25.1 C
London
September 19, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশযুক্তরাজ্য (UK)

বাংলাদেশি নাগরিকত্ব নিয়ে মিথ্যাচার, টিউলিপকে ঘিরে স্টারমারের দুঃস্বপ্ন

ব্রিটেনে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির প্রভাবশালী এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিকের বাংলাদেশের নাগরিকত্ব থাকার বিষয়টি নিয়ে প্রথম আলো ও ব্রিটিশ দৈনিক দ্য টাইমসের যৌথ অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হওয়ার নতুন করে সংবাদ প্রকাশ করেছে ব্রিটিশ দৈনিক এক্সপ্রেস।

এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের নাগরিকত্ব নিয়ে টিউলিপ সিদ্দিকের দাবি ও তার বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্য বেশ সাংঘর্ষিক। এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে লেবার পার্টি। তিনি বলেছিলেন, তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট দেওয়া হয়নি। কিন্তু ঢাকার কর্মকর্তারা যে নথি পেয়েছেন, তাতে ভিন্ন চিত্র দেখা যাচ্ছে।

ঢাকা থেকে কর্মকর্তারা রেকর্ডে দেখেছেন ২০০১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে লন্ডনে, যখন এমপি সিদ্দিকের বয়স ছিল ১৯, একটি পাসপোর্ট ইস্যু এবং ২০১১ সালের জানুয়ারিতে একটি জাতীয় পরিচয়পত্র করা হয়েছিল।

দ্য টাইমস এবং বাংলাদেশের প্রথম আলোকে ওই নথিগুলোর কপি দেওয়া হয়েছে। ৪৩ বছর বয়সী সিদ্দিক জানুয়ারিতে কিয়ার স্টারমারের দুর্নীতি দমন মন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন। তখন বলেছিলেন তিনি ‘বিভ্রান্তির কারণ’ হতে চান না।

অভিযোগ করা হচ্ছে, ঢাকায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার খালা শেখ হাসিনা বেআইনিভাবে তাকে জমি দিয়েছিলেন। দুর্নীতি দমন কমিশন এটিকে ‘ক্ষমতার অপব্যবহার’ বলে অভিহিত করেছে।

দ্য টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাসপোর্ট ডাটাবেসের এন্ট্রি অনুযায়ী সিদ্দিক ২০১১ সালের জানুয়ারিতে ঢাকার আগারগাঁও পাসপোর্ট অফিসে পাসপোর্ট নবায়নের আবেদন করেছিলেন। নির্বাচন কমিশনের ডাটাবেসেও তার জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নম্বর সনাক্ত করা হয়েছে। সেখানে তার ভোটার নিবন্ধন নম্বরও রয়েছে।

উভয় ক্ষেত্রেই তার স্থায়ী ঠিকানা হিসেবে ঢাকার একটি বাড়ির কথা উল্লেখ রয়েছে যা তার খালা শেখ হাসিনার মালিকানাধীন ছিল। তার আইনজীবীরা এই মামলাকে ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকর অবমাননা’ বলে অভিহিত করেছেন।

নতুন প্রকাশিত নথি ও ডাটাবেসের তথ্য টিউলিপের আগের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। গত মাসে হ্যাম্পস্টেড ও হাইগেটের এমপি টিউলিপ প্রসিকিউশনের দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেছিলেন তিনি জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোর্ট পাননি।

তার আইনজীবী প্রতিষ্ঠান স্টিফেনসন হারউডের একজন মুখপাত্র ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসকে ১২ আগস্ট বলেন, ‘টিউলিপের কোনো বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র বা ভোটার আইডি নেই এবং তিনি শৈশব থেকেই পাসপোর্ট পাননি।’

কিন্তু নথিগুলোর কপি দেখানো হলে সিদ্দিকের পক্ষ থেকে দাবি করা হয় যে এগুলো ‘জাল’ এবং বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মানহানিকর প্রচারণার’ অংশ।

তিনি আরও বলেন, এটি ইচ্ছাকৃত ও মরিয়া চেষ্টা যা তার বিশ্বাসযোগ্যতা ও সুনাম ক্ষুণ্ন করার উদ্দেশে পরিচালিত।

বাংলাদেশে পাসপোর্ট ও জাতীয় পরিচয়পত্র কেবল নাগরিকত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের জন্য ইস্যু করা হয়। বাংলাদেশি নাগরিকত্ব তাদের দেওয়া হয় যারা দেশে জন্মগ্রহণ করেছেন অথবা যাদের বাবা-মায়ের একজন বাংলাদেশি, জন্মস্থান যেখানেই হোক।

টিউলিপ ব্রিটেনে জন্মগ্রহণ করেছেন। যাদের উভয় পিতা-মাতা বাংলাদেশি, তারাই আইনত দ্বৈত নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকার রাখেন।

তবে পূর্বে তিনি নিজের বাংলাদেশি পরিচয়কে অস্বীকার করেছিলেন। ২০১৭ সালে টিউলিপকে জিজ্ঞাসা করা হয়েচিল, ব্রিটেন থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন ব্যারিস্টার বাংলাদেশের কারাগারে আটক হওয়ার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করবেন কিনা। জবাবে তিনি বলেন, ‘আপনি কি আমাকে বাংলাদেশি বলছেন? কারণ আমি ব্রিটিশ, ভালো করে সাবধানে বলুন, আমি ব্রিটিশ এমপি। আমি বাংলাদেশি নই।’

বর্তমানে তিনি বাংলাদেশে অনুপস্থিত অবস্থায় বিচারাধীন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তার খালার প্রভাব খাটিয়ে তার মা, ভাই ও বোনের জন্য জমি পেয়েছেন। তিনি অনিয়মের ব্যাপারে অস্বীকার করে এই মামলাকে ‘নির্যাতন ও প্রহসন’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।

সূত্রঃ দ্য এক্সপ্রেস

এম.কে
১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আরো পড়ুন

লন্ডনে মাত্র £৫,০০০ ডিপোজিটে বাড়ি কেনার সুযোগ দিল নিউক্যাসল বিল্ডিং সোসাইটি

গ্রীষ্ম ২০২৫ প্রায় নিশ্চিতভাবে যুক্তরাজ্যের উষ্ণতম মৌসুম

যুক্তরাজ্যে ভারী তুষারপাতের সম্ভাবনা