21.8 C
London
August 9, 2025
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

বিবিসির গোপন তদন্তে উন্মোচিত চ্যানেল পাচার চক্রের ফরাসি ও ব্রিটিশ নেটওয়ার্ক

বিবিসির মাসব্যাপী গোপন অনুসন্ধানে ইংলিশ চ্যানেল অতিক্রমে জড়িত একটি শক্তিশালী ও সহিংস পাচার চক্রের ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্যের নেটওয়ার্ক উন্মোচিত হয়েছে। ফ্রান্সের উত্তরাঞ্চলের ডানকার্কের জঙ্গলে এবং বার্মিংহামের নিউ স্ট্রিট স্টেশনে গোপনে ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে এই নেটওয়ার্কের কার্যক্রম ধরা পড়ে।

ফ্রান্সের জঙ্গলে গোপনে প্রবেশ করে প্রতিবেদক আবিষ্কার করেন, পাচারকারীরা সশস্ত্র সংঘর্ষ ও সহিংসতার মাধ্যমে তাদের আধিপত্য বজায় রাখছে। সেখানে গ্যাং সদস্য আবদুল্লাহকে দেখা যায় অভিবাসীদের নৌকার দিকে পরিচালিত করতে, একইসাথে নিজেকে অভিবাসী হিসেবে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করতে।

তদন্তে তিন প্রধান নেতাকে শনাক্ত করা হয়েছে – জাবাল, আরাম এবং আল-মিল্লাহ। তারা ইরাকি কুর্দিস্তান থেকে আগত এবং নেটওয়ার্কের বিভিন্ন শাখা নিয়ন্ত্রণ করে। আল-মিল্লাহ আর্থিক কার্যক্রমে নেতৃত্ব দেয়, আর জাবাল ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে লজিস্টিকস তদারকি করত।

বিবিসির অনুসন্ধানে জানা যায়, গ্যাংটির নাম বারবার পরিবর্তন করা হয়েছে – ‘দ্য মাউন্টেন’ থেকে শুরু করে ‘ঘালি ঘালি’, ‘আল-মিল্লাহ’ এবং সবশেষে ‘কাকা’। প্রতিবার নাম বদলে তারা পুলিশকে ফাঁকি দেয়।

তদন্তে আরও উঠে এসেছে, পাচারকারীরা বার্মিংহামে নগদ অর্থ সংগ্রহ করছে। নিউ স্ট্রিট স্টেশনে গোপন ক্যামেরায় ধরা পড়ে গ্যাংয়ের সহযোগীরা অভিবাসন ফি হিসেবে নগদ অর্থ গ্রহণ করছে। অর্থ স্থানান্তরে তারা মধ্যপ্রাচ্যের প্রচলিত ‘হাওয়ালা’ পদ্ধতি ব্যবহার করছে।

সহিংসতার নৃশংস চিত্রও প্রকাশিত হয়েছে। আল-মিল্লাহকে দেখা যায় সন্দেহভাজন এক সদস্যকে গাছে বেঁধে মারধর করতে। অভিবাসীদের অনেকেই জানান, গ্যাং সদস্যদের দ্বারা বন্দুকের মুখে হুমকি ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন।

তদন্তের সময় দেখা যায়, এপ্রিল ২০২৪-এ ফরাসি পুলিশ নৌকা আটকাতে গিয়ে পাঁচজন অভিবাসীর মৃত্যু ঘটে, যার মধ্যে ছিল সাত বছরের শিশু সারা। এর বাইরে আরও অন্তত সাতজন এই গ্যাংয়ের নৌকায় চ্যানেল পাড়ি দিতে গিয়ে প্রাণ হারিয়েছেন।

শেষ পর্যায়ে বিবিসির দল বার্মিংহামে গ্যাংয়ের সহযোগীদের সরাসরি মুখোমুখি হয়। সাংবাদিকরা পরিচয় প্রকাশ করলে পাচারকারী আতঙ্কিত হয়ে পালিয়ে যায়। ফোনে যোগাযোগ করলে আবদুল্লাহ প্রথমে অভিযোগ অস্বীকার করেন, পরে অর্থের প্রস্তাব দেন এবং শেষ পর্যন্ত ফোন কেটে দেন।

ফরাসি পুলিশ জানায়, পাচার চক্রগুলো সর্বদা এক ধাপ এগিয়ে থাকে এবং যতক্ষণ পর্যন্ত এই ব্যবসা লাভজনক, ততক্ষণ তারা কার্যক্রম চালিয়ে যাবে। বিবিসির অনুসন্ধান প্রমাণ করেছে, অভিবাসন ব্যবসার আড়ালে সহিংস গ্যাংগুলো মানুষের জীবন নিয়ে জুয়া খেলছে।

সূত্রঃ বিবিসি

এম.কে
০৭ আগস্ট ২০২৫

আরো পড়ুন

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের সঙ্গে যুক্তরাজ্য রাষ্ট্রদূতের সৌজন্য সাক্ষাৎ

রাজধানীতে গোডাউনে আগুন

মানবপাচারের অভিযোগে রোমানিয়ায় বাংলাদেশিসহ আটক ২১