দিল্লির রাতের ঘুম কেড়ে নিয়ে পাকিস্তানের বিমানবাহিনীকে জেড-১০এমই হেলিকপ্টার দিচ্ছে চীন। দক্ষিণ আফ্রিকায় একটি প্রতিরক্ষা প্রদর্শনীতে চীন নতুন জেড-১০এমই আক্রমণকারী হেলিকপ্টার প্রদর্শন করেছে। যার ওজন প্রায় ৬ টন।
এই যানটি এমনভাবেই তৈরি হয়েছে যাতে সব আবহাওয়ায় উড়তে পারে। আর এটি একটি বহুমুখী মাঝারি আক্রমণকারী হেলিকপ্টার। জানা গিয়েছে, খুব শীঘ্রই এই হেলিকপ্টারের প্রথম ব্যাচ পাকিস্তানি বিমানবাহিনীকে দেবে চীন। যাতে পাকিস্তান সন্ত্রাস-বিরোধী মিশনে এই হেলিকপ্টারকে কাজে লাগাতে পারে।
জেড-১০এমই অ্যাটাক হেলিকপ্টারটি তৈরি করেছে এভিয়েশন ইন্ডাস্ট্রি কর্পোরেশন অফ চায়না লিমিটেড। এর মৌলিক মডেল তৈরি করেছে জেড-১০ চীনা কোম্পানি এবং রাশিয়ার কামভ মিলিতভাবে। রাশিয়া ও চীন উভয়ের যৌথ প্রয়াসে তৈরি করা হয়েছে এই সন্ত্রাসী অ্যাটাক হেলিকপ্টার।
এই হেলিকপ্টারের মূল উদ্দেশ্য অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ওয়ারফেয়ার এবং এয়ার-টু-এয়ার কমব্যাট। তবে শুধু সন্ত্রাস দমন নয়, এটি বিভিন্ন উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারে। এর দৈর্ঘ্য ৫২.৯১ ফুট, উচ্চতা ১৪.৪৬ ফুট এবং ফ্যানের ব্যাস ৪৪.২৯ ফুট। টেকঅফের সময় এর সর্বোচ্চ ওজন ৬,০০০ কেজি। এটি সর্বোচ্চ ২৫৯ কিমি/ঘন্টা গতিতে উড়তে পারে। সর্বোচ্চ ৪,৪০০ মিটার উচ্চতায় পৌঁছতে পারবে এই হেলিকপ্টারটি।
এর পরিসীমা ৮৫৫ কিলোমিটার। সর্বোচ্চ সাড়ে তিন ঘণ্টা আকাশে উড়তে পারে। এতে ইনস্টল করা হয়েছে নতুন ইঞ্জিন ডব্লিউজেড-৯জি, যেটি ১৫০০ হর্স পাওয়ার দেবে। যার ফলে হেলিকপ্টারটি প্রবল বাতাস বয়ে চলা পরিবেশেও ভারসাম্য বজায় রেখে উড়তে পারে। এর ফুসেলেজ এবং ককপিটের চারপাশে একটি বিশেষ ধরনের অতিরিক্ত বর্ম স্থাপন করা হয়েছে।
এই হেলিকপ্টারটি ইনফ্রারেড এবং আল্ট্রাভায়োলেট অ্যালার্ম, লেজার কাউন্টারমেজার, ইনফ্রারেড জ্যামিং সিস্টেম এবং মিসাইল অ্যাপ্রোচ ওয়ার্নিং সিস্টেমের মতো কাউন্টারমেজার সিস্টেম দিয়ে সজ্জিত। যাতে যেকোনও ধরনের বিপদ আগে থেকেই টের পেয়ে যায় হেলিকপ্টারটি।
ইলেকট্রনিক যুদ্ধে সাহায্য করার জন্য ইলেকট্রনিক জ্যামিং পডও এতে ইনস্টল করা যেতে পারে। এমনকী এটিকে একটি ২৩ মিমি কামান দিয়ে সজ্জিত করা হয়েছে। এর চারটি বাহ্যিক হার্ডপয়েন্ট রয়েছে। এর ডিজাইন এমন যে এতে অনেক ধরনের অস্ত্র লাগানো যেতে লাগলো। তালিকায় রাখা যেতে পারে, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল, এয়ার-টু-এয়ার মিসাইল, এয়ার-টু-সার্ফেস, এয়ার-টু-গ্রাউন্ড, বন্দুক পড, গাইডেড বোমা, ছোট ড্রোনও।
এছাড়াও ১৬ টি অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র, চারটি ৭-ব্যারেল রকেট লঞ্চার এবং দুটি ৩২-ব্যারেলযুক্ত রকেট লঞ্চার প্যাড লাগানো যেতে পারে। এছাড়াও জিবি-২৫/৫০ গাইডেড বোমা এবং ৫৭ মিমি এয়ার-টু-এয়ার আনগাইডেড রকেট স্থাপন করা যেতে পারে। এসডব্লিউ-৬ ড্রোন এবং সিএম-৫০১এক্সএ বোমা মোতায়েন করতে পারে।
তবে পাকিস্তান সীমান্তে এই হেলিকপ্টার মোতায়েন করলে ভারতের রাজধানী দিল্লির ঘুম উড়বে বলে মনে করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা। ভারতীয় বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারদের বিরুদ্ধে এই হেলিকপ্টারটি সীমান্তে মোতায়েন করতে পারে পাকিস্তান। পাকিস্তান কোন কারণে, ভারতের বিরুদ্ধে এই হেলিকপ্টারগুলো ব্যবহার করলে, ভারতের জন্য তা ভয়াবহ রূপ ধারণ করতে পারে বলে মনে করেন সামরিক বিশ্লেষকেরা।
সূত্রঃ হিন্দুস্তান টাইমস
এম.কে
২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪