9.6 C
London
October 12, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

নেদারল্যান্ডসের অর্থায়নে সিলেটের ছয় পর্যটন এলাকায় মাস্টারপ্ল্যান আসছে

সিলেটের পর্যটন শিল্পকে আধুনিক ও পরিবেশবান্ধব রূপ দিতে ছয়টি প্রধান পর্যটন স্পটকে ঘিরে বড় পরিসরের মাস্টারপ্ল্যান হাতে নিয়েছে সরকার। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা, স্থানীয়দের কর্মসংস্থান বৃদ্ধি এবং পর্যটকদের জন্য উন্নত সুবিধা নিশ্চিত করাই এ পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। এ প্রকল্পে অর্থায়ন করতে পারে নেদারল্যান্ডস সরকার, যা সিলেটের পর্যটন খাতে নতুন সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে।

সবুজ প্রকৃতি ও পাহাড়-নদী-বনের অপার সৌন্দর্যে ঘেরা সিলেটের আনাচেকানাচে ছড়িয়ে আছে অসংখ্য পর্যটন স্পট। প্রতিদিনই হাজারও ভ্রমণপ্রেমী ছুটে আসেন এসব এলাকায়। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সাদাপাথরসহ কয়েকটি এলাকায় নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন ওঠে, যা সরকারকে নতুন পরিকল্পনা নিতে উদ্বুদ্ধ করেছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, বিছানাকান্দি, সাদাপাথর, জাফলং, উৎমাছড়া, লালাখাল ও রাতারগুল—এই ছয়টি পর্যটন স্পট ও তাদের আশপাশের পরিবেশ সংরক্ষণে একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন করা হচ্ছে।

সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. সারওয়ার আলম বলেন, “বিছানাকান্দি, রাতারগুলসহ এখানে আমাদের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্পট আছে। সেগুলোকে কীভাবে আরও টেকসই ইকো-ট্যুরিজম স্পটে পরিণত করা যায়, তার পরিকল্পনা চলছে। আমরা আশা করছি, নেদারল্যান্ডস সরকার এই প্রকল্পে অর্থায়ন করবে।”

সিলেটের পর্যটন ব্যবসায়ীরা সরকারের এ পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন, তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা যেন না হয় সে বিষয়ে সতর্ক করেছেন তারা। সিলেট হোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স গ্রুপের সাবেক সভাপতি সুমাত নূরী চৌধুরী জুয়েল বলেন, “আগেও সাদাপাথর নিয়ে মাস্টারপ্ল্যান হয়েছিল, কিছু কাজ শুরু হয়েছিল, কিন্তু দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। এবার পরিকল্পনাটি দ্রুত সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন করতে হবে।”

ইতিমধ্যে মাস্টারপ্ল্যানের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের অংশ হিসেবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, পরিবেশবিদ ও স্থপতিদের নিয়ে গঠিত ১৩ সদস্যের কমিটি সাদাপাথর এলাকা পরিদর্শন করেছে। কমিটির সদস্যরা জানান, পরিকল্পনার লক্ষ্য হলো আধুনিক, নিরাপদ এবং পরিবেশসম্মত পর্যটন সুবিধা তৈরি করা।

পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মো. আলী রেজা খান বলেন, “টুরিস্টদের প্রবেশের জন্য একটি বড় গেট থাকতে হবে, সেখানেই নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা থাকবে। প্লাস্টিকবিরোধী নীতি কার্যকর করতে হবে, চাইলে সরকার এখান থেকে সামান্য আয়ের ব্যবস্থাও রাখতে পারে।”

বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ এম আহমেদ বলেন, “সিলেটের জন্য বহুদিনের স্বপ্ন ছিল একটি পূর্ণাঙ্গ মাস্টারপ্ল্যান—যাতে প্রতিটি খাল, ঝরনা ও পাহাড়ি এলাকা পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে এবং পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন হয়।”

মাস্টারপ্ল্যান সমন্বয় কমিটির সভাপতি ড. বজলুর রশিদ বলেন, “সিলেটকে আমরা পর্যটন হাব হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। এর লক্ষ্য হলো সবার জন্য সহজগম্য, পরিবেশবান্ধব এবং বিশ্বমানের পর্যটন সুবিধা নিশ্চিত করা।”

পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়িত হলে শুধু পর্যটন নয়, সিলেট অঞ্চলের সামগ্রিক অর্থনীতিতেও ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে। এটি স্থানীয়দের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে এবং দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যটকদের কাছে সিলেটকে আরও আকর্ষণীয় গন্তব্যে পরিণত করবে।

সূত্রঃ এখন টিভি

এম.কে
১২ অক্টোবর ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাষ্ট্রে ৭.২ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বড় সিদ্ধান্তঃ গরুর চামড়া রপ্তানির অনুমোদন

সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী গ্রেফতার