যুক্তরাজ্যে ক্রমবর্ধমান অভিবাসন জনসেবায় গুরুতর চাপ সৃষ্টি করছে বলে সতর্ক করেছেন দেশের শীর্ষ আর্থিক পর্যবেক্ষণ সংস্থা ওবিআরের (Office for Budget Responsibility) জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডেভিড মাইলস। তার মতে, বিদেশি শ্রমিকের ওপর নির্ভরতা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির জন্য টেকসই নয়।
ডেভিড মাইলস বলেন, অভিবাসন সাময়িকভাবে জনসংখ্যার বার্ধক্যের প্রভাব কমালেও এর সঙ্গে রয়েছে বেশ কিছু জটিল সমস্যা। অভিবাসীরা স্কুল, হাসপাতালসহ বিভিন্ন জনসেবা ব্যবহার করে এবং সময়ের সঙ্গে তারা ভাতা ও অন্যান্য সুবিধার জন্য যোগ্য হয়ে ওঠে।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, অভ্যন্তরীণ বেকারত্বের সমাধান ছাড়া অভিবাসনের ওপর অতিরিক্ত নির্ভরতা অর্থনৈতিক চাপ বাড়াবে। বিশেষ করে কোভিড-পরবর্তী সময়ে তরুণদের মধ্যে কাজের প্রতি অনীহা বেড়েছে, যা মোকাবিলা করতে না পারলে আর্থিক ঝুঁকি আরও বাড়বে। তার মতে, তরুণদের কর্মসংস্থানে ফিরিয়ে আনা হলে অর্থনীতিতে বিশাল সুবিধা আসবে।
ওবিআর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, স্বল্প আয়ের অভিবাসীরা রাষ্ট্রীয় পেনশনের বয়সে পৌঁছানো পর্যন্ত করদাতাদের জন্য নেট ক্ষতি, যা প্রত্যেকের ক্ষেত্রে প্রায় £১,৫০,০০০ পর্যন্ত দাঁড়ায়। এই তথ্যের ভিত্তিতে সংস্থাটি অভিবাসনকে অর্থনীতির জন্য আর আগের মতো সম্পূর্ণ ইতিবাচক হিসেবে দেখছে না।
২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত এক বছরে শুধুমাত্র ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের জনসংখ্যা ৭,০০,০০০ বৃদ্ধি পেয়েছে, যার মূল চালিকা শক্তি ছিল অভিবাসন। ফলে জনসেবা খাতে চাপ আরও বেড়েছে।
ডেভিড মাইলসের এই মন্তব্য এমন সময়ে এলো যখন লেবার পার্টি বাড়তি কল্যাণ ব্যয়ের জন্য সমালোচনার মুখে রয়েছে। বিদ্রোহী সংসদ সদস্যদের চাপের মুখে তারা কল্যাণভাতা সংস্কারের পরিকল্পনা শিথিল করেছে, যা অর্থনীতির ওপর বাড়তি বোঝা তৈরি করেছে।
ওবিআরের এই সতর্কবার্তা যুক্তরাজ্যের অভিবাসন নীতি ও জনসেবার ওপর নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। অর্থনীতিবিদদের মতে, বর্তমান প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে সরকারের জন্য জনসেবা খাতের ভারসাম্য রক্ষা করা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।
সূত্রঃ দ্য সান
এম.কে
০৫ আগস্ট ২০২৫