25.1 C
London
July 12, 2025
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

পশ্চিম লন্ডনের পাঁচ তারকা হোটেলের সামনে ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত

পশ্চিম লন্ডনের অভিজাত নাইটসব্রিজ এলাকায় আবারও রক্তাক্ত হামলায় কেঁপে উঠল শহর। বিলাসবহুল পাঁচ তারকা হোটেল ‘পার্ক টাওয়ার’-এর সামনে ছুরিকাঘাতে নিহত হয়েছেন ২৪ বছর বয়সী এক যুবক। ধারণা করা হচ্ছে, একটি দামী ঘড়ি ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করেই এই নির্মম হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে বুধবার রাত ৮টা ৩০ মিনিটের কিছু আগে, লন্ডনের সবচেয়ে ধনী ও নিরাপদ বিবেচিত এলাকায়। নাইটসব্রিজের সেভিল স্ট্রিটে অবস্থিত পার্ক টাওয়ার হোটেলের সামনে ছুরিকাঘাতের শিকার হন ওই যুবক। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, প্যারামেডিক ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্সের দ্রুত সাড়া সত্ত্বেও ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

মর্মান্তিক এই ঘটনার পরও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা, অপরাধীরা দামী ব্র্যান্ডের ঘড়ি ছিনিয়ে নিতে গিয়ে ছুরিকাঘাত করে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সাম্প্রতিক সময়ে নাইটসব্রিজ, চেলসি ও কেন্সিংটনের মতো অভিজাত এলাকায় হাই-এন্ড ডাকাতি, গাড়ি ছিনতাই ও ছুরিকাঘাতের ঘটনা ভয়াবহভাবে বেড়েছে।

ঘটনাস্থল সেভিল স্ট্রিট, যেখানে রয়েছে হ্যারডস, হাইড পার্ক, ও বিখ্যাত ফ্যাশন হাউজগুলো, ধনী শেতাঙ্গ ব্রিটিশদের বসবাসের অন্যতম কেন্দ্র। এখানকার রাস্তায় সাধারণত দামি গাড়ি, ডিজাইনার পোশাকধারী মানুষ আর পর্যটকদের ভিড় দেখা যায়। এই এলাকায় এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ড শুধু বিস্ময়করই নয়, বরং রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বড় প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

লন্ডনের ক্রাইম ম্যাপিং ও পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, ছুরিকাঘাতজনিত হত্যাকাণ্ডে গত এক দশকে বৃদ্ধি পেয়েছে। এক সময় ছুরিকাঘাতকে গ্যাংসংক্রান্ত অপরাধ বলেই ধরা হতো, এখন তা ছড়িয়ে পড়েছে শহরের অভিজাত এলাকাতেও। ২০২৪ সালে রেকর্ডসংখ্যক ছুরি-সংক্রান্ত অপরাধ রেকর্ড করা হয়েছে, যার অনেকগুলোতেই মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, এসব হামলা শুধু অর্থ লুটের জন্য নয়, বরং অপরাধীদের সাহস এখন এতটাই বেড়ে গেছে যে তারা প্রকাশ্য দিবালোকে ক্যামেরার সামনে ও পুলিশ টহল থাকা সত্ত্বেও ভয় পাচ্ছে না।

সরকার বারবার কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার কথা বললেও বাস্তবে কোনো দৃশ্যমান উন্নতি হয়নি। ছুরি নিষিদ্ধকরণ আইনের প্রয়োগ, পুলিশ নিয়োগ বৃদ্ধি এবং অপরাধীদের দ্রুত বিচারের দাবি জোরালোভাবে উঠছে।

ঘড়ি ছিনতাইয়ের মতো ব্যক্তিগত সম্পদ লক্ষ্য করে হওয়া সহিংস অপরাধ শুধু ব্যক্তি নয়, গোটা সমাজের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। ধনী ও গরিব – সবাই সমানভাবে আজ অপরাধের শিকার হতে পারেন।

এই ঘটনার তদন্তে পুলিশের স্পেশাল ক্রাইম ইউনিট কাজ করছে, তবে সন্দেহভাজনরা এখনো অধরা। লন্ডনের মতো একটি বিশ্বনগরীতে, যেখানে পর্যটন ও বিনিয়োগ প্রধান চালিকা শক্তি, সেখানে এই ধরনের নৃশংস ঘটনা শুধু আইনশৃঙ্খলার ব্যর্থতা নয়—একটি সামাজিক সংকেতও বটে।

সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া

এম.কে
১২ জুলাই ২০২৫

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যে আশ্রয় আবেদনের সিদ্ধান্ত দ্রুত নিতে গিয়ে রিফিউজ করছে হোমঅফিস

জো বাইডেন ভালো ফর্মে আছেন, বিবিসিকে স্টারমার

নিষেধাজ্ঞার অংশ হিসেবে চেলসির মালিকানা কেড়ে নেওয়ার আহ্বান

অনলাইন ডেস্ক