ভারতে মোদি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই মুসলিমদের উপর সহিংসতার ঘটনা বাড়ছে। এবার ২ লাখ মুসলমানকে ‘জবাই করে’ হত্যার হুমকি দিলেন এক ক্ষমতাসীন বিজেপি’র নেতা। সম্প্রতি দিল্লিতে এক মন্দিরের কাছে একটি গরুর মাথা পাওয়া যায়। এ ঘটনায় মুসলিমদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করে ওই নেতা এমন হুমকি দেন। তার এই হুমকি দেয়ার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি সাম্প্রদায়িক সংবেদনশীলতার মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে, বিভিন্ন মহল থেকে ব্যাপক নিন্দা করা হয়েছে। সমালোচকরা সিংয়ের বিবৃতিকে এই অঞ্চলে উস্কানিমূলক এবং সম্ভাব্য ধর্মীয় বিভেদ বাড়াতে পারে বলে নিন্দা করেছেন।
ঘটনাটি ভারতে চলমান সাম্প্রদায়িক উত্তেজনাকে নির্দেশ করে, যেখানে গরু সম্পর্কিত বিষয়গুলি, যা হিন্দু ধর্মে পবিত্র বলে বিবেচিত হয়, প্রায়শই আবেগপূর্ণ বিতর্কের জন্ম দেয় এবং মাঝে মাঝে হিংসাত্মক সংঘর্ষের দিকে নিয়ে যায়। ধর্মীয় উত্তেজনা আরও বৃদ্ধি রোধ করতে এবং এই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ এবং সম্প্রদায়ের নেতাদের দ্রুত পরিস্থিতি মোকাবেলা করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ভারতে হিন্দুদের কাছে গরুকে পবিত্র প্রাণী মনে করা হয়। গরু জবাই ভারতে আগেই বেশ সংবেদনশীল বিষয় ছিল। কিছু কিছু রাজ্যে গরু জবাই নিষিদ্ধও। তবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল বিজেপি ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পর এই বিষয় নিয়ে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়েছে।
ক্ষমতায় যাওয়ার পর থেকে ভারতে বিজেপি নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকারগুলোর গরু জবাইয়ের বিরুদ্ধে কড়া অভিযান চালিয়েছে। ভারতের ২৮টি রাজ্যের দুই-তৃতীয়াংশের বেশিতেই গরু জবাই এখন নিষিদ্ধ। এগুলোর অধিকাংশ রাজ্যের সরকারই বিজেপি নিয়ন্ত্রিত। হরিয়ানাও সেরকমই একটি রাজ্য। এসব রাজ্যে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে গো-রক্ষকরা ব্যাপক সহিংসতা অবলম্বন করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের মারধোরের শিকার হয় সাধারণত মুসলিম মাংস আর গরু ব্যবসায়ীরা। নরেন্দ্র মোদী অতীতে এসব গো-রক্ষকদের সমালোচনা করেছেন। তবে তারপরও এরকম বহু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, যেগুলো তুমুল আলোড়ন তোলে ভারতে।
সূত্রঃ আল-জাজিরা
এম.কে
২৯ জুন ২০২৪