ঈদ-উল-ফিতরের ঠিক আগে গরুর মাংসের দাম কেজিপ্রতি ৬৫০-৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। যা এক মাস আগে মার্চ মাসেও ৬০০ টাকা ছিল।
বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কারণের কারণে সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে গরুর মাংসের দাম সবচেয়ে বেশি।
ভারতের গরুর মাংস রপ্তানি নিষিদ্ধ করা, জনসংখ্যার ঘনত্ব বেড়ে যাওয়া এবং গবাদি পশুর খাদ্যের উচ্চমূল্য দেশের গরুর মাংসের দাম বাড়ার অন্যতম কয়েকটি কারণ।
এখন, রাজধানী ঢাকায় প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭০০-৭৫০ টাকায় এবং খাসির মাংস প্রতি কেজি ৮৫০ থেকে ১,০০০ টাকায় বিক্রি করছে। এক্ষেত্রে তুলনা হিসেবে অস্ট্রেলিয়ার অত্যন্ত মূল্যবান অ্যাঙ্গাস গরুর মাংসের উদাহরণ দেওয়া যায়। এই মাংসের প্রতি কেজির দাম ৪.৯০ ডলার বা টাকা ৪০০ টাকা। যা বাংলাদেশের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
অন্যদিকে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা শহরে মহিষের মাংসের দাম প্রতি কেজি ২০০-৩০০ রুপি যা টাকায় হিসাব করলে ২৩৫-২৭০ টাকা বলে কলকাতায় একজন বাংলাদেশি কূটনীতিক জানান।
সেখানে খাসির মাংসের দাম প্রতি কেজি ৭০০ রুপি, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৮২০ টাকার মতো।
দাম বাড়ার কারণ
ভারতের গবাদি পশু রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞার প্রেক্ষাপটে প্রাণিসম্পদ খাতে ঈর্ষণীয় সাফল্য সত্ত্বেও গত ৭-৮ বছরে বাংলাদেশে গরু ও খাসির মাংসের দাম বেড়েছে।
২০১৪ সালে ভারতে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর, মোদি সরকার বাংলাদেশে গবাদি পশু রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। যা বাংলাদেশের পশুসম্পদ খাতের ব্যাপক উন্নয়নে সহায়তা করেছিল বলে এক দুগ্ধ খামার মালিক বলেন।
রাষ্ট্রায়ত্ত একটি ব্যাংকের কর্মচারী আবদুর রহমান বলেন, “গরু ও খাসির মাংসের দাম নিম্ন ও মধ্যম আয়ের গ্রাহকদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। সাধারণত রমজান মাসের আগে ঢাকা সিটি করপোরেশন গরুর মাংস ও মাটনের দাম নির্ধারণ করে দিলেও এ বছর তা করেনি।”
বিডিএফএ-এর সাধারণ সম্পাদক শাহ এমরানের মতে, কিছু সরকারি পদক্ষেপ এবং প্রণোদনা বাংলাদেশে মাংসের দাম ২০-২৫% কমাতে সাহায্য করতে পারে।
পাকিস্তান ও ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে গবাদি পশু পালনে খরচ বেশি। বাংলাদেশ একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশ যেখানে গবাদি পশুর চারণভূমি দিনদিন হারিয়ে যাচ্ছে। ভৌগোলিকভাবে, ভারত এবং পাকিস্তান উভয়ই বাংলাদেশের চেয়ে যথাক্রমে ২৫ এবং সাত গুণ বড়। তাই এই দুই দেশেই তৃণভূমি ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়, তিনি বলেন।
১৫ মে ২০২২
সূত্র: ঢাকা ট্রিবিউন