4.4 C
London
December 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)শীর্ষ খবর

বিনা নোটিশে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব বাতিলের ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে নতুন বিলে

যুক্তরাজ্যের ন্যাশনালিটি ও বর্ডার বিলে প্রস্তাবিত একটি পরিবর্তনের মাধ্যমের বিনা নোটিশে কোনো প্রকার সতর্কতা ছাড়াই লোকেদের ব্রিটিশ নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার ক্ষমতা পাবে সরকার।

 

গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিলটির ধারা ৯ অনুযায়ী– “একজন ব্যক্তিকে নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করার সিদ্ধান্তের নোটিশ” – নামে একটি বিষয় গতমাসে আপডেট হয়েছে। কর্তৃপক্ষ প্রয়োজন মনে না করলে, জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ালে, ডিপ্লোমেটিক কারণে অথবা জনস্বার্থে সরকারকে এই নোটিশ না প্রদানের ক্ষমতা দেয়।

 

সমালোচকরা বলছেন, সিরিয়ায় ইসলামিক স্টেটে যোগ দিতে স্কুল ছাত্রী হিসেবে ব্রিটেন থেকে পালিয়ে আসা শামীমা বেগমের ক্ষেত্রে নাগরিকত্ব অপসারণ করা ইতোমধ্যেই একটি বিতর্কিত ইস্যু। এবার নোটিশের প্রয়োজনীয়তা বাতিল করা স্বরাষ্ট্র সচিবের ক্ষমতাকে আরও কঠোর করে তুলবে।

 

ইনস্টিটিউট অব রেস রিলেশনসের ভাইস-চেয়ার ফ্রান্সেস ওয়েবার বলেছেন, এই সংশোধনীটির মানে হচ্ছে- কিছু নাগরিক, যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ ও বেড়ে ওঠা সত্ত্বেও এবং অন্য কোথাও বাড়ি না থাকায় তারা এই দেশে অভিবাসী রয়ে গেছেন৷ তাদের নাগরিকত্ব এবং সমস্ত অধিকার নিশ্চিত খুবই জরুরি।

 

তিনি আরও বলেন, এটি মূলত ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত দ্বৈত নাগরিকদের (যারা বেশির ভাগই জাতিগত সংখ্যালঘু) নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার পূর্ববর্তী পদক্ষেপের উপর ভিত্তি করে তৈরি। বিদেশে অবস্থানকালে ব্রিটিশ মুসলমানদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত পদক্ষেপগুলো এর অন্তর্ভুক্ত। এটি ক্ষমাহীনভাবে আন্তর্জাতিক মানবাধিকারের বাধ্যবাধকতা এবং ন্যায্যতার মৌলিক নিয়মগুলোকে লঙ্ঘন করে।”

 

২০০৫ সালের লন্ডন বোমা হামলার পরে ব্রিটিশ নাগরিকদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য হোম অফিসের ক্ষমতা বাড়ানো হয়। তবে এর প্রয়োগ বৃদ্ধি পায় ২০১০ থেকে, স্বরাষ্ট্র সচিব পদে থেরেসা মে থাকাকালে।

 

নোটিশ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা ২০১৮ সালে দুর্বল হয়ে যায়, একজন ব্যক্তির ফাইলে নোটিশের অপি রাখার মাধ্যমে হোম অফিসকে নোটিশ পরিবেশনের অনুমতি দেওয়া হয় – তবে শুধুমাত্র ওই ব্যক্তির অবস্থান অজানা থাকলেই এটি করা যেত।

 

নতুন ধারাটি বিভিন্ন পরিস্থিতিতে বিজ্ঞপ্তির প্রয়োজনীয়তাকে সম্পূর্ণভাবে সরিয়ে দেবে। ধারাটি আইনে পরিণত হওয়ার আগে কোনো ব্যক্তিকে বিনা নোটিশে নাগরিকত্ব ছিনিয়ে নেওয়া হয় এমন ক্ষেত্রে এটি পূর্ববর্তীভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম বলে ধরা হচ্ছে। এতে তাদের আপিল রাইট নিয়েও প্রশ্নের জন্ম দেয়।

 

রিপ্রিভের পরিচালক মায়া ফোয়া বলেছেন: “গোপনে আপনার নাগরিকত্ব অপসারণের অভূতপূর্ব ক্ষমতা প্রীতি প্যাটেলকে দেবে এই ধারাটি, এমনকি আপনাকে না বলেও কার্যকরভাবে আপনার আবেদন অস্বীকার করতে পারবে। এই শাসনের অধীনে, সড়কে স্পিডিংয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে ব্রিটিশ নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তির চেয়ে বেশি অধিকার দেওয়া হবে। এটা আবারও প্রমাণ করে যে এই সরকার আইনের শাসনের প্রতি কতোটা কম গুরুত্ব দেয়।

 

বিলে প্রস্তাবিত অন্যান্য পরিবর্তনগুলো ইতোমধ্যেই সমালোচনাকে আকৃষ্ট করেছে, যার মধ্যে বেআইনি পথে যুক্তরাজ্যে আগত কারও কাছ থেকে রেন্ডারিং ক্লেইম অগ্রহণযোগ্য। এছাড়া চ্যানেলে পুশোব্যাক অপারেশ চলাকালে কেউ নিহত হলে সেই দায় থেকে মুক্তি পাবেন বর্ডার ফোর্স কর্মীরা।

 

হোম অফিস বলেছে: “ব্রিটিশ নাগরিকত্ব একটি বিশেষ অধিকার, অগ্রাধিকার নয়। সুবিধাজনক কারণে নাগরিকত্ব বঞ্চিত করার বিষয়টি তাদের জন্য সংরক্ষিত, যারা যুক্তরাজ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ বা যাদের আচরণ খুব বেশি ক্ষতিকর।

 

১৮ নভেম্বর ২০২১
এনএইচ

আরো পড়ুন

আভা হোয়াইট হত্যাকাণ্ড: ভ্যানের ছবি প্রকাশ করল পুলিশ

স্টুডেন্ট ভিসার নামে যেভাবে চলছে ভয়াবহ প্রতারণা

অনলাইন ডেস্ক

আফগান পতাকা সরানোয় বিক্ষোভ, তালেবানের গুলিতে নিহত ৩

অনলাইন ডেস্ক