বেকারদের বীমার নিবন্ধনের সময়সীমা বৃদ্ধি করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটিতে থাকা চাকরি হারানোদের বাধ্যতামূলক বেকারত্ব বীমা নিবন্ধনের সময়সীমা ১ জুলাই থেকে ১ অক্টোবর ২০২৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। আরব আমিরাতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এ তথ্য জানিয়েছে।
এ সংবাদে অনেক প্রবাসী কিছুটা স্বস্তির নিশ্বাস নিয়েছেন। কেননা এখনও অধিকাংশ প্রবাসী এ বীমা প্রকল্পের নিবন্ধন করেননি। এমনকি বীমা প্রকল্প সম্পর্কে যথাযথ অবগতও না অনেকে। এর ফি কোম্পানি বহন করবে না কি শ্রমিকদের বহন করতে হবে, তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ।
বিশেষ করে বাংলাদেশি শ্রমিকরা এ বীমার উপকারিতা কি, তাও সঠিকভাবে বুঝে উঠতে পারেননি বলে জানিয়েছেন।
অনেকে মনে করছেন, আমিরাতের সংবাদমাধ্যমগুলো আরবি ভাষায় ও ইংরেজি ভাষায় বেশি প্রকাশ হয়, তাই বিপুল সংখ্যক শ্রমিক বিষয়টি বুঝতে সক্ষম নন। মূলত এখানকার সরকারি সংবাদগুলো থেকে মুখে মুখে শুনে বা ভিন্ন ভিন্ন মাধ্যমে জানতে পারেন প্রবাসীরা। যদিও সংযুক্ত আরব আমিরাত সরকার যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, যাতে সহজেই এ প্রকল্পের সুবিধা সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে এ প্রকল্প কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত সাড়ে ৪ মিলিয়ন শ্রমিক তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে সক্ষম হন বলে জানিয়েছে আমিরাত সরকার।
আবুধাবির মানবসম্পদ ও এমিরেটাইজেশন মন্ত্রণালয় তাদের ওয়েবসাইটসহ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছে, বেকারত্ব বীমা প্রকল্পের নিবন্ধনের শেষ সময়সীমা ছিল ৩০ জুন পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে নিবন্ধন না করলে ৪০০ দিরহাম জরিমানা আরোপের কথা বলা হয়েছিল।
জরিমানার বিষয়টি এখনও বলবৎ থাকলেও নিবন্ধনের শেষ সময় ১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এখনও যারা নিবন্ধন করতে পারেননি, তাদের সুবিধার কথা ভেবে জরিমানা এড়াতে নিবন্ধনের সময়সীমা ১ জুলাই থেকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাত।
মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরের সকল আমিরাতি এবং প্রবাসী কর্মচারীদের পাশাপাশি ফ্রি জোনে কর্মরত কর্মচারীরা এ সুবিধা নিতে পারবেন।
আমিরাতবাসী অথবা সেখানকার বাসিন্দাদের প্রতিষ্ঠান কিংবা নিয়োগকর্তারা চাকরি থেকে কাউকে বাদ দিলে- কেউ যদি বেকার হয়ে যায় তবে তাকে তিন মাসের জন্য নগদ অর্থ দেবে আমিরাত সরকার। বেকারত্বের এই আর্থিক সহায়তা পেতে কর্মচারীদের অবশ্যই স্কিমের সাথে নিবন্ধিত হতে হবে এবং তাদের মাসিক বেতনের ওপর ভিত্তি করে একটি বীমা প্রিমিয়াম দিতে হবে।
১৬০০০ দিরহাম বা তার কম মাসিক বেতন উপার্জনকারী কর্মীদের জন্য প্রতি মাসে ৫ দিরহামের বেশি নয় এবং ১৬০০০ দিরহামের বেশি বেতন উপার্জনকারী কর্মীদের জন্য প্রতি মাসে ১০ দিরহাম করে নিবন্ধন ফি দিতে হবে।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা গেছে, বীমাকারীদের অবশ্যই ১২ মাসের জন্য এই স্কিমে নিবন্ধিত হতে হবে এবং চাকরিহারা হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে ক্ষতিপূরণের অনুরোধ জানিয়ে আবেদন করতে হবে।
তবে শর্তও জুড়ে দেওয়া হয়েছে, যে কর্মসংস্থানে কাজ করতেন তা যদি বন্ধ পাওয়া যায় বা কোম্পানি বন্ধ করে দেয়, শাস্তিমূলক কোন কারণে কোম্পানি থেকে অব্যাহতি দেয় এবং ক্ষতিপূরণের অনুরোধের আবেদনে কোন ধরনের জালিয়াতি করা হলে এ বীমার সুবিধা কার্যকর হবে না। শ্রমিক যদি অন্য কোন চাকরিতে যোগদান করেন বা দেশ ছেড়ে চলে যান তবে সেই তারিখ থেকে তার জন্য ক্ষতিপূরণ প্রদান স্থগিত হয়ে যাবে।
এম.কে
১৮ জুন ২০২৩