বৃটিশ গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, যুক্তরাজ্যের ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা হোম অফিসকে দায়ী করেছেন ইমিগ্রেশনে ব্যাকলগ সৃষ্টি করার জন্য। আশ্রয়প্রার্থীদের কেইসের সিদ্ধান্তের গতি বাড়ানোর জন্য তারা হোম অফিসকে দীর্ঘদিন হতে চাপ দিয়ে যাচ্ছেন।
খবরে আরো জানা যায়, গত মাসে আশ্রয় ব্যাকলগ নিয়ে সরকার কাজ করার ঘোষণা দিয়েছিল। বর্তমানে রেকর্ড পরিমান প্রায় এক লাখ ষাট হাজারের মতো মামলা রেজাল্টের অপেক্ষায় আছে। নতুন প্ল্যান অনুযায়ী বিশটি প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতে দেওয়া হলে তার উপর কেইসের মিমাংসা করার যে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সেটাও থমকে আছে। প্রশ্নের উত্তর ইংরেজিতে দেওয়া নিয়েও দ্বিমত দেখা দেয়। আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের আশ্রয়প্রার্থীদের কাছে প্রশ্নাবলী পাঠানো নিয়ে সমস্যার মূল কারণ তাদের ইংরেজিতে অদক্ষতা।
যুক্তরাজ্যের আইনজীবী সংগঠন আইনজীবী এবং মানবাধিকার সংস্থাগুলি আশ্রয় দাবির প্রক্রিয়াকরণের গতি বাড়ানোর জন্য হোম অফিসের প্রচেষ্টাকে প্রথমাবস্থায় স্বাগত জানায়। তবে তারা বলেছেন চালু হওয়ার ঘোষণার ঠিক কয়েক সপ্তাহ পরে এই প্রকল্পটি থমকে পড়েছে।
ইমিগ্রেশন আইনজীবীরা জানান তাদের ক্লায়েন্টদের কাছ থেকে যে সাক্ষী বিবৃতি তারা পেয়েছিলেন তা যথাযথভাবে উল্লেখ করার পরেও হোম অফিসের কর্মকর্তারা তাড়াহুড়ো করে সিদ্ধান্ত নিতে গিয়ে সেই কেইসগুলোও প্রত্যাখ্যান করে। তাছাড়া বিশ দিনের ভিতরে একটি কেইসের সকল উত্তর দেওয়া অনেক সময় কঠিন হয়ে যায় বলে তারা জানান।
হোম অফিসের কর্মকর্তা বলেছেন, “অনেক ক্ষেত্রে আইনজীবীরা তাদের ক্লায়েন্টের আশ্রয় দাবি সম্পর্কে তথ্য সরবরাহ করে থাকেন। কিন্তু এই ব্যাখ্যার সাথে প্রশ্নের উত্তরের কোনো সম্পর্ক নেই। সাক্ষীর বিবৃতিটি আশ্রয় দাবি প্রশ্নাবলীর উত্তর হিসাবে গ্রহণ করতে হোম অফিস অক্ষম।”
ইমিগ্রেশন আইন প্র্যাকটিশনার্স অ্যাসোসিয়েশন আইনী, মানবাধিকার এবং অভিবাসী সংগঠনগুলিসহ ১০০টিরও বেশি স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠান সরকারকে একটি চিঠি প্রেরণ করে। তারা নতুন প্রশ্নাবলীর বিষয়ে উদ্বেগ উত্থাপন করে এটিকে “মৌলিকভাবে ত্রুটিযুক্ত” বলে অভিহিত করে এবং এটিকে “দীর্ঘ, জটিল এবং দুর্বল খসড়া হিসাবে বর্ণনা করে “।
উত্তর আয়ারল্যান্ডের একদল অভিবাসন আইনজীবীরা যুক্তরাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিবকে একটি চিঠি প্রদান করে। তাদের চিঠিতে তারা, ” সরকারের নতুন প্রক্রিয়াটিকে অযৌক্তিক হিসাবে উল্লেখ করে।”
হোম অফিসের একজন মুখপাত্র বলেছেন, “ বর্তমানে সরকার কর্তৃক আশ্রয় প্রক্রিয়া আফগানিস্তান, ইরিত্রিয়া, লিবিয়া, সিরিয়া এবং ইয়েমেনের নাগরিকদের কাছ থেকে দক্ষতার সাথে মূল্যায়ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
তিনি আরো বলেন, ” আমরা যোগ্য দাবিদারদের যুক্তরাজ্যে আশ্রয় পাওয়ার দাবি প্রশ্নাবলীর মাধ্যমে পুরোপুরি ব্যাখ্যা নেওয়ার জন্য সরবরাহ করে থাকি। এরমাঝে কোনো আশ্রয়প্রার্থীর প্রশ্নাবলীগুলির উত্তর আংশিকভাবে সম্পন্ন হলে আমরা তাদের আবেদন পরিপূর্ণ তথ্য পাওয়ার জন্য ফিরিয়ে দিতে বাধ্য হই। আমরা সমস্ত প্রশ্নাবলীকে একটি সাক্ষাৎকার ছাড়াই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সর্বোত্তম সুযোগ বলে মনে করি। তাছাড়া আশ্রয় প্রক্রিয়া তরান্বিতকরণে প্রশ্নাবলী সম্পূর্ণ সম্পন্ন করতেও উৎসাহিত করি। “