ব্রিটেনে প্রস্তাবিত ‘অবৈধ অভিবাসন আইন’-এর ফলে আরো বেশি অভিবাসী অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হবেন। বিরাট অঙ্কের বিল, আটকের ভয়, নির্বাসনের ভয় আরো বেশি করে চেপে ধরবে তাদের। একাধিক দাতব্য সংস্থা এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা এ কথা বলেছেন।
অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে বড় পদক্ষেপ নিয়েছে যুক্তরাজ্য। চলতি বছরের ৭ মার্চ, দেশটির সংসদে একটি নতুন ‘অবৈধ অভিবাসন বিল’ পেশ করা হয়েছে।
এই আইনের প্রস্তাবে বলা হয়, ইংলিশ চ্যানেল জুড়ে আসা ছোট নৌকায় এবং অন্যান্য সম্ভাব্য অভিবাসন রুট দিয়ে আসা সব অনিয়মিত অভিবাসীকে যুক্তরাজ্যে আশ্রয়ের জন্য ‘অযোগ্য’ ঘোষণা করা হবে।
অভিবাসীদের আশ্রয় কাঠামোতে প্রবেশ করার পরিবর্তে ফৌজদারি আইনের অধীন রাখা হবে। যা তাদের আটক এবং তাদের নিজ দেশে বা নিরাপদ তৃতীয় দেশে পাঠানো হবে এবং যুক্তরাজ্যে পুনরায় প্রবেশ নিষিদ্ধ করবে।
দাতব্য সংস্থাগুলি মনে করছে, এর ফলে অভিবাসীদের বিনামূল্যে স্বাস্থ্যসেবা পেতে সমস্যা হবে। অস্ত্রোপচার বা মাতৃত্বকালীন যত্নের ক্ষেত্রেও সমস্যা হবে বলে জানিয়েছেন কল্যাণমূলক সংস্থার কর্মীরা।
দাতব্য সংস্থা রিফিউজি অ্যাকশন পলিসি এবং রিসার্চ ম্যানেজার তারা পোভে বলেন, “এর ফলে একটি বিশাল স্বাস্থ্য সংকট আসতে চলেছে। পাশাপাশি, একটি মানসিক স্বাস্থ্য সংকটও আসবে।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্রের দাবি, “প্রাথমিক চিকিৎসা, দুর্ঘটনা এবং জরুরি চিকিৎসায় সবার জন্য বিনামূল্যে দেয়া হবে। অসহায় মানুষদের চিকিৎসার সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।”
তিনি বলেছেন, ব্রিটেনের ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস (এনএইচএস) এর অধীনে অভিবাসন অবস্থা নির্বিশেষে প্রাথমিক চিকিৎসা সবাই বিনামূল্যে পাবেন।
কিন্তু কোনো কোনো ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার, মাতৃত্বকালীন যত্নসহ সেকেন্ডারি কেয়ারের জন্য অর্থ দিতে হতে পারে। স্কটল্যান্ড এবং ওয়েলসে, অন্যান্য বাসিন্দাদের মতো তারা বিনামূল্যে ‘সেকেন্ডারি কেয়ার’ পাবেন।
যে ব্যক্তিদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে এবং যারা আবেদন করছেন, তারা বিনামূল্যে ‘সেকেন্ডারি কেয়ার’ পাবেন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের থিঙ্ক-ট্যাঙ্ক দ্য পিউ রিসার্চ সেন্টার অনুযায়ী, ব্রিটেনে ১২ লাখ পর্যন্ত অননুমোদিত অভিবাসী রয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রত্যাখ্যাত আশ্রয় আবেদনকারী এবং ভিসার মেয়াদ শেষের পরেও রয়ে যাওয়া অভিবাসীদের অন্তর্ভুক্ত করেছে তারা।
এই লোকেদের অনেকেই চিকিৎসা সহায়তা এড়িয়ে যান বলে জানিয়েছে দাতব্য সংস্থাগুলি।
রিটা ডি’আলেসিও বিনামূল্যে লন্ডনে একটি ক্লিনিক এবং হেল্পলাইন চালান। তিনি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “এমন কিছু লোক আছে যারা বছরের পর বছর ধরে ডাক্তার দেখায়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রিপোর্ট যাবে এই ভয় থেকে এমন সিদ্ধান্ত নেন এই অভিবাসীরা।”
দাতব্য সংস্থার আশঙ্কা, এই বছরের শেষের দিকে অভিবাসন বিলটি আইনে পরিণত হবে। তখন সেই সংখ্যা আরো বাড়বে।