বিদেশিদের জন্য ইটালির কঠোর নাগরিকত্ব আইনকে সহজ করার বিষয়ে গণভোটের লক্ষ্যে যথেষ্ট পরিমাণ সই সংগ্রহ করেছে অভিবাসী সমর্থক গোষ্ঠী এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো৷ ২৪ আগস্ট সরকারি এক নথিতে এ তথ্য জানা গেছে৷
নাগরিকত্ব অর্জনে ইটালিতে বসবাসের সময়সীমা ১০ বছর থেকে কমিয়ে পাঁচ বছর এবং তাদের সন্তানদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেয়ার দাবি জানিয়েছে আয়োজকেরা৷ এই উদ্যোগের সঙ্গে আছে দাতব্য সংস্থা অক্সফাম ইটালিয়া ও অ্যাকশন এইড এবং প্লাস ইউরোপা পার্টি এবং ইটালিয়ান সোশ্যালিস্ট পার্টি৷
বিচার মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে পরিচালিত একটি অনলাইন রেজিস্টারে দেখা গেছে, পার্লামেন্টকে এড়িয়ে গিয়ে গণভোটকে উসকে দিতে আয়োজকেরা নিজেদের দাবির পক্ষে পাঁচ লাখ সই সংগ্রহ করেছে৷ ১৯৯২ সালে করা ইটালির নাগরিকত্ব আইনটি সংশোধন করার প্রচেষ্টা বারবার রাজনৈতিক জটিলতার কারণে আটকে ছিল৷ এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেই বাধা দূর হবে বলে আশা করা হচ্ছে৷
গণভোটের অনুরোধটি এখন ইটালির সুপ্রিম কোর্ট এবং সাংবিধানিক আদালত পর্যালোচনা করে দেখবে৷ এই বাধাগুলো অতিক্রম করা গেলে ২০২৫ সালে দেশজুড়ে গণভোট হতে পারে৷
গণভোটের মাধ্যমে নাগরিকত্ব আইনটি পাস হলে অন্তত ২৫ লাখ বিদেশির ইটালির নাগরিকত্ব অর্জনের পথ সুগম হবে৷
নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর বিষয়ে সবসময় বাধা দিয়ে এসেছে দেশটির ক্ষমতাসীন ডানপন্থি ব্রাদার্স অব ইটালি এবং লীগ পার্টি৷ তবে জোট সরকারের আরেক অংশীদার ফোরজা ইটালিয়া অপ্রত্যাশিতভাবে এই গ্রীষ্মে ইঙ্গিত দিয়েছে, তারা পরিবর্তনের পক্ষে৷
প্যারিস অলিম্পিকে ইটালির বহুজাতিক ক্রীড়াবিদদের সাফল্য পুরান এই বিতর্ককে আবারও প্রাণ দিয়েছে৷ কারণ, নাগরিকত্ব আইনের কারণে বিদেশিদের শিশুদের পক্ষেও ইটালীয় পাসপোর্ট পাওয়া প্রায় অসম্ভব৷
ইউরোপীয় কমিশন বলছে, ইউরোপের মধ্যে ইটালির নাগরিকত্ব আইন সবচেয়ে কঠোর৷ অথচ ফ্রান্স, জার্মানি এবং বেলজিয়ামের মতো দেশগুলো মাত্র পাঁচ বছর বসবাস করা বিদেশিকে নাগরিকত্ব দেয়৷
ইটালিতে বিদেশিদের পাসপোর্ট পেতে অন্তত ১০ বছরেরও বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়৷ ইউরোপীয় কমিশন আরো জানিয়েছে, দেশটির আমলাতন্ত্রের কারণে একজন বিদেশি নাগরিকত্ব আবেদনের পরও সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় থাকতে হয় দুই থেকে তিন বছর৷
ইটালির জন্মহার তীব্রভাবে কমে যাওয়ার পর অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে যুক্তি দিয়ে আসছেন যে দেশটির রক্তশূন্য অর্থনীতিকে চাঙা করার জন্য আরও বেশি বিদেশিকে আকৃষ্ট করতে হবে৷ কিন্তু প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনি জানিয়েছেন, অভিবাসন জনসংখ্যাগত সংকটের সমাধান নয়৷
এখন সাধারণ ইটালীয় নাগরিকেরা যাতে গণভোটের উদ্যোগকে সমর্থন দেয় এবং ভোটে অংশ নেয় সেজন্য আয়োজকদের ব্যাপক প্রচারে নামতে হতে পারে৷
সূত্রঃ রয়টার্স
এম.কে
২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪