বিশ্ব অর্থনীতি একটি শীতল যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে যা সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর আবারও বর্তমান সময়ে আবির্ভূত হয়েছে বলে মনে করেন একজন সিনিয়র আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কর্মকর্তা।
আইএমএফের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক গীতা গোপিনাথ বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনকে কেন্দ্র করে বিশ্ব অর্থনীতির বিভাজন ত্বরান্বিত হচ্ছে। যার ফলে আঞ্চলিক শক্তিসমূহ বিশ্বব্যাপী ট্রিলিয়ন ডলার মুছে ফেলার ঝুঁকির দিকে এগুচ্ছে।
পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী দেশগুলির মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশ্বটি একটি টার্নিং পয়েন্টের দিকে মোড় নিচ্ছে। গীতা গোপিনাথ বিভিন্ন দেশেকে অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেন আক্রমণ করার পর থেকে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের মন্দাভাব ত্বরান্বিত হয়। চীন এবং রাশিয়ার সাথে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলির উত্তেজনা বিরাজ করছে। যার ফলে পৃথিবী নিজেকে একটি শীতল যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে খুঁজে পেতে পারে।
উল্লেখ্য যে, ২০০৮ সালের আর্থিক সঙ্কটের পর থেকে বিশ্ব বানিজ্য ঘাটতির দিকে ধাবিত হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবাহ আন্তর্জাতিক পরাশক্তিদের সম্পর্কের কারণে আবার হোঁচট খেয়েছে।
গীতা গোপীনাথ বলেন, ডলারের তুলনায় উদীয়মান বাজারগুলোর মুদ্রার অবমূল্যায়নে মূল্যস্ফীতি হয়েছে। এই মুহূর্তে এটি তাদের আর্থিক নীতিকে অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং করে তুলছে। এমন অনেক দেশ রয়েছে যারা ডলারে ঋণ নিয়েছে। এটি তাদের দেনা শোধ করাকে আরও কঠিন করে দিয়েছে।
কোভিড-১৯ মহামারি চলাকালে নিম্নআয়ের দেশগুলোর ঋণ পরিশোধ স্থগিত অথবা পুনর্গঠনের জন্য ‘কমন ফ্রেমওয়ার্ক’ নামে একটি কর্মসূচি চালু করে গ্রুপ অব টুয়েন্টি বা জি২০। এতে অন্তর্ভুক্ত ছিল বেশিরভাগ ধনী ঋণদাতা দেশ। কিন্তু সেই কর্মসূচির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত ডিসেম্বরে। এরপরে বৈশ্বিক ঋণের পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এই সংকট কাটানোর বিষয়ে আইএমএফ উপ-প্রধান বলেন, খুব দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন এবং ফ্রেমওয়ার্কের পরিধি মধ্যম আয়ের দেশগুলোতেও প্রসারিত করতে হবে।
এম.কে
১২ ডিসেম্বর ২০২৩