TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

বেনিফিট নিলে বাতিল হবে স্থায়ী থাকার অধিকার, টোরিদের নতুন বিতর্কিত অভিবাসন নীতি

যুক্তরাজ্যে আইনগতভাবে স্থায়ীভাবে বসবাসরত অভিবাসীদের বহিষ্কার করা ‘মূলত দলের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ’ বলে মন্তব্য করেছে কনজারভেটিভ নেতা কেমি বাডেনকের কার্যালয়। সম্প্রতি টোরি এমপি কেটি ল্যাম যুক্তরাজ্যে “সাংস্কৃতিক ঐক্য” বজায় রাখতে বিপুল সংখ্যক বৈধ অভিবাসীকে দেশ থেকে বহিষ্কারের আহ্বান জানান। তার বক্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হলেও বাডেনকের মুখপাত্র জানিয়েছেন, ল্যামের অবস্থান “দলের বর্তমান নীতিরই প্রতিফলন।”

 

বাডেনকের মুখপাত্র বলেন, দলীয় পরিকল্পনা অনুযায়ী যেসব ব্যক্তি বেনিফিট গ্রহণ করেন, তাদের ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন’ (ILR) অধিকার বাতিল করা হবে। তবে এটি পেনশনভোগীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না। সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি স্বীকার করেন, মাতৃত্বকালীন ভাতা বা যৌথ পিতৃত্বকালীন ছুটি বাবদ অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে এই নীতি কীভাবে প্রযোজ্য হবে—তা এখনো স্পষ্ট নয়।

প্রধানমন্ত্রীর প্রশ্নোত্তর পর্বের পর তিনি আরও বলেন, “বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নির্ভর করবে কেউ কর ও বেনিফিটের দিক থেকে ‘নেট কন্ট্রিবিউটর’ কি না তার ওপর।” যদিও দলের আনুষ্ঠানিক নীতিতে বলা আছে, ILRধারী কেউ “যে কোনো ধরনের সামাজিক সুরক্ষা” গ্রহণ করলে সেটিই বহিষ্কারের কারণ হতে পারে।

সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে টোরি হুইপ ও হোম অফিসের ছায়ামন্ত্রী কেটি ল্যাম বলেন, যুক্তরাজ্যকে “সাংস্কৃতিকভাবে একতাবদ্ধ” রাখতে হলে অনেককে ILR স্ট্যাটাস হারাতে হবে। তার এই বক্তব্যের পর থেকেই বিরোধী দলসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো টোরিদের কঠোর সমালোচনা করছে।

বাডেনকের মুখপাত্র অবশ্য বলেন, “তার কিছু মন্তব্য প্রসঙ্গ থেকে বিচ্ছিন্নভাবে নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেছেন, অনেক মানুষ আইনি পথে এই দেশে এসেছেন, কিন্তু আসলে তাদের আসার অনুমতি দেওয়া উচিত ছিল না।” মুখপাত্রের দাবি, “ল্যামের বক্তব্য মূলত দলের বর্তমান নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, এবং এটি কনজারভেটিভ পার্টির অবস্থান।”

নতুন প্রস্তাবিত টোরি নীতিতে বলা হয়েছে, যাদের আয় ছয় মাসের বেশি সময় ধরে £38,700-এর নিচে থাকবে, বা যারা অপরাধ করবে, কিংবা বেনিফিট গ্রহণ করবে—তাদের ILR বাতিল করা হতে পারে। সাংবাদিকদের প্রশ্নে মুখপাত্র বলেন, “সবসময় কিছু ব্যতিক্রম থাকবে, তাই নীতি সতর্কতার সঙ্গে তৈরি করতে হবে যেন পুরোপুরি অন্যায্য পরিস্থিতি না হয়।”

ব্রিটিশ নাগরিক স্বামী বা সন্তান থাকা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও এই নীতি প্রযোজ্য হবে কিনা—এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “এ বিষয়ে আমরা পরে জানাব।”

বিরোধী লেবার পার্টির চেয়ার আন্না টারলি এই প্রস্তাবকে “অমানবিক ও বিকৃত চিন্তা” বলে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, “আইনগতভাবে এখানে থাকার অধিকার থাকা মানুষদের সাংস্কৃতিক ঐক্যের নামে বহিষ্কার করা মানে পরিবার ছিন্ন করা ও সমাজ থেকে প্রতিবেশীদের উপড়ে ফেলা। এটা দেখায়, টোরি পার্টি কতটা নিচে নেমে গেছে।”

কনজারভেটিভ পার্টির পক্ষ থেকে অতিরিক্ত মন্তব্যের জন্য যোগাযোগ করা হলেও তারা এ বিষয়ে আর কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে

আরো পড়ুন

হুতিদের সাথে শত্রুতায় মন্দার শঙ্কা যুক্তরাজ্যে

যুক্তরাজ্যে সাংস্কৃতিক কর্মীদের ভিসা প্রত্যাখ্যানের হার বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে

যুক্তরাজ্যে এক শিশুর চিকিৎসা প্রত্যাহার মামলায় তথ্য গোপনের ঘটনায় বিচারকের তীব্র নিন্দা