রাজশাহীতে ভোটার হতে গিয়ে ‘পাগলে’র তালিকায় নাম উঠেছে ১২৫ তরুণ-তরুণীর। আবেদনকারীদের নামের তথ্যের বিপরীতে ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ বা পাগল উল্লেখ থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না।
রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজ থেকে সদ্য পড়াশোনা শেষ করেছেন উম্মে হাবিবা। কিছুদিন আগে নিজ গ্রাম বাগমারায় গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম লেখান।
করেন অনলাইন ফরম পূরণ। তবে জাতীয় পরিচয়পত্র পাননি। খোঁজ নিয়ে হাবিবা জানতে পারেন, তার নামের তথ্যের বিপরীতে ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ বা পাগল উল্লেখ থাকায় জাতীয় পরিচয়পত্র হচ্ছে না। স্থানীয় নির্বাচন অফিস তাকে ডেকে নিয়ে একটি প্রত্যয়ন দিয়েছে যে, তিনি পাগল নন।
উম্মে হাবিবা বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার হওয়ার আবেদন করেছিলাম। কীভাবে ভুল হলো জানি না। ’
হাবিবার বাবা কাচারি কোয়ালীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক জানান, তার মেয়ে মেডিকেল কলেজ থেকে পড়াশোনা শেষ করেছে। উপজেলা নির্বাচন অফিসে গিয়ে ভোটার তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্তির জন্য আবেদন করে।
অথচ তার মেয়েকে দেখানো হচ্ছে অপ্রকৃতিস্থতা বা পাগল।
হাবিবার মতো রাজশাহীতে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদনে ভুল থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন ১২৫ তরুণ-তরুণী। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারে এসব নতুন ভোটারের ব্যক্তিগত তথ্যের বিপরীতে ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ বা পাগল উল্লেখ থাকায় তারা জাতীয় পরিচয়পত্র হাতে পাচ্ছেন না।
রাজশাহী জেলা নির্বাচন অফিসের তথ্য মতে, রাজশাহী জেলায় ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ (পাগল) তালিকায় আছেন ১২৫ জন। নির্বাচন অফিস সূত্রে জানা যায়, নতুন ভোটার হওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেখানে আবেদনকারীর বিভিন্ন ধরনের তথ্য চাওয়া হয়। ‘অন্যান্য তথ্য’ অংশে ‘অসমর্থতা’ শিরোনামে একটি ছক আছে। এই ছকে মূলত দৃষ্টি, শারীরিক, শ্রবণ ও বাকপ্রতিবন্ধিতা, দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা ও অপ্রকৃতিস্থতা বিষয়ে তথ্য চাওয়া হয়। অনেকে না বুঝে সেখানে ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ নির্বাচন করেন। ফলে ডেটাবেজে তাদের তথ্যে ‘অপ্রকৃতিস্থতা’ উল্লেখ করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলা নির্বাচন অফিসার আবুল হোসেন বলেন, কোনো অপ্রকৃতিস্থ বা পাগল ভোটার হতে পারবেন না। তিনি বলেন, শুধু রাজশাহীতেই নয়, সারা দেশে অন্তত ১০ হাজারেও বেশি অপ্রকৃতিস্থ বা পাগল ভোটার পাওয়া গেছে। অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের ডেকে নিয়ে এসে আবার সংশোধনের জন্য ঢাকায় পাঠাচ্ছি।