যুক্তরাজ্যে সরকারী তথ্য অনুযায়ী স্কিলড ওয়ার্কার ভিসায় শেফ বাকি সকল পেশাকে পেছনে ফেলেছে।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের বিশ্লেষণ অনুযায়ী ২০২৪ সালে ব্রিটেনে আগত অভিবাসীদের ৬,২০৩ জন শেফ পেশায় আবেদন করেছেন যা বিগত বছরের চেয়ে প্রায় ৫৪% বেশি। তথ্যমতে জানা যায়, ২০২৩ সালে প্রায় তিন হাজার লোককে শেফ পেশায় দক্ষ শ্রমিক ভিসা দেওয়া হয়েছিল।
একই সময়ে, দক্ষ প্রোগ্রামার এবং সফ্টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারদের দেওয়া ওয়ার্ক পারমিটের সংখ্যা হ্রাস লক্ষ্য করা যায়। পরিসংখ্যানে দেখা যায় আইটি সেক্টরে স্কিলড ওয়ার্কার রুটে গত বছরের হিসাবে ৮,৭৫২টি হতে ওয়ার্ক পারমিটের সংখ্যা ৪,২৮০টিতে পৌঁছেছে।
যুক্তরাজ্যের পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যানুযায়ী ইমিগ্রেশনের হার স্টুডেন্ট ভিসা হতে স্কিলড ওয়ার্কার ভিসায় আবেদন বৃদ্ধি পেয়েছে। স্টুডেন্ট ভিসায় কঠিন নিয়মের কারণে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের মধ্যে যুক্তরাজ্য বিমুখতা দেখা যায়, যারফলে আবেদনের হার কমেছে বলে জানা যায় । ২০২৪ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত ৬৭,৭০৩ জনকে স্কিলড ওয়ার্কার রুটে ভিসা প্রদান করেছে হোম অফিস। যা গত বছরের তুলনায় শতকরা হিসাবে প্রায় ২ ভাগ কম।
বিজনেস কনসালটেন্ট পেশায় স্কিলড ভিসা আবেদন ও অনুমোদনের হিসাবে ৪২ ভাগ হ্রাস পেয়েছে গত বছর হতে। ফাইন্যান্স ও ইন্সুরেন্স সেক্টরে হ্রাস পেয়েছে ৩৫% এবং সাইন্স ও ট্যাকনিকেল অনুষদে ৩৬% হ্রাস হয়েছে বলে পরিসংখ্যান বিভাগের তথ্যে জানা যায়।
ভিসা আবেদনে এক ধরনের তাড়াহুড়ো লক্ষ্য করা গিয়েছে যখন নন-ইউকে নাগরিকদের জন্য নতুন আইন বাস্তবায়নের দ্বারপ্রান্তে ছিল। ভিসা ফি’স ও নূন্যতম বার্ষিক মজুরি উভয়েই বৃদ্ধি করা হয়েছে বিধায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান দ্রুততার সাথে আবেদন করেছিল, যদিও ভিসা রিফিউজের হারও বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে।
অতি সাম্প্রতিক ওএনএসের তথ্য অনুসারে, এপ্রিল ২০২৩ সালে একজন শেফের গড় বার্ষিক বেতন ছিল ২২,৮৭৭ পাউন্ড। যা বৃদ্ধি করে ৩৮,৭০০ পাউন্ড বা কম বয়সী কর্মীদের জন্য ৩০,৮০০ পাউন্ড নির্ধারণ করা হয়।
যুক্তরাজ্য সরকার ভিসার নিয়ম পরিবর্তন করার মূল কারণ ছিল অভিবাসনের গতিরোধ করা। এই আইন পরিবর্তন হিসাবে কেয়ার ওয়ার্কার কিংবা স্টুডেন্ট ভিসায় কেউ তাদের ডিপেন্ডেন্ট আনতে পারবে না বলে নিয়ম করা হয়। গত সপ্তাহে ওয়ার্ক ও পেনশন সেক্রেটারি জানিয়েছিলেন, প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদে দ্রুতগতিতে ব্রিটিশ নাগরিকদের কাজে নেয়ার জন্য প্রতিষ্ঠানগুলোর উপর জোর প্রদান করেছে যুক্তরাজ্য সরকার।
উল্লেখ্য যে, বহুবছর হতে কর্মীদের সংকটে রেষ্টুরেন্ট ব্যবসা চরম বিপদসংকুল অবস্থায় রয়েছে। তাই রেষ্টুরেন্ট ব্যবসায়ীরা সংকট কাটিয়ে উঠতে শেফ ও রেষ্টুরেন্ট সেক্টরে ভিসা সিস্টেমে সহজ করার দাবি দীর্ঘদিন হতে জানিয়ে এসেছে। ২০১৯ সালে তৎকালীন স্বরাষ্ট্রসচিব প্রীতি প্যাটেল ভিন্ডালু ভিসা চালু করার কথা জানিয়েছিলেন। যদিও তা সফলতার মুখ দেখে নাই বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। যার কারণে শ্রমিকের ঘাটতি হসপিটালিটি সেক্টরে ব্যবসায়ীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ নিয়ে এসেছে।
সূত্রঃ ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস
এম.কে
২৭ মে ২০২৪