্যান্য রাজনৈতিক দল, শিক্ষার্থী এবং জুলাই-আগস্টে ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের মধ্যে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে অস্থিরতা বাড়ছে। তাদের বিরুদ্ধে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থতার অভিযোগ থাকলেও এগুলোকে মিথ্যা প্রচারণা বলে দাবি করছে সরকার। তবে হিন্দু সম্প্রদায়সহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিয়ে আশ্বস্ত করতে তারা সফল হয়েছে, সেটাও জোর দিয়ে বলা যাচ্ছে না।
বিবৃতিতে বলা হয়, সামনের মার্চে জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের একটি বৈঠক আয়োজিত হতে যাচ্ছে। বাংলাদেশে সার্বিক পরিস্থিতি উন্নতির জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত জাতিসংঘের বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে তদন্ত ও পর্যবেক্ষণ আহ্বান করতে একটি সম্মিলিত প্রস্তাব উপস্থাপন করা।
এম.কে
০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫