2.2 C
London
November 23, 2024
TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

ব্রিটেনে অমানবিক আচরণ ও যৌন হয়রানির শিকার নারী আশ্রয়প্রার্থীরাঃ প্রতিবেদন

যুক্তরাজ্যে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য নিবেদিত হোটেলগুলোতে নারী আশ্রয়প্রার্থীরা অমানবিক আচরণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন বলে এক প্রতিবেদনে দাবি করেছে ব্রিটেন ভিত্তিক সংগঠন উইমেন ফর রিফিউজি উইমেন (ডব্লিউআরডব্লিউ)।

আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য আবাসন ঘাটতি বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষ অনেক নারী আশ্রয়প্রার্থীকেও হোটেলে রাখছে৷ অধিকার সংগঠন উইমেন ফর রিফিউজি উইমেন সরকারকে তা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।

সংস্থাটির দাবি, হোটেলগুলোতে নারী আশ্রয়প্রার্থীরা কর্মীদের মাধ্যমে যৌন হয়রানি ও বিভিন্ন অমানবিক আচরণের শিকার হয়ে থাকেন৷

দাতব্য সংস্থাটির একটি দল সাত নারী আশ্রয়প্রার্থীর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন তৈরি করেছে৷ প্রতিবেদনটির শিরোনাম, “জবরদস্তি এবং নিয়ন্ত্রণ: হোটেলগুলোতে আশ্রয়প্রার্থী নারীদের প্রতি আচরণ৷’’

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নারীর প্রতি সহিংসতার কারণে অনেক আশ্রয়প্রার্থী নিজ দেশ থেকে পালিয়ে এসেছেন৷ ব্রিটেনে তাদের যে হোটেলে রাখা হয়েছে সেখানেও তাদের সঙ্গে জবরদস্তিমূলক আচরণ ও তাদের নিয়ন্ত্রণ করা হয়, যা দুঃখজনক৷

প্রতিবেদনে যেসব বিষয়গুলো উঠে এসেছে সেগুলো হলো :

নারীদের উপর নিয়মিত নজরদারি এবং পর্যবেক্ষণ

হোটেল কর্মীদের অবমাননাকর আচরণ৷ যেমন: যৌন হয়রানি, কক্ষে অনুপ্রবেশ এবং কেন্দ্র থেকে বের হতে বাধা প্রদান, শাস্তিমূলক পদক্ষেপের হুমকি৷

সহায়তা কার্যক্রম থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা।

প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, হোটেলগুলোর জীবনযাত্রার চাপ নারীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ‘অত্যন্ত ক্ষতিকর’ প্রভাব ফেলেছে। এ নিয়ে একটি জরিপ চালিয়েছে তারা৷ জরিপে অংশ নেওয়াদের ৯১ শতাংশ বিষণ্ণতায় ভোগেন এবং ৭৫ শতাংশ হতাশাগ্রস্ত৷

প্রতিবেদনে সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা আশ্রয়াপ্রার্থী নারীদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে৷ বলা হয়েছে, “হোটেলগুলোতে নারীদের প্রতি আচরণকে পাখির খাঁচার সাথে তুলনা করা যেতে পারে৷ খাঁচার পাখি যেমন যেখানে ইচ্ছা সেখানে উড়তে পারে না তেমনভাবে এখানেও নারীরা নিজের ইচ্ছামত জীবনযাপন থেকে বঞ্চিত হন৷’’

এসব বিষয় নারীদের আত্মসম্মান এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলে৷ উইমেন ফর রিফিউজি উইমেন (ডব্লিউআরডব্লিউ) নেটওয়ার্কের সাতজন সদস্য এই প্রতিবেদনটি তৈরী করেছেন৷ তাদের মধ্যে তিনজনের হোটেলে থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে৷ তারা ২০২৪ সালের এপ্রিল থেকে জুলাইয়ের মধ্যে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে বসবাসরত নারীদের অভিজ্ঞতার উপর একটি অনলাইন সমীক্ষা চালিয়ে এসব তথ্য সংগ্রহ করেন৷

মোট ৬২ জন নারী শরণার্থী ও আশ্রয়প্রার্থী জরিপে অংশগ্রহণ করেন। এর বাইরে তারা জুলাই মাসে ১০ জনের সরাসরি সাক্ষাৎকার নিয়েছেন।

ডব্লিউআরডব্লিউ এর প্রতিবেদন সম্পর্কে ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে জানতে চায় ইনফোমাইগ্রেন্টস৷ মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, “এগুলো গুরুতর অভিযোগ এবং আমরা জরুরি ভিত্তিতে এ ব্যাপারে তদন্ত করবো৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আশ্রয় ব্যবস্থায় কর্মীদের মাধ্যমে অন্যায় বা অপরাধের অভিযোগকে খুব গুরুত্ব সহকারে নেয়৷’’

মুখপাত্র আরও যোগ করেন, “আশ্রয়প্রার্থীদের ‘আটক’ রাখা হয় না৷ তারা তাদের বাসস্থান ছেড়ে বাইরে যেতে পারেন৷ তাদের উপর কোনো ধরনের কারফিউ আরোপ করা হয় না৷ আমাদের আবাসন ব্যবস্থায় কর্মরতদের আচরণের সব ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত হয়ে থাকে।”

সূত্রঃ ইনফোমাইগ্রেন্টস

এম.কে
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

যুক্তরাজ্য ভ্রমণের নতুন গাইডলাইনে যা বলা হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক

বার্ড ফ্লু সংক্রমণের শিকার যুক্তরাজ্য

বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক প্রচারণায় লন্ডনের এক ব্যক্তির কারাদণ্ড

নিউজ ডেস্ক