যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আন্তর্জাতিক স্টুডেন্টদের যুক্তরাজ্যে আনতে যে মার্কেটিং এজেন্টরা কাজ করে তাদের ব্যাপারে ক্র্যাকডাউনের ঘোষণা দিয়েছেন। অভিবাসনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান নিতে এই পন্থা অবলম্বনের কথা বলেছে যুক্তরাজ্য সরকার। এই ঘোষণা এমন সময় দিলো সরকার যখন যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জানিয়েছে আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা হ্রাসের কারণে যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়তে যাচ্ছে।
ফিনান্সিয়াল টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে,
আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের আনতে মার্কেটিং এজেন্টদের ক্র্যাকডাউন বলতে এজেন্টদের বাধ্যতামূলক নিবন্ধকরণ এবং যেকোনো ধরনের অপব্যবহারের জন্য তাদের উপর জরিমানার বিধান রাখা হবে।
ঋষি সুনাক স্নাতক ভিসা স্কিমের জন্যও কঠোর মানদণ্ডের বিষয় বিবেচনা করছেন যদিও এই বিষয়ে তিনি খোলাসা করে কোনো আলোচনা করেন নাই। এই প্রস্তাব নিয়ে চ্যান্সেলর জেরেমি হান্ট এবং শিক্ষা সচিব গিলিয়ান কেগানের চিন্তার খোরাকের জন্ম দিয়েছে। কারণ আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীদের সংখ্যা আরও কমে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে মারাত্মক আর্থিক চাপে পড়বে বলে উভয় মন্ত্রী উদ্বিগ্ন।
শীর্ষ স্তরের শিক্ষার্থীদের মধ্যে স্নাতক ভিসা স্কিমের সীমাবদ্ধতা আনা উচিত কিনা সে বিষয়ে সিদ্ধান্তটি আসন্ন নেট মাইগ্রেশন পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করবে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাজ্যের শিক্ষা সচিব। গিলিয়ান কেগান এজেন্টদের দ্বারা সিস্টেম অপব্যবহার রোধ করার ব্যবস্থাগুলি সমর্থন করেন। তবে তিনি শিক্ষার্থীদের গুণমানের উপর ভিত্তি করে স্নাতক ভিসা স্কিমের সীমাবদ্ধতা আনার বিরুদ্ধে।
যুক্তরাজ্য সরকারের ইন্ডিপেন্ডেন্ট মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজারি বোর্ড সম্প্রতি বর্তমান ভিসা স্কিমটি যা পোস্ট স্টাডি ওয়ার্ক নামে পরিচিত সেটা বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছে। এই ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা দুই বছরের কাজের অনুমতি পায় স্নাতকোত্তর কোর্স শুরু করার আগে। তবে সুনাক সাধারণ নির্বাচনের আগে অভিবাসন হ্রাস করার জন্য তার দলের ভিতর হতে চাপের মধ্যে রয়েছেন বলে জানা যায়।
একটি ব্রিটিশ সরকারী প্রতিবেদনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়গুলি আর্থিকভাবে সহায়তা এবং যুক্তরাজ্যে গবেষণা কাজ বাড়ার জন্য স্নাতক রুট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ২০২৩ সালে ১,১৪,০০০ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক রুট ভিসা জারি করা হয়েছিল। মার্কেটিং এজেন্টদের দ্বারা বিভিন্ন অনিয়ম সত্ত্বেও, মাইগ্রেশন অ্যাডভাইজরি কমিটি (ম্যাক) ভিসার ইতিবাচক প্রভাবের উপর জোর দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও এক্সিকিউটিভরা সরকারকে অনুরোধ করেছেন স্নাতক ভিসা রুটে কোনও পরিবর্তন আনা উচিত হবে না। কারণ এর পরিনতি কখনও ভালো হতে পারে না যা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে বিরাট আর্থিক চাপে ফেলবে এবং আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা যুক্তরাজ্যে না এসে উচ্চশিক্ষার জন্য অন্যদেশকে গন্তব্য হিসাবে বেছে নিবে। তাই এর পরিণতি হতে পারে বিশদ এবং বিস্তৃত ।
সূত্রঃ ফিনান্সিয়াল টাইমস
এম.কে
১৯ মে ২০২৪