12.5 C
London
December 18, 2024
TV3 BANGLA
বাংলাদেশ

ভিসানীতি লঙ্ঘন করে কলকাতার মিডিয়ার মুখোমুখি চিন্ময়ের আইনজীবী

জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় জেলে আছেন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোট’-এর মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। আগামী ২ জানুয়ারি চট্টগ্রাম আদালতে আবারো তার জামিন আবেদনের শুনানি হবে। এর আগেই সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) ‘ভারতীয় ভিসানীতি লঙ্ঘন করে’ দেশটির মিডিয়াতে চিন্ময় ইস্যুতে কথা বলেছেন বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ।

আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে দিনভর ইন্টারভিউ দেওয়ার পাশাপাশি রাতের টক শো-তেও লাইভে যুক্ত হচ্ছেন। জানা গেছে, মেডিকেল ভিসায় ভারতে ছেলের বাড়িতে উঠেছেন। রবীন্দ্র ঘোষের দাবি, তিনি বাংলাদেশি হলেও তার ছেলে ভারতের নাগরিক। একইসঙ্গে স্বীকার করেছেন, তার পরিবারের সদস্যরাও ভারতে থাকেন। ছেলের রয়েছে বিলাসবহুল বাড়ি। তবে জানাননি, কীভাবে তার ছেলে পরিবারসহ ভারতের নাগরিকত্ব পেলেন।

বাংলাদেশে ইসকন থেকে ‘বিতাড়িত’ ধর্মগুরু চিন্ময় কৃষ্ণের আইনজীবীদের গণহারে গ্রেপ্তার ও নিগৃহীত করা হচ্ছে- এমন সব মিথ্যা খবরে বেশ কিছুদিন ধরেই সয়লাব ভারতীয় গণমাধ্যম। এসব বিষয়েই ভারতীয় মিডিয়ার তরফ থেকে তার কাছে প্রশ্ন করা হয়।

নিজেকে ‘মুক্তিযোদ্ধা’ বলা আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ কলকাতার ব্যারাকপুর আনন্দপুরির সি রোডের চয়নিকা অ্যাপার্টমেন্টের দ্বিতীয় তলায় বসে দাবি করেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ নেওয়ার পর ‘সঠিক বিচার’ পাবেন। তার আরো দাবি, বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ট্রাম্প প্রশাসনকে ভয় পাচ্ছে। কেন ভয় পাচ্ছে, এমন প্রশ্নে রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘যদি ভারত-আমেরিকা মিলেমিশে সমস্যা তৈরি করে, সেই কারণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ভয় পাচ্ছে। আমার সঙ্গে আগে যে ধরনের ব্যবহার করত, গতকালের (১৫ ডিসেম্বর) ব্যবহার দেখলাম সেই তুলনায় ভালো।’’

বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে কি না, এ প্রসঙ্গে রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘এখন বোঝা বড় কষ্ট। কারণ, সরকার মনে হচ্ছে দু-তিনটি, কেউ কারো কথা মানছে না।’’

ভারতীয় গণমাধ্যমের কাছে একটি ‘গোপন তথ্য’ ফাঁস করেছেন এই আইনজীবী। তিনি বলেছেন, ‘‘ঈর্ষান্বিত হয়ে ইসকনের সাধুরাই চিন্ময় কৃষ্ণের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন।’’ তার দাবি, বাংলাদেশের সবাই চিন্ময়কে ভালোবাসেন।

রবীন্দ্র ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করব উনাকে (চিন্ময় কৃষ্ণ) জেলমুক্ত করতে। ঈর্ষা না থাকলে এত সামান্য যুক্তি থাকত না। দেশদ্রোহিতার যে মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের পতাকাকে বলা হচ্ছে নিচে; কিন্তু ওটা বাংলাদেশের পতাকাই নয়। যে ধারায় আটক করা হয়েছে, সেগুলো ‘বিশ্রী ও মিথ্যা’, জামিনযোগ্য নয়। এটা ফাঁসাতে করা হয়েছে। চক্রান্ত হল, উনার সুনাম হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশে লাখ লাখ লোক জমায়েত হচ্ছে। অধিকারের প্রশ্নে অধিকারের কথা বলতে গিয়ে, উনি শুধু বলেছেন হিন্দুদের অধিকার তোমরা দাও। উনাকে ভাত ওষুধ দিতে গিয়েছিল দুজন সন্ন্যাসী। তাদেরও আটক করা হয়েছে। স্থানীয়দের কথা হচ্ছে, কপালে তিলক, সিঁদুর; এগুলো সব হচ্ছে শত্রু, ইসলামের দুশমন।’’

তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রগতিশীল লোকগুলো এখন প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে গেছে। আগে যারা দেখলে দাদা কেমন আছেন জিজ্ঞেস করতেন, এখন তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়। ভারত কেন ইসরায়েলের সাথে সম্পর্ক রাখবে, গুজরাট দাঙ্গায় নরেন্দ্র মোদি কেন মুসলিম লোক মেরে ফেলেছেন— তারা সব সময় এই কথা বলে। আমরা জানি, চিন্ময় কৃষ্ণকে মুক্তি দেওয়া হবে না। হাইকোর্টে যেতে হবে, সুপ্রিম কোর্টে যেতে হবে। আমরা শেষ পর্যন্ত যাব।’’

সম্প্রতি ইলিশ মাছ রপ্তানি ইস্যুতে এই আইনজীবী বলেন, ‘‘বাংলাদেশ বলছে ভারতকে ইলিশ দেবে না। আচ্ছা ইলিশের জন্য কী তারা বসে থাকে? ইলিশ মাছ খেতে হবে এমন কোনো কথা আছে? ইলিশ দেবে না, কলকাতা পর্যন্ত দখল করে নেবে- এসব কথার কোনো দরকার আছে? যা বলেছে, এরা ছোটলোক, লেখাপড়া জানে না।’’

এম.কে
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

সরকারের পদত্যাগের পর জাতীয় সরকার গঠনের দাবি আন্দোলনকারীদের

সাবেক সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রী ও সাবেক বিমান প্রতিমন্ত্রী গ্রেফতার

জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও ৫ সদস্যের পদত্যাগ