বাংলাদেশ সরকারের গঠিত বিডিআর হত্যা তদন্ত কমিশনের প্রধান মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমানের সাম্প্রতিক একটি মন্তব্য ঘিরে শুরু হয়েছে তীব্র বিতর্ক। তিনি বলেন, “যদি ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে বাংলাদেশ ভারতের উত্তর-পূর্ব অংশ দখল করতে পারে।” তার এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
সরকারিভাবে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা স্পষ্ট করেন, এটি কোনোভাবেই বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় অবস্থান নয়। বরং এটি একজন সাবেক সামরিক কর্মকর্তার ব্যক্তিগত মতামত।
সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, “বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাসী। আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় বাংলাদেশ সবসময় গঠনমূলক ও দায়িত্বশীল অবস্থান নিয়ে চলে। ফজলুর রহমানের বক্তব্য সরকারকে প্রতিনিধিত্ব করে না।”
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে ভারতীয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও কিছু অনলাইন ফোরামে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। কিছু মন্তব্যে ভারতের সাধারণ জনগণ সরাসরি বলেছে, যদি পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়, তবে বাংলাদেশকেও শাস্তি দেওয়া উচিত। অনেকে এই বক্তব্যকে “উসকানিমূলক” ও “অপরিণামদর্শী” বলে আখ্যা দিয়েছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই ধরনের মন্তব্য আঞ্চলিক কূটনৈতিক সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় উত্তেজনা তৈরি করতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে যেখানে অনেক জটিলতা ও সংবেদনশীল ইস্যু রয়েছে।
উল্লেখ্য, মেজর জেনারেল (অব.) ফজলুর রহমান ২০০৯ সালের পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছেন এবং সরকারিভাবে গঠিত কমিশনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তবে তার সাম্প্রতিক বক্তব্য একেবারে ভিন্ন প্রসঙ্গের ওপর ভিত্তি করে এসেছে।
বিষয়টি এখনো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও রাজনৈতিক আলোচনায় উত্তপ্ত। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এমন সংবেদনশীল বিষয়ে সাবেক বা বর্তমান উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উচিত দায়িত্বশীলতা বজায় রাখা, যাতে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কে অপ্রয়োজনীয় চাপ না সৃষ্টি হয়।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
০৩ মে ২০২৫