যুক্তরাজ্যের উইন্ডরাশ স্কিমে পরিবারের অন্য সদস্যরা স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পেলেও জিনেল হিপোলাইটকে (Jeanell Hippolyte) ‘ইনডেফিনিট লিভ টু রিমেইন (ILR)’ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে আপিল আদালত। হোম অফিসের কঠোর অবস্থানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর তার মামলাটি নতুন করে পর্যালোচনা করতে বলেছে আদালত।
সেন্ট লুসিয়ান বংশোদ্ভূত হিপোলাইট ১৭ বছর বয়সে ২০০০ সালে যুক্তরাজ্যে আসেন। দুই বছর পর ছাত্র ভিসার মেয়াদ শেষ হলে নিয়ম মেনে দেশ ত্যাগ করেন। সে সময় তিনি জানতেন না যে তার বাবা ইতোমধ্যে ILR পেয়েছেন এবং তার সন্তানেরাও একই সুবিধা পাওয়ার যোগ্য ছিলেন।
২০০৭ সালে তার দুই ভাই যুক্তরাজ্যে এসে ILR আবেদন করেছিলেন। প্রথমে আবেদন প্রত্যাখ্যাত হলেও নিয়ম ভঙ্গ করে দেশে অবস্থান করার পর ২০১৯ সালে উইন্ডরাশ স্কিমের আওতায় তারা স্থায়ী বাসিন্দার মর্যাদা পান। পরিবারে অন্য সবাই এ সুবিধা পেলেও জিনেল হিপোলাইটকে তা দেওয়া হয়নি।
২০২০ সালের আগস্টে তিনি উইন্ডরাশ স্কিমে আবেদন করলে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে তা নাকচ করা হয়—কারণ হিসেবে দেখানো হয় যুক্তরাজ্যে তার নিরবচ্ছিন্ন বসবাস নেই। পরে ২০২২ সালে ILR-এর জন্য আবার আবেদন করলে ২০২৩ সালের এপ্রিলেও সেটি প্রত্যাখ্যাত হয়। এরপর তিনি আদালতের শরণাপন্ন হন।
আপিল আদালতের রায়ে লর্ড জাস্টিস সিংহ বলেন, হিপোলাইটের যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ও দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক রয়েছে এবং তিনি অন্তত “উইন্ডরাশ স্কিমের চেতনার” অন্তর্ভুক্ত। যদিও নিয়ম অনুযায়ী পুরোপুরি যোগ্য নন, তবু হোম অফিসের উচিত ছিল আইনসিদ্ধ বিশেষ বিবেচনার সুযোগ প্রয়োগ করা।
তবে বিচারপতি এটিও স্পষ্ট করেন, এই রায় মানে এই নয় যে হিপোলাইট স্বয়ংক্রিয়ভাবে ILR পাবেন; বরং হোম অফিসকে তার আবেদন নতুন করে বিবেচনা করতে হবে।
রায়ের পর হিপোলাইট বলেন, “আমি আদালতের সিদ্ধান্তে অত্যন্ত আনন্দিত। শেষ পর্যন্ত ন্যায়বিচার পেয়েছি বলে মনে হচ্ছে।”
তার আইনজীবী ফ্রেয়া ড্যানবি মন্তব্য করেন, “জিনেল অসাধারণ সাহস ও ধৈর্য দেখিয়েছেন। আজকের রায় ভবিষ্যতে আরও অনেকের মামলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলবে, যারা নিয়মের কঠোর কাঠামোয় পুরোপুরি ফিট না হলেও ন্যায্যতার ভিত্তিতে বিবেচনার দাবি রাখেন।”
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে

