3 C
London
January 20, 2025
TV3 BANGLA
Uncategorizedবাংলাদেশযুক্তরাজ্য (UK)

বাংলাদেশের কাছে যুক্তরাজ্যের শেখার আছে: ব্লুমবার্গ

বিশ্বের সামনে এখন যেসব হুমকি রয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তন সেগুলোর একটি। বিশ্বে ইতোমধ্যেই এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। এটি মোকাবিলায় বিশ্বব্যাপী নানা পদক্ষেপ নেয়া হলেও এখনো খুব বেশি ফল পাওয়া যায়নি।

এই পরিস্থিতিতে জলবায়ু সংকটের সঙ্গে মানিয়ে নেয়ার বিষয়ে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের কাছ থেকে শিক্ষা নিতে পারে বলে জানিয়েছে মার্কিন প্রভাবশালী গণমাধ্যম ব্লুমবার্গ।

এতে বলা হয়েছে, বৃটেনে অনেকেই এখন রেকর্ড-উচ্চ তাপমাত্রায় বা বন্যার পানির কারণে কষ্ট পাচ্ছেন, তবে এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ বৃটেন জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত নয়।
বৃটিশ সরকারের জলবায়ু পরিবর্তন কমিটির গত বুধবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনের উপসংহারে এই কথাই বলা হয়েছে। ওই কমিটি জলবায়ুনীতি সম্পর্কিত যুক্তরাজ্যের স্বাধীন উপদেষ্টা সংস্থা।

এটি বেশ আশ্চর্যজনক মনে হতে পারে যে, যুক্তরাজ্যের মতো একটি ধনী দেশ এই ধরনের চ্যালেঞ্জের জন্য মোটেও প্রস্তুত নয়। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘনঘন দুর্যোগ সহ আবহাওয়া এখন আরো চরমভাবাপন্ন হয়ে উঠেছে।

জার্মানির ইউনিভার্সিটি অব বনের ভূগোলের অধ্যাপক লিসা শিপার এই ধরনের প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে সতর্ক করেছেন। তিনি বলছেন, ‘বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে এমন একটি ছবি আঁকা হয়েছে, যেখানে কার্যত দেখানো হয়েছে- দরিদ্র দেশগুলোতেই কেবল জলবায়ু বিপর্যয় ঘটে থাকে’। আর এটি মানুষকে আত্মতুষ্টির দিকে পরিচালিত করেছে যা থেকে আমরা সম্ভবত জেগে উঠছি।

তবে বেশিরভাগ সময়ই সংকটের মধ্যে থাকা দরিদ্র দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের অভিযোজন প্রক্রিয়ায় আরও স্পষ্টভাবে নজর দিয়েছে। ২০২১ সালে জার্মানির বিপর্যয়কর বন্যায় ১৯৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। সেই বন্যার প্রতিক্রিয়ায় ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ক্লাইমেট চেঞ্জ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ’-এর ডিরেক্টর সালেমুল হক পত্রিকার নিবন্ধে লিখেছিলেন, কিভাবে ধনী দেশগুলো তার বাংলাদেশ থেকে শিখতে পারে।

ঘূর্ণিঝড় ও বন্যা নিয়মিতভাবে আঘাত হানায় সেই ধরনের পরিস্থিতিতে মানুষের প্রাণহানি কমিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ প্রচুর অর্থ বিনিয়োগ করেছে ও মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে আনা ও আশ্রয় দেয়ার সক্ষমতাসহ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে ‘সর্বোত্তম দুর্যোগ সতর্কীকরণ ব্যবস্থা’ নিশ্চিতের বিষয়টি বাংলাদেশ এখন গর্বের সঙ্গে বলে থাকে।

যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি বেশ গুরুতর। ২০২২ সালের গ্রীষ্মে ইংল্যান্ডে যে তাপপ্রবাহ দেখা গেছে তা দাবানল, দীর্ঘস্থায়ী খরা এবং তাপ-সম্পর্কিত অতিরিক্ত মৃত্যুর সর্বোচ্চ হার সৃষ্টিতে অবদান রেখেছিল। এছাড়া এটি অন্যান্য ঝুঁকিও সামনে এনেছে।

চরম তাপমাত্রার কারণে একে অপরের ব্যাক আপ হিসাবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা দুটি ডেটা সেন্টার এসময় অকার্যকর হয়ে যায়। এতে লন্ডনের বেশ কয়েকটি হাসপাতাল এবং কমিউনিটি পরিসেবা কেন্দ্রের বেশিরভাগ ক্লিনিকাল আইটি সিস্টেম বন্ধ হয়ে গিয়েছিল, যার ফলে রোগীর সেবা-যত্নে ব্যাপক ব্যাঘাত ঘটে। এমনকি অন্য দেশের পরিবর্তিত অবস্থার কারণেও ক্ষতির মুখে পড়েছে ইংল্যান্ড: যেমন, স্পেনের অসময়ের ঠাণ্ডা আবহাওয়ার কারণে মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যে সালাদ ঘাটতি দেখা দিয়েছিল।

সিসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) ক্রিস স্টার্ক বলেন, যুক্তরাজ্যের লোকেরা ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন হলেও এখনও বড় ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় যুক্তরাজ্যে আসে নাই তবে তা সন্নিকটে। কিছু পরিকল্পনা দ্রুত নেওয়া উচিত, যেমন শহুরে নকশায় গাছকে অন্তর্ভুক্ত করা হলে তা বন্যার ঝুঁকি কমাতে পারে, শহরকে শীতল রাখতে সাহায্য করতে পারে, সুস্থতা ও স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে ও বায়ু দূষণও কমাতে পারে।

ব্রিটিশ সরকার ২০২৩ সালের মাঝামাঝি সময়ে তার তৃতীয় জাতীয় অভিযোজন প্রোগ্রাম প্রকাশ করবে। আশা করা যায়, ওই প্রোগামে সিসিসির সুপারিশগুলো গ্রহণ করা হবে এবং সেসব দরিদ্র দেশের অভিজ্ঞতা থেকে সরকার শিখবে যারা এই বিষয়ে আদর্শ দেশে পরিণত হয়েছে।

আরো পড়ুন

বাংলাদেশের রিজার্ভ চুরি নিয়ে হলিউডের তথ্যচিত্র ‘বিলিয়ন ডলার হাইস্ট’ আসছে

ফারুকীকে প্রথম অভিনন্দন বার্তা জয়ের

ছোট্টবেলার ঈদ