TV3 BANGLA
যুক্তরাজ্য (UK)

যুক্তরাজ্য সরকার আগামী মাসে হতে ই-ভিসা ব্যবস্থা চালুর কার্যক্রম স্থগিত করবেঃ রিপোর্ট

ই-ভিসা সিস্টেমের ত্রুটির কারণে যুক্তরাজ্যের বাসিন্দারা বিদেশে আটকে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিতে পারে। যার কারণে ই-ভিসা ব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে যুক্তরাজ্য সরকার। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য পাওয়া যায়।

দ্য গার্ডিয়ান জানতে পেরেছে আগামী মাস হতে যুক্তরাজ্য সরকার পুরোপুরি ই-ভিসা ব্যবস্থা চালু করার কার্যক্রম স্থগিত করবে। এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ আবেদনকারীরা নতুন ডিজিটাল অভিবাসন সিস্টেমে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হচ্ছে। ই-ভিসা সিস্টেমের মাধ্যমে আবেদনকারীরা যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করার অধিকার পাবেন কিন্তু সিস্টেম কাজ না করায় অনেকে যুক্তরাজ্যে ফিরতে সমস্যায় পতিত হতে পারেন।

৩১ ডিসেম্বর থেকে, যুক্তরাজ্যে থাকার অধিকার প্রমাণ করার জন্য বায়োমেট্রিক রেসিডেন্স পারমিটের মতো বেশিরভাগ ডকুমেন্ট আর বৈধ থাকবে না বলে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।

জানা গিয়েছে, শত শত যুক্তরাজ্যবাসী বিদেশ থেকে এই সিস্টেমের মাধ্যমে দেশে প্রবেশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন এবং তারা যুক্তরাজ্যে ফিরতে পারছেন না। এই তথ্যটি যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ সূত্রে জানা গিয়েছে।

দ্য গার্ডিয়ান রোববার তাদের প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানিয়েছে, যুক্তরাজ্যে বসবাস এবং কাজ করার অধিকার রয়েছে এমন অভিবাসী কর্মীরা তাদের ই-ভিসা অ্যাক্সেস করতে এবং দেশে থাকার অনুমতি প্রমাণ করতে পারছেন না।

হোয়াইটহল সূত্র হতে জানা যায় যুক্তরাজ্য সরকার ০১ জানুয়ারি হতে ই-ভিসা সিস্টেম পুরোপুরি বাতিল করতে যাচ্ছে। তাছাড়া কাগজাদি ও ডকুমেন্টসের ক্ষেত্রে অনুমোদনের নিয়ম পরিবর্তনের বিষয়টি পর্যালোচনা করতে যাচ্ছে সরকার।

সূত্রটি আরো জানায়, “ ই-ভিসা সিস্টেম এমন একটি সমস্যা যা টোরি সরকার আগে থেকেই ধারনা করা উচিত ছিল। তাদের কাছে এসব সমস্যা সমাধানের জন্য পর্যাপ্ত সময় ছিল। এখন লেবার সরকার ই-ভিসা সিস্টেমে বিশৃঙ্খলা শুরু হবার পর সমাধান নিয়ে ভাবতে হচ্ছে।”

হোম অফিস কয়েক বছর ধরে ই-ভিসা ইস্যু করে আসছে – যেমন ব্রেক্সিট পরবর্তী ইইউ সেটেলমেন্ট স্কিম (EUSS), দক্ষ কর্মীর ভিসা এবং ব্রিটিশ ন্যাশনাল (ওভারসিজ) ভিসার জন্য আবেদনকারী (হংকংবাসীদের জন্য)। ০১ জানুয়ারি থেকে কাগজপত্র সম্পূর্ণরূপে বাতিল করে ই-ভিসা ব্যবস্থায় রূপান্তর করার কথা ছিল।

পূর্ববর্তী সরকারের তৎকালীন টোরি মন্ত্রী টম পার্সগ্লোভ বলেছিলেন, ই-ভিসা সিস্টেম যারা যুক্তরাজ্যে বসবাস, কাজ বা পড়াশোনার জন্য আসে তাদের উপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ নিশ্চিত করবে। সীমান্ত নিরাপত্তা বাড়াবে এবং অভিবাসন ব্যবস্থার অপব্যবহার রোধ করবে।”

ধারণা করা হয়েছিল যে এটি জালিয়াতি, কাগজাদির অপব্যবহার কমাবে এবং সীমান্ত নিরাপত্তা জোরদার করবে।

কিন্তু কর্মকর্তারা সরকারের মন্ত্রীদের জানিয়েছেন যে ই-ভিসা সিস্টেমটি বিভিন্ন সরকারি ডেটাবেস থেকে প্রতিবার নতুন অভিবাসন স্থিতি তৈরি করে যা ত্রুটিপূর্ণ।

“লিভ টু রিমেইন” স্ট্যাটাসে থাকা বিদেশি নাগরিকদের কয়েক বছর পরপর তাদের স্থিতি নবায়ন করতে হয়। কিন্তু সিদ্ধান্তের জন্য অপেক্ষার সময়, তারা “থ্রি-সি লিভ” নামে পরিচিত একটি অবস্থায় থাকে।

ই-ভিসা সিস্টেম কাজ, পড়াশোনা বা সুবিধা দাবি করার অধিকার রক্ষা করার জন্য তৈরি হলেও, স্থিতি নিশ্চিত করার জন্য কোনো ডকুমেন্টস প্রদান করে না – যা অনেক নিয়োগকর্তা দেখতে চান।

অনেকে তাদের ভিসা নবায়নের জন্য আবেদন করার সময় ই-ভিসা পেতে চেষ্টা করেও সমস্যায় পড়েছেন।

যদিও স্ক্রিনে দেখানো হয় যে আবেদনকারী ব্যক্তি ই-ভিসা পেয়েছেন। পরবর্তীতে একটি ত্রুটিপূর্ণ বার্তা প্রদর্শিত হয় যখন এটি খোলার চেষ্টা করা হয়। এতে লেখা থাকে: “আপনার স্থিতির প্রমাণ আমরা দেখাতে পারছি না। এটি হতে পারে কারণ আপনার স্থিতি এই পরিষেবায় দেখার জন্য এখনও প্রস্তুত নয়।”

অভিবাসন ও নাগরিকত্ব বিষয়ক মন্ত্রী সীমা মালহোত্রা এই সমস্যাগুলো উল্লেখ করার পর ই-ভিসা সিস্টেমকে পুরোপুরি স্থগিত করার পরিকল্পনা করেছেন।

কর্তৃপক্ষ আরও চিন্তিত যে ই-ভিসা স্থগিতাদেশ ০১ জানুয়ারি হতে ঘটবে – যে তারিখ পুরো বিশ্বব্যাপী ব্যাংক হলিডে পালিত হয়। সিস্টেমে কোনো সমস্যা দেখা দিলে সেদিন তা সমাধান করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।

সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান

এম.কে
০৩ ডিসেম্বর ২০২৪

আরো পড়ুন

আধুনিক দাসত্বের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের কঠোর অবস্থান

নিউজ ডেস্ক

লন্ডনে সেই মুসলিম শিক্ষিকা নির্দোষ প্রমাণিত

যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ, লাগবে না আইইএলটিএস