1.4 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

প্রথমবারের মতো এস আলম গ্রুপের বন্ধকি সম্পত্তি নিলামে

এস আলম গ্রুপের কাছ থেকে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য গ্রুপটির অন্যতম সহযোগী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের জামানত সম্পত্তি নিলাম করার ঘোষণা দিয়েছে জনতা ব্যাংক।

গত ১৫ বছরে এস আলম গ্রুপের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগের মধ্যে প্রথমবারের মতো গ্রুপটির একটি কোম্পানির বন্ধক রাখা সম্পদ নিলামে ওঠানোর পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

জনতা ব্যাংক ১ নভেম্বর পত্রিকায় নিলাম সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে আগামী ২০ নভেম্বরকে নিলামের তারিখ ঘোষণা করেছে।

ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ তথ্য অনুযায়ী, এ ঋণের বিপরীতে বন্ধক রাখা হয়েছে চট্টগ্রাম ও গাজীপুরে এস আলম গ্রুপের ১৮৬০ শতাংশ জমি, যার বাজারমূল্য সর্বোচ্চ ৩৫৮ কোটি টাকা। এ দাম পাওনা টাকার চেয়ে প্রায় পাঁচ গুণ কম।

জনতা ব্যাংক জানিয়েছে, এ সম্পত্তি বিক্রি করে খেলাপি ঋণ পুরোপুরি আদায় করা সম্ভব নয়। বকেয়া বাকি টাকা আদায়ে আরও আইনি পদক্ষেপের প্রয়োজন হতে পারে। অর্থঋণ আদালত আইনের ১২(৩) ধারা অনুযায়ী ব্যাংক মামলা করার আগেই জামানতের সম্পত্তি বিক্রি করে টাকা আদায় সম্ভব।

বাংলাদেশের কম্পট্রোলার এন্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর ২০২১ সালের এক নিরীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশিকা না মেনে ঋণসীমা অতিক্রম করে অতিরিক্ত ঋণ নিয়েছে।

এস আলম গ্রুপের ওয়েবসাইট অনুসারে, ২০১২ সালে প্রতিষ্ঠিত গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন শিল্প কাঁচামাল, বাণিজ্যিক পণ্য এবং নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসায় জড়িত ছিল।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১২ সালে সাধারণ বীমা ভবনে অবস্থিত জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম কর্পোরেট শাখা থেকে গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন প্রাথমিকভাবে ৬৫০ কোটি টাকা ঋণ নেয়।

এ ঋণ ২০২১ সাল পর্যন্ত সুদে আসলে মোট এক হাজার ৭০ কোটি ৬৫ লাখ টাকায় পৌঁছায়। এর মধ্যে ৬১৭.৪৭ কোটি টাকা পিএডি (পেমেন্ট এগেইনস্ট ডকুমেন্ট), ২২৩.১৮ কোটি টাকা এলটিআর (ট্রাস্ট রিসিপ্ট) ঋণ এবং ২২৯.৯৯ কোটি টাকা সিসি হাইপো ঋণ।

সুদাসল মিলিয়ে ঋণের পরিমাণ ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বরে এক হাজার ৮৫০ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে।

জনতা ব্যাংকের চট্টগ্রাম কর্পোরেট শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) বাদল কান্তি দাস ব্যাংকের বন্ধক রাখা জমি নিলামের সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ব্যাংক অনুপ্রবেশকারী ঠেকাতে এবং আসন্ন নিলাম সম্পর্কে জানাতে জমিগুলোতে ব্যাংকের সাইনবোর্ড লাগিয়েছে। নিলামের নির্ধারিত দিনে কোনো বিডার না পাওয়া গেলে জনতা ব্যাংক এ সম্পত্তি ব্যাংকের দখলে নিতে আদালতের দ্বারস্থ হবে।

তিনি বলেন, বকেয়া ঋণের মোট টাকা ওঠাতে ব্যাংক গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন এবং এস আলম গ্রুপের অন্যান্য সম্পত্তি থেকে পাওনা আদায়ের জন্য অতিরিক্ত আইনি পদক্ষেপ নিতে পারে।

এ বিষয়ে এস আলম গ্রুপের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের বলেন, এ বিষয়ে কিছু জানা নেই। তিনি মুবিন নামক গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশনের এক কর্মকর্তার ফোন নম্বর দিয়ে কথা বলার পরামর্শ দেন, তবে ওই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।

এস আলম গ্রুপের সাধারণ ব্যবস্থাপক (জিএম) দেলোয়ার হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, বিষয়টি তার কাজের ক্ষেত্রের বাইরে।

এস আলম গ্রুপের গ্লোবাল ট্রেডিং কর্পোরেশন লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক হলেন মোহাম্মদ সাইফুল আলম মাসুদ (এস আলম)। চট্টগ্রামভিত্তিক এ প্রতিষ্ঠানটি পাওয়ার ও গ্যাস নিয়ে ট্রেডিং কার্যক্রম পরিচালনা করে। এস আলম ও তার পরিবারের ওপর ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। তবে তারা দেশের বাইরে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্রঃ দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড

এম.কে
০৪ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

ডিজিএফআই, এমআইএসটি, আনসার ও ভিডিপির শীর্ষ পদে রদবদল

বিদেশফেরত ৮৩ বাংলাদেশি গ্রেফতার

অনলাইন ডেস্ক

কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতায় আন্তর্জাতিক চাপে সরকার