TV3 BANGLA
আন্তর্জাতিক

ফিলিস্তিন থেকে আসা শিক্ষার্থীদের জন্য সুখবরঃ যুক্তরাজ্যে পরিবারের সদস্যদের আনতে অনুমতি

যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজা থেকে যুক্তরাজ্যে পড়াশোনা করতে আসা শিক্ষার্থীরা এখন তাদের পরিবারকেও সঙ্গে আনতে পারবেন—সরকারি নীতির নতুন পরিবর্তনের ফলে এমন সুযোগ তৈরি হয়েছে।

সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র দপ্তরের (হোম অফিস) বিশেষ ব্যবস্থায় একদল ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থীকে নিরাপদে যুক্তরাজ্যে আনা হয় এবং তাদেরকে সম্পূর্ণ বৃত্তিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানো হয়। তবে পূর্ববর্তী কনজারভেটিভ সরকারের নীতির কারণে তারা নির্ভরশীল (ডিপেনডেন্ট) পরিবার সদস্যদের আনতে পারছিলেন না, যা অনেক শিক্ষার্থীর জন্য পড়াশোনা শুরু করাই কঠিন করে তুলেছিল।

সরকার এখন জানিয়েছে, শিক্ষার্থীদের নির্ভরশীল সদস্যদের—যেমন সঙ্গী ও সন্তানদের—‘প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বিবেচনা করে’ সরিয়ে আনার অনুমতি দেওয়া হবে। এ জন্য তাদের স্টুডেন্ট ডিপেনডেন্ট ভিসার আবেদন করতে হবে এবং অভিবাসন নিয়ম অনুযায়ী জীবনযাপনের খরচ বহনের সক্ষমতা প্রমাণ করতে হবে। লন্ডনের বাইরে বছরে অন্তত £৬,১২০ এবং লন্ডনে £৭,৬০৫ ব্যয়ের সামর্থ্য দেখাতে হবে।

ফিলিস্তিনি শিক্ষার্থী মানার আল-হুবি, যিনি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন, আগে বলেছিলেন—পরিবারকে ফেলে রেখে যাওয়া তার পক্ষে “অসম্ভব”। নতুন সিদ্ধান্তে তিনি “গভীর স্বস্তি” প্রকাশ করে বলেন, “আমি আশা করছি খুব শিগগিরই আমার পরিবারসহ যুক্তরাজ্যে আসতে পারব।”

সরকারি মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেন, “গাজা থেকে যুক্তরাজ্যে আসা শিক্ষার্থীরা গত দুই বছরের সংঘাতের কারণে ভয়াবহ কষ্টের মধ্য দিয়ে গেছেন। আমরা মানবিক বিবেচনায় তাদের যোগ্য পরিবারের সদস্যদের নিরাপদে আনার ব্যবস্থা করছি।”

বিবিসির তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত অন্তত ৭৫ জন গাজার শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যে এসে পৌঁছেছেন, যাদের সরিয়ে আনার প্রক্রিয়ায় সরকার সহায়তা করেছে।

দুই বছরের যুদ্ধে গাজা প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় ৬৭,০০০ এরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। জাতিসংঘ জানিয়েছে, প্রায় ২১ লাখ বাসিন্দার অধিকাংশই বাস্তুচ্যুত, এবং গাজার অধিকাংশ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে বা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত।

এদিকে, যুক্তরাজ্য গাজায় অবিস্ফোরিত অস্ত্র ও ধ্বংসাবশেষ পরিষ্কারের জন্য জাতিসংঘের মাইন অপসারণ সংস্থা (UNMAS)-কে ৪ মিলিয়ন পাউন্ড সহায়তা দিচ্ছে। এই অর্থায়ন ৭,৫০০ টনেরও বেশি মাইন ও ক্লাস্টার বোমা অপসারণে ব্যবহৃত হবে, যাতে মানবিক সহায়তা কার্যক্রম আরও নিরাপদ ও কার্যকর হয়।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়েভেট কুপার বলেন, “গাজার পরিস্থিতি অত্যন্ত করুণ। আমরা চাই সেখানে দ্রুত মানবিক সাহায্য পৌঁছাক। এই অর্থায়ন গাজার বিস্ফোরক অপসারণ ও সহায়তা পৌঁছানোর পথ নিরাপদ করতে সহায়তা করবে।”

UNMAS-এর কর্মকর্তা রিচার্ড বোল্টার বলেন, “গাজায় অবিস্ফোরিত অস্ত্রের ঝুঁকি এখনো বিশাল। যুক্তরাজ্যের উদার সহায়তা আমাদের জীবনরক্ষার এই মিশনে গতি আনবে।”

পররাষ্ট্রমন্ত্রী কুপার গাজায় ব্রিটিশ মাইন অপসারণ সংস্থা ‘হালো ট্রাস্ট’-এর কার্যক্রম পরিদর্শনে যাবেন, যেখানে যুক্তরাজ্যের মানবিক সহায়তা ও পুনর্গঠন প্রচেষ্টার অগ্রগতি পর্যালোচনা করা হবে।

সূত্রঃ ডেইলি মেইল

এম.কে

আরো পড়ুন

মুইজ্জুকে নিয়ে ভারতের ভয়ংকর ষড়যন্ত্রের তথ্য ফাঁস করল ওয়াশিংটন পোস্ট

হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় প্রেসিডেন্ট রাইসি নিহত হয়েছেন বলে শঙ্কা করা হচ্ছে

মানবিক ভিসা চালু করতে যাচ্ছে পর্তুগাল