18.1 C
London
August 23, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পর্যটনের নতুন ঠিকানা ‘হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী’

সমুদ্র নয়, কিন্তু সমুদ্রের মতোই বিশাল জলরাশি। নেত্রকোনার ‘খালিয়াজুরী’ উপজেলার হাওর জনপদে বর্ষা মৌসুমে দেখা মেলে এমনই এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্যপট। যেখানে সামান্য বাতাসেই ভেসে আসে ঢেউয়ের ছলাৎ ছলাৎ শব্দ, সূর্যাস্তে সোনালী আভা, আর রাতের জ্যোৎস্নায় চিক চিক করা জলরাশি- এমন দৃশ্য দেখা মেলে জ্যৈষ্ঠ থেকে আশ্বিন পর্যন্ত।

আর কার্তিকের শেষে হাওরের পানি সরে গেলে দিগন্তজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সবুজের সমারোহ। শীতকালে অতিথি পাখির আগমনে মুখরিত হয় বিল-ঝিল। শীত ও বর্ষার আলাদা রূপ প্রকৃতি প্রেমীদের টেনে নিয়ে যায় হাওরের মাঠে-ঘাটে।

তবে বর্ষাকালীন সৌন্দর্যই সবচেয়ে বেশি আকর্ষণীয় পর্যটকদের কাছে। তাই এ সময় বেড়ে যায় পর্যটকের সংখ্যা।

সবমিলিয়ে বলা চলে, এই শীত কিংবা বর্ষায় হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরী যেন প্রকৃতির এক অন্তত রূপ। সৌন্দর্যমণ্ডিত এই জেলা শহর থেকে মদন বা মোহনগঞ্জ হয়ে সড়কপথে খালিয়াজুরী পৌঁছাতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা।

খালিয়াজুরী শুধু প্রাকৃতিক নয়, ঐতিহ্যেও সমৃদ্ধ। নেত্রকোনার ইতিহাস বইয়ে উল্লেখ আছে, খ্রিষ্টীয় চতুর্দশ শতাব্দীতে এটি ছিল কামরূপ রাজ্যের অস্থায়ী রাজধানী। শাসক ছিলেন ক্ষত্রীয় জিতারী সন্যাসী। সে আমলের একটি মঠ আজও দাঁড়িয়ে আছে। রয়েছে মহুয়া সুন্দরী ও হোমরা বাইদ্যাইর স্মৃতিবিজড়িত মহুয়ারবাগ ও বাইদ্যাইরচর, শত বছরের পুরনো বৈষ্ণব আখড়া ও মসজিদ, হাসান রাজার নানার বাড়ি, গীতিকার ও বাউল সাধক উকিল মুন্সীসহ অনেক বিখ্যাত মানুষের জন্মভূমি।

এদিকে মেঘনা ও সুরমা নদীর সংযোগস্থল বিশাল ধনু নদে প্রতিদিন চলে লঞ্চ ও অসংখ্য কার্গো। সারি সারি কার্গোর দৃশ্য মন ভোলায়। কলেজ সড়ক এলাকায় গড়ে উঠেছে আকর্ষণীয় পিকনিক স্পট, যেখানে বর্ষায় সুসজ্জিত নৌকাযোগে আসে পিকনিক পার্টি। সড়কের এক পাশে সারি সারি গাছ, অন্য পাশে বিশাল জলরাশি। রয়েছে দৃষ্টিনন্দন হাসপাতাল চত্বর এবং উদয়পুর ও কাদিরপুর হাওড়ে হিজল-করস গাছের বাগান।

দেশি-বিদেশি পর্যটক নিয়মিতই ঘুরতে আসেন খালিয়াজুরীতে। এমনকি চীনের পর্যটক হিউয়েন সাং-ও হাওরের জলধারায় মুগ্ধ হয়েছেন। তবে পর্যটন কেন্দ্র না থাকায় পর্যটকদের পড়তে হয় নানা বিড়ম্বনায়। তাই এলাকাবাসীর দাবি, খালিয়াজুরীতে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা হোক। সদর থেকে ৭ কিলোমিটার দূরের বোয়ালী পর্যন্ত উড়াল সেতু নির্মাণের প্রয়োজনও রয়েছে। এসব নির্মিত হলে খালিয়াজুড়ী হতে পারে নতুন আকর্ষণীয় স্পট।

খালিয়াজুরী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) এম এ কাদের বলেন, ‘পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য খালিয়াজুরী অত্যন্ত উপযোগী জায়গা। এখানে রয়েছে বিশাল জলরাশি। যা পর্যটকদের আকর্ষিত করে।’

জেলা প্রশাসক বনানী বিশ্বাস জানান, হাওড়ের জলরাশির সৌন্দর্যকে ভিত্তি করে পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলা প্রয়োজন। তাই হাওরদ্বীপ খালিয়াজুরীতে পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের জন্য ট্যুরিজম বোর্ডে প্রস্তাব পাঠানোর পদক্ষেপ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অচিরেই নেওয়া হবে।

বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) সেলিম মাহমুদ-উল-হাসান জানান, হাওড়ের জলাভূমি কেন্দ্রিক পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে।

এম.কে
২৩ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

জেলে থেকেও হাসিনার সঙ্গে ফোনে কী ষড়যন্ত্র করছে সালমান!

লালমনিরহাটে পিটিয়ে হত্যার পর আগুনে পোড়ানো নিহত ব্যক্তিটি কে ছিলেন

অনলাইন ডেস্ক

বাংলাদেশ সেভেন সিস্টারের সমুদ্র অভিভাবকঃ ড. ইউনুস