5.9 C
London
November 22, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্ল্যানের পক্ষে ভোট ব্রিটিশ এমপিদের

বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্ল্যানের পক্ষে ভোট দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের এমপিরা। অভিবাসন-প্রত্যাশীদের রুয়ান্ডাতে পাঠিয়ে দেওয়ার এই পরিকল্পনা হাউস অব কমন্সে ৩১৩-২৬৯ ভোটে জয়ী হয়।

মূলত নিজের দলের বিদ্রোহ সামলে অত্যন্ত বিতর্কিত রুয়ান্ডা প্ল্যান পাস করাতে সক্ষম হন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। এরপর সামাজিক মাধ্যম এক্সে সুনাক লিখেছেন, ‘ব্রিটিশ নাগরিকরাই ঠিক করবেন, দেশে কারা আসবেন, কারা নয়। কোনও অপরাধী চক্র বা বিদেশি কোর্ট এটা ঠিক করবে না।’

পার্লামেন্টে সুনাকের দলের বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকলেও তার দলের বেশ কয়েকজন এমপি এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করছিলেন। বিরোধীরা তো আগে থেকেই জানিয়েছিলেন, তারা এই সিদ্ধান্তের সমর্থক নয়। ফলে ভোটাভুটিতে হেরে গেলে সুনাককে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হতো।

এই অবস্থায় কোনও ঝুঁকি না নিয়ে পরিবেশমন্ত্রী গ্রাহাম স্টুয়ার্টকে কপ-২৮ শীর্ষ বৈঠক ছেড়ে লন্ডন ফিরে এসে ভোটাভুটিতে অংশ নিতে বলা হয়।

ভোটাভুটির আগে সুনাক সামাজিক মাধ্যমে পর্লামেন্টের সদস্যদের এই সিদ্ধান্তের পক্ষে ভোট দিতে বলেন। তার দাবি, ‘এটা বেআইনি অভিবাসন রুখতে সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ। তিনি লিখেছিলেন, এই বিল পাস হলে কে ব্রিটেনে ঢুকতে পারবে, তা আমরা ঠিক করতে পারব। অভিবাসীদের নৌকাগুলোকে থামানোর জন্য আমাদের এই বিল পাস করাটা জরুরি।’

নৌকা থামানো মানে ব্রিটেনে আসার জন্য যে নৌকাগুলো ইউরোপ থেকে আসে এবং রক্ষণশীল দল বারবার যার বিরোধিতা করে এসেছে। এই বছর এইভাবে ২৯ হাজার মানুষ ব্রিটেনে এসেছেন। ২০২২ সালে এসেছিলেন ৪৬ হাজার মানুষ।

এছাড়া প্রধানমন্ত্রী সুনাক কয়েক ডজন কট্টরপন্থি এমপিকে নিজের বাসভবন ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে প্রাতঃরাশ বৈঠকে ডেকেছিলেন। বেআইনি অভিবাসন সংক্রান্ত মন্ত্রী মাইকেল টমলিসন জানিয়েছেন, এই বিলটি অত্যন্ত কড়া।

অবশ্য রক্ষণশীল দলের কট্টরপন্থিরা বলছেন, এই বিলে এটা বলা নেই, যে সব অভিবাসন-প্রত্যাশী ব্রিটেনে চলে আসবেন, তাদের ফেরত পাঠানো হবে। তখন তারা ব্রিটিশ আদালতে তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আবেদন জানাতে পারবেন। মানবাধিকার সংক্রান্ত ইউরোপীয় আদালতেও যেতে পারবেন।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো বলেছে, এই পরিকল্পনা কার্যকরই করা যাবে না। এছাড়া এই পরিকল্পনা অনৈতিক। অভিবাসন প্রত্যাশীদের সাড়ে ছয় হাজার কিলোমিটার দূরের রুয়ান্ডাতে পাঠানো মেনে নেওয়া যায় না। গত মাসে সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, রুয়ান্ডাকে কখনোই নিরাপদ দেশ বলা যায় না।

যুক্তরাজ্যের এমেনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রধান সাচা দেশমুখ বলেছেন, ‘এই পরিকল্পনায় মানবাধিকারের ধারণাকেই আক্রমণ করা হয়েছে।’

সুনাক জানিয়েছেন, হাউস অব কমন্সে বিলটি অনুমোদিত হওয়ার পর তারা নতুন উদ্যমে এই পরিকল্পনা নিয়ে এগোবেন। আদালতের উদ্বেগের বিষয়গুলোই মাথায় রাখা হবে।

এই পরিকল্পনা অনুয়ায়ী ব্রিটেন থেকে শত শত অভিবাসন-প্রত্যাশীকে পূর্ব আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডাতে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারা সেখানেই বসবাস করবেন। যুক্তরাজ্য ইতোমধ্যেই তিন হাজার তিনশ কোটি টাকা রুয়ান্ডাকে দিয়েছে।

যুক্তরাজ্যের দাবি, এই নিয়ম চালু হলে অভিবাসীরা আর যুক্তরাজ্যে আসবেন না।

এই বিল নিয়ে যখন আলোচনা হচ্ছে, তখন একজন অভিবাসন-প্রত্যাশী মারা যান। তার আবেদন বিচারাধীন ছিল। এরপরই মানবাধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, ব্রিটেনে অভিবাসীদের জন্য অমানবিক ব্যবস্থা চালু আছে।

এম.কে
১৩ ডিসেম্বর ২০২৩

আরো পড়ুন

শ্রমিক সংকট নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার

রাশিয়ায় জোরালো হচ্ছে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ

জাপানে তরুণের সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে কমছে