যুক্তরাজ্যের আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, হোম অফিস এমন এক ব্রিটিশ-বংশোদ্ভূত ব্যক্তিকে যুক্তরাজ্য হতে নির্বাসন দেওয়ার চেষ্টা করেছে বেআইনীভাবে যিনি যুক্তরাজ্য ছেড়ে কখনও পর্তুগালে যান নাই। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায় দিমিত্রি লিমার মা-বাবা ৩০ বছরেরও বেশি সময় আগে যুক্তরাজ্যে এসেছিলেন পর্তুগাল হতে।
দক্ষিণ লন্ডনের ল্যাম্বেথে জন্মগ্রহণকারী দিমিত্রি লিমা (২৮) পর্তুগিজ ভাষায় কথা বলেন না এবং কখনও পর্তুগাল বা অন্য কোনো দেশে ভ্রমণ করেননি। তবে ২০২২ সালে তাকে ড্রাগস ব্যবসায় জড়িত থাকার অপরাধের জন্য যুক্তরাজ্যের কারাগারে পাঠানো হয়। ড্রাগস ও টিজার বহন করার জন্য তাকে হোম অফিস কর্তৃক ডিপোর্টেসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানা যায়।
বিচারক আদালতের ট্রাইব্যুনালে, বিচারক দিমিত্রি লিমার আইনজীবীদের সাথে একমত হয়েছিলেন যে তিনি ব্রিটিশ ছিলেন কারণ তিনি যুক্তরাজ্যে জন্মগ্রহণ করেছেন। দিমিত্রি লিমার মা এবং তার প্রয়াত বাবা যুক্তরাজ্যে কাজ করার উদ্দেশ্যে ইইউ চুক্তির অধীনে প্রবেশ করেছিলেন।
বিচারক রায়ে বলেন, “যেহেতু আমি আপিলকারীকে একজন ব্রিটিশ নাগরিক হিসাবে পেয়েছি, তাই আমি মনে করি তাকে ডিপোর্টেসন আদেশ আইন অনুসারে সংগঠিত হয় নাই।”
মামলাটিতে লিমার আইনজীবীরা আরো দাবি করেন হোম অফিস করদাতাদের অর্থ নষ্ট করছে। লিমার আইনজীবী নাগা কান্দিয়াহ জানান যে ট্রাইব্যুনাল তার যুক্তিগুলি মেনে নিয়েছে এবং সরকারের প্রাথমিক আপিল আবেদনটি বাতিল করেছে।
ইইউ মাইগ্রেশন মামলায় গৃহীত পোস্ট-ব্রেক্সিট পদ্ধতির বিষয়টি তুলে ধরার ক্ষেত্রে এই মামলাটি সর্বশেষতম। যুক্তরাজ্যে ব্রেক্সিটের পরে আনা পরিবর্তনের অধীনে, অন্য কোনও জাতীয়তার মতোই ইইউ নাগরিকও ১২ মাসেরও বেশি সময় কারাগারে সাজা পেয়ে থাকলে জাতীয় স্বার্থে ডিপোর্টেসনকে জনগণের জন্য মঙ্গলজনক এবং উপযুক্ত বলে মনে করা হয়।
উল্লেখ্য যে, লিমাকে একটি “ক্লাস এ”- ড্রাগ সরবরাহ ও নিষিদ্ধ অস্ত্র টিজার রাখার দায়ে ২০২০ সালের আগস্ট মাসে চার বছর ছয় মাসের কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। চার বছর ছয় মাসের কারাদন্ডের মধ্যে দুই বছরের সাজা খাটার পর তাকে গ্যাটউইক বিমানবন্দরের কাছে কারাগার থেকে ব্রুক হাউস ইমিগ্রেশন রিমুভাল সেন্টারে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। ২০২২ সালের অক্টোবরে তাকে নির্বাসনের আদেশ দেওয়া হয়েছিল।
লিমা পূর্বে কোনো অপরাধের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন না বলে জানা যায়। তার বাবার মৃত্যুর পর তিনি খারাপ সঙ্গে পড়ে বিভিন্ন ধরনের অপরাধে জড়িয়ে পড়েন। তবে লিমা তার সকল অপরাধের জন্য ক্ষমাপ্রার্থী বলেও জানান আদালতকে।
হোম অফিসের এক মুখপাত্র বলেন, “ মিঃ দিমিত্রি লিমা তার নির্বাসন আদেশ প্রতিহত করার জন্য প্রমাণপত্র সরবরাহ করতে ব্যর্থ হন।”
তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমের খবরে জানা যায়, দিমিত্রি লিমা তার আপিল আবেদনের অংশ হিসাবে ব্রিটিশ নাগরিকত্বের প্রমাণ জমা দিয়েছিলেন। তার পরে আদালত কর্তৃক তার মামলা পর্যালোচনা করা হয় এবং হোম অফিসের বিরুদ্ধে এই রায় প্রদান করে।
সূত্রঃ দ্য গার্ডিয়ান
এম.কে
১৯ মার্চ ২০২৪