ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ও লেবার পার্টির নেতা কিয়ার স্টারমার এক ফেসবুক পোস্টে ঘোষণা করেছেন যে, তার সরকার বিদেশি অপরাধীদের ব্রিটেনে থাকার অধিকারকে স্বীকার করে না এবং এই বিষয়ে তাদের কঠোর পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে।
কিয়ার স্টারমার তার ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন:
“বিদেশী অপরাধীদের ব্রিটেনে থাকার অধিকার নেই। আমরা জুলাই থেকে ৩,৫০০ এর বেশি সরিয়ে দিয়েছি — যা টোরিদের গত বছরের তুলনায় ১৬% বেশি। এবং এটা মাত্র শুরু।”
এই পোস্টের মাধ্যমে তিনি স্পষ্ট বার্তা দিয়েছেন যে, লেবার সরকার অভিবাসন ও জাতীয় নিরাপত্তা ইস্যুতে কোনো ধরনের নমনীয়তা দেখাবে না। ব্রিটিশ জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তারা অপরাধে জড়িত বিদেশিদের বিরুদ্ধে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
প্রধানমন্ত্রীর দাবিকে ঘিরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের মে পর্যন্ত সময়ের মধ্যে মোট ৩,৫০০ জন বিদেশি অপরাধীকে তাদের নিজ নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে। এদের মধ্যে অনেকেই সন্ত্রাস, মাদক ব্যবসা, নারী পাচার এবং সহিংস অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
লেবার সরকার জানায়, তারা শুধু সংখ্যা বাড়ানো নয়, বরং দ্রুত বিচার ও প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াকেও সহজ করছে। অনেক ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতায় এই প্রত্যাবাসন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
স্টারমারের এই ঘোষণা লেবার পার্টির অভিবাসন নীতির ক্ষেত্রে এক নতুন মোড় নির্দেশ করছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। এর আগে লেবার পার্টি প্রায়শই “সামাজিক ন্যায়” ও “মানবিকতা”-কেন্দ্রিক অভিবাসন নীতির পক্ষে কথা বলত। তবে ক্ষমতায় আসার পর তারা আইন-শৃঙ্খলা এবং নিরাপত্তাকে অগ্রাধিকার দিয়ে নীতিগত অবস্থানে দৃঢ়তা দেখাচ্ছে।
কনজারভেটিভ পার্টির কিছু নেতাও স্বীকার করেছেন যে, অপরাধে জড়িত বিদেশিদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। তবে তারা বলছেন, এই পদক্ষেপ যেন রাজনৈতিক প্রচারণার হাতিয়ার না হয়।
এদিকে কিছু মানবাধিকার সংগঠন কিয়ার স্টারমারের মন্তব্যের সমালোচনা করে বলছে, “বিদেশি অপরাধী” শব্দটি একধরনের গণবিভাজন তৈরি করতে পারে এবং অনেক ক্ষেত্রে বিচারের যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করেই লোকদের ফেরত পাঠানো হতে পারে।
কিয়ার স্টারমারের এই বার্তা স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, ব্রিটেনের নিরাপত্তা ও আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নে বর্তমান সরকার কোনো আপস করতে চায় না। তবে এই নীতির বাস্তবায়ন কতটা মানবিকভাবে এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে সম্পন্ন হয়, তা নিয়ে বিতর্ক চলতেই থাকবে।
সূত্রঃ স্যোশাল মিডিয়া
এম.কে
১৭ মে ২০২৫