পাকিস্তানে ৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ২৬৬ আসনের মধ্যে ২৬৫ আসনে ভোট হয়। ফলাফলে দেখা যায়, সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বোচ্চ ৯৬টি আসন পেয়েছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭৫টি আসন পেয়েছে নওয়াজ শরিফের পিএমএল-এন। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ ৫৪টি আসন পেয়েছে বিলাওয়াল ভু্ট্টোর পিপিপি।
তবে ইমরান খানের দল সর্বোচ্চ আসন পেলেও তাদের সরকার গঠনের সম্ভাবনা নেই। কারণ, নওয়াজের পিএমএল-এন এবং বিলাওয়াল ভু্ট্টোর পিপিপি জোট সরকার গঠনের চেষ্টা চালাচ্ছে। জোর গুঞ্জন রয়েছে আমেরিকার হস্তক্ষেপেই এই সরকার গঠনের তোড়জোড় চলছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইমরান রাশিয়া-চায়না লবিতে যাওয়াতেই সরকার টিকাতে পারেন নাই। এছাড়া বর্তমান নির্বাচনে আমেরিকার ইশারাতেই ইমরানকে নানা ধরনের বাঁধার মুখে পড়তে হয়।
পর্দার আড়ালে থেকে আমেরিকার ইশারার অংশ হিসেবে গতকাল রোববার ১১ ফেব্রুয়ারি রাতে পিএমএল-এন ও পিপিপি দুই দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে এক যৌথ বিবৃতিতে জানানো হয়, ‘পাকিস্তানকে বাঁচাতে’ দুই দলই সম্মত হয়েছে।
এরই মধ্যে পাক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, পিপিপি এবং পিএমএল-এনের নেতারা সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ক্ষমতা ভাগাভাগির কথা ভাবছেন। এর অংশ হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী, আগামী পাঁচ বছরের জন্য তারা সরকার গঠন করবেন। এই পাঁচ বছরের মধ্যে আড়াই বছর পিএমএল-এন এবং আড়াই বছর পিপিপির নেতা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। ফলে বিলাওয়াল ও নওয়াজ আড়াই বছর করে প্রধানমন্ত্রী হবেন বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। তবে কে আগে প্রধানমন্ত্রী হবেন, তা এখনো জানা যায়নি।
এবারের নির্বাচনের আগে ধারণা করা হয়েছিল, নওয়াজ শরিফের দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করবে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হবেন। সেই চিন্তা থেকে চার বছর পর তাকে পাকিস্তানে ফিরিয়ে আনে সেনাবাহিনী। যাতে প্রচ্ছন্ন ইশারা ছিল সেনাবাহিনীর বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
যখন নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হওয়া শুরু করে—তখন নওয়াজ শরিফ জানান, তারা জোট গঠন করে সরকার গঠন করবেন। এরই অংশ হিসেবে পিপিপির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তারা। তবে পিপিপির কাছ থেকে শর্ত দেওয়া হয়, জোট গঠন করে ক্ষমতায় আসতে চাইলে বিলাওয়াল ভুট্টোকে প্রধানমন্ত্রী বানাতে হবে। কিন্তু নওয়াজের দল এই শর্ত মেনে নেয়নি। পিপিপিকে যখন বশে আনা যাচ্ছে না, তখন ক্ষমতা ভাগাভাগি করে নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে দুই দল।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ জানিয়েছে, ২০১৩ সালে বেলুচিস্তানে প্রাদেশিক সরকার গঠনের ক্ষেত্রে ন্যাশনাল পার্টির (এনপি) সঙ্গে একইভাবে ক্ষমতা ভাগাভাগি করেছিল পিএমএল-এন। সেবার আড়াই বছর করে মুখ্যমন্ত্রী পদটি ভাগ করে নিয়েছিল দুই দল।
প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়াও পিপিপি এবং পিএমএল-এন অন্য বিষয় নিয়ে বিশদ আলোচনা করেছে বলে জানা গেছে।
সূত্রঃ জিও নিউজ
এম.কে
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫