16.7 C
London
October 7, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

নেক্সট টিভি ও লাইভ টিভির লাইসেন্স বিতর্কঃ এনসিপি নেতা ও ঘনিষ্ঠের নামে অনুমোদন

অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রতি দুইটি নতুন বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশনের — নেক্সট টিভি ও লাইভ টিভি — লাইসেন্স অনুমোদন করেছে, যা সামাজিক ও রাজনৈতিক মহলে তীব্র বিতর্কের সূত্রপাত করেছে। অনুমোদনপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের পরিচয় ও লাইসেন্স প্রদানের প্রক্রিয়া নিয়ে বিরূপ প্রশ্ন উঠেছে এবং মন্ত্রণালয় থেকে এখনও সন্তোষজনক ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি।

নেক্সট টিভির লাইসেন্স পেয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়ক মো. আরিফুর রহমান তুহিন। তুহিন ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য হিসেবে যোগ দেন এবং পরে এনসিপির যুগ্ম মুখ্য সমন্বয়কের দায়িত্ব পান; এর আগে তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

লাইভ টিভির লাইসেন্স পেয়েছেন নামেই আরেকজন আরিফুর রহমান, যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইআর) থেকেই কয়েক বছর আগে পড়াশোনা শেষ করেছেন। ছাত্রজীবনে তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক ছিলেন এবং চিহ্নিতভাবে জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন; তবে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে এনসিপিতে যোগ দেননি। এ কারণে দুই জনের পরিচয় একে অপরের সঙ্গে মিলেমিশে ভুল বোঝাবুঝির সুযোগ সৃষ্টি করেছে—তাহলেই বোঝা যাবে এখানে একজন মো. আরিফুর রহমান তুহিন (এনসিপি নেতা) এবং অন্যজন আরিফুর রহমান (আইইআর প্রাক্তন ছাত্র ও এনসিপি ঘনিষ্ঠ)।

অর্থনৈতিক সক্ষমতা ও মিডিয়া পরিচালনার অভিজ্ঞতা নিয়ে প্রশ্ন লেগে আছে; স্থানীয় মিডিয়া ও বিশ্লেষকরা বলছিলেন যে, একটি স্যাটেলাইট চ্যানেল চালানোর পুরুতর বিনিয়োগ ও পেশাদারি ব্যবস্থাপনা প্রয়োজন। তুহিন ও আরিফুর রহমানের কাছে সেসব ক্ষমতা আছে কি না তা সম্পর্কে এখন পর্যন্ত স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি।

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় থেকে প্রক্রিয়া ও মানদণ্ডের ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল; মন্ত্রলয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের মন্তব্য পাওয়া যায়নি এবং মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তাকে লিখিতভাবে পাঠানো প্রশ্নেরও জবাব মেলেনি। এ কারণে লাইসেন্স প্রদানের স্বচ্ছতা নিয়ে সন্দেহ আরো প্রবল হয়েছে।

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, লাইসেন্স বিতরণে রাজনৈতিক ঘনিষ্ঠতার ছাপ থাকলে তা মিডিয়ার স্বাধীনতা ও জনগণের তথ্যাধিকারকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। তারা মন্ত্রণালয়কে লাইসেন্স প্রদানের নীতিমালা ও আবেদন-নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রকাশ করার আহ্বান জানাচ্ছেন।

মিডিয়া বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন—সরকার যদি টেলিভিশন লাইসেন্স প্রদানে স্বচ্ছতা নিশ্চিত না করে, তাহলে শুধু এক বা দুটি চ্যানেল নয়, সমগ্র মিডিয়া পরিবেশে আস্থা কমে যাবে এবং ভবিষ্যতে অনিয়ম ও পক্ষপাতের অভিযোগ বাড়বে।

জরুরি ভাবেই মন্ত্রণালয়কে আবেদনমূলক নথি, আর্থিক সক্ষমতার মূল্যায়ন ও লাইসেন্স ছাড়ার মাপকাঠি জনগণের কাছে প্রকাশ করতে হবে—তাহলেই বিষয়টি নিয়ে অবসাদ কাটবে এবং ভবিষ্যতে অনুরূপ বিভ্রান্তি কমে আসবে।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া

এম.কে
০৭ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

তিস্তায় সব পানি আটকাতে ভারতের নতুন পদক্ষেপ

ড. ইউনূসকে অভিনন্দন জানালেন মমতা

সাবেক এমপি মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন গ্রেপ্তার