10.1 C
London
November 5, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বাংলাদেশের রিজার্ভ কতটুকু বাড়লো নতুন সরকারের হাতে

একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নতি ও সমৃদ্ধির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিদায়ী সরকারের শেষ সময়ে এই রিজার্ভের পতন থামানো যাচ্ছিল না। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর রিজার্ভের পতন থামানো গেছে। শুধু তাই নয়, গত এক সপ্তাহে রিজার্ভ বেড়েছে প্রায় ৬ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আগের সপ্তাহেও রিজার্ভ তার পূর্ববর্তী তিন সপ্তাহের চেয়ে সাড়ে চার কোটি ডলার বাড়ার তথ্য দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। রবিবার ৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের গ্রস রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.আহসান এইচ মনসুর বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগদানের পর রিজার্ভের পতন থামানোকে তিনি সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন। তিনি উল্লেখ করেন, নানামুখী প্রচেষ্টায় অর্থপাচার ঠেকানো গেছে। এছাড়া রফতানি ও প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স বাড়ার কারণে আন্তব্যাংকে ডলারের সরবরাহ বেড়েছে। আর আমি চেষ্টা করছি রিজার্ভে হাত না দেওয়ার। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের মতো ঢালাওভাবে ডলার বিক্রি করছে না। বেশ কিছু বিদেশি প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে রিজার্ভে হাত না দিয়েই। এ কারণে রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়তে শুরু করেছে।’

বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। সচিবালয়ে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ পর্যালোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘দেশীয় শিল্পের বিকাশে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে। এতে ব্যবসায়ীদের আস্থা বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও বাড়ছে।’

সরকার পতনের আগের মাস জুলাইয়ে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ছিল ২৬ বিলিয়ন ডলার। এখন এই গ্রস রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৪৪ বিলিয়নে, আগের সপ্তাহে যা ছিল ২৫ দশমিক ৩০ বিলিয়ন ডলার।

এছাড়া (বিপিএম-৬) মানদণ্ড অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ২০ বিলিয়ন ডলারের নিচে নেমে যাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ওই অবস্থান ছুঁতে পারেনি। বর্তমানে বিপিএম-৬ অনুযায়ী রিজার্ভ রয়েছে ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের চার দিন আগে বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভের হিসাব প্রকাশ করে।

ওই হিসাব অনুযায়ী, ৩০ জুলাই ছিল ২০ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলার। নতুন সরকার গঠনের পর ২১ আগস্টও রিজার্ভ ২০ বিলিয়ন ছিল।

পরে এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) আমদানি বিল পরিশোধ শেষে ১২ সেপ্টেম্বর তা নেমে হয় ১৯ দশমিক ৪৪ বিলিয়ন ডলারে। তিন সপ্তাহ পর ২ অক্টোবর তা কিছুটা বেড়ে দাঁড়ায় ১৯ দশমিক ৭৬ বিলিয়নে।

অবশ্য এশিয়ান ক্লিয়ারিং ইউনিয়নের (আকু) মাধ্যমে দুই মাসের (সেপ্টেম্বর-অক্টোবর) আমদানি বিল নিষ্পত্তি হচ্ছে চলতি সপ্তাহে। আকুভুক্ত ৯টি দেশের আমদানি বিল বাবদ মোট ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার পরিশোধ হবে। এতে গ্রস রিজার্ভ কমে দাঁড়াবে ২৩ বিলিয়ন ডলারে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, ৩ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের রিজার্ভ ছিল ২৫ বিলিয়ন ডলার। সেখান থেকে গত দুই মাসের আকুর বিল ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বাদ যাবে। এতে মোট রিজার্ভ নেমে আসবে সাড়ে ২৩ বিলিয়ন ডলারে।

৩ নভেম্বর পর্যন্ত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের নির্দেশিত (বিপিএম-৬) মানদণ্ড অনুযায়ী, বর্তমানে রিজার্ভ রয়েছে ১৯ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার। এ রিজার্ভ থেকে প্রায় ৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে ব্যয়যোগ্য রিজার্ভ থাকবে ১৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার—যা আইএমএফের বেঁধে দেওয়া সীমা ১৫ দশমিক ৩২ বিলিয়ন ডলারের চেয়ে কিছুটা কম।

তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, যেভাবে রেমিট্যান্স বাড়ছে, তাতে আইএমএফের বেঁধে দেওয়া সীমা অতিক্রম করতে বেশি সময় লাগবে না।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট ও সেপ্টেম্বরের মতো সদ্য বিদায়ী অক্টোবর মাসেও প্রবাসী আয়ের গতি ছিল ঊর্ধ্বমুখী। অক্টোবরে মোট রেমিট্যান্স এসেছে প্রায় ২৪০ কোটি ডলার। এর আগের মাস সেপ্টেম্বরে ২৪০ কোটির বেশি ডলার পাঠিয়েছেন বিভিন্ন দেশে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৪৮ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। তখন হিসাব করা হতো গ্রস হিসেবে।

তবে মহামারি কোভিডের শেষে বিশ্ববাজারে জ্বালানি আর খাদ্যের দাম বৃদ্ধি, এরপর ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হলে বেড়ে যায় আমদানি খরচ। এর বাইরে আমদানির আড়ালে অর্থপাচার বেড়ে যাওয়ায় কমতে থাকে রিজার্ভ।

গত দুই অর্থবছর বাংলাদেশ ব্যাংক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে সরকারি ঋণপত্র বা এলসি খোলার জন্য রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেছে। এতেও কমেছে বৈদেশিক মুদ্রা।

এম.কে
০৫ নভেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্যের লুটনের ‘বার্বি’ অভিনেতা রমজান মিয়া ঢাকায় আসছেন

নিজ কার্যালয়ের দেয়াল থেকে প্রধানমন্ত্রীর ছবি সরালেন জাবি অধ্যাপিকা

দেশে নতুন উচ্চতায় সোনার দাম